দেশদ্রোহী সরকার ক্ষমতায় থাকতে পারবে না: চরমোনাই পীর
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র নায়েবে আমির মুফতি সৈয়দ ফয়জুল করীম (শায়খে চরমোনাই) বলেছেন, স্বাধীন দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হয়ে ভারতের কাছে ক্ষমতায় টিকিয়ে রাখার অনুরোধ করে দেশের ভাবমূর্তি যেমন ক্ষুন্ন হয়েছে। ঠিক তেমনিভাবে ভোট ডাকাতি করে ক্ষমতা দখলে রাখার বিষয়টি আবারও স্পষ্ট হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘আওয়ামী সরকারকে মনে রাখা দরকার ভারত সবসময় নিজেদের স্বার্থের চিন্তা করে। আর এ সরকার ভারতকে দিতেই পছন্দ করে। শুধু দিয়ে খুশি করতেই তৃপ্তি পায় সরকার। কারণ, এ সরকার জনগণের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ কোনভাবেই নির্বাচিত সরকার নয়। পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্যের ব্যাখ্যা প্রধানমন্ত্রীকে দিতে হবে।’
বুধবার (২৪ আগস্ট) রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাব সামনে এক বিক্ষোভ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সার্বভৌমত্ব বিরোধী ও রাষ্ট্রদ্রোহী বক্তব্যের প্রতিবাদ, দ্রব্যমূল্যের
ঊর্ধ্বগতিরোধ ও জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি ও বর্ধিত মূল্য প্রত্যাহারের দাবিতে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ঢাকা মহানগর বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করে।
মুফফি ফয়জুল করীম বলেন, ‘পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক স্বামী-স্ত্রীর মতো। বলেছেন বাংলাদেশের মানুষ বেহেশতে আছে। তার বক্তব্যের দিনই পার্বত্য অঞ্চলে একজন মা ক্ষুধার জ্বালা নির্বারণে সন্তান বিক্রি করতে বাজারে তুলেন। যা মিডিয়ায় প্রকাশিত। প্রধানমন্ত্রীও বলেছেন, আমি ভারতকে যা দিয়েছি আজীবন মনে রাখবে।’
তিনি বলেন, ‘৫ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী ভারত সফরে যাবেন, ভারতের সঙ্গে প্রতিরক্ষা চুক্তিসহ অনেক চুক্তিতে স্বাক্ষর করবেন। ভারতের সঙ্গে কী চুক্তি হবে, দেশবিক্রির চুক্তি? সফরে যাওয়ার আগে কী চুক্তি হবে তা জনগণকে জানাতে হবে। ভারতের সঙ্গে কোনো চুক্তি দেশবাসী মানবে না।’
ফয়জুল করীম বলেন, ‘পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্য সরকারের বক্তব্য। কাজেই দেশদ্রোহী সরকার এক মুহূর্তও ক্ষমতায় থাকতে পারবে না। দেশ সকলের, এ দেশকে রক্ষা করতে হবে। দেশ নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে দেওয়া হবে না। প্রহসনের নির্বাচন হতে দেওয়া হবে না। জাতীয় সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচন হতে হবে। নির্লজ্জ সরকারকে পদত্যাগ করে একটি সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন দিতে হবে।
ভারতের অনেক নাগরিক বাংলাদেশে চাকরি করে, অথচ বাংলাদেশের লাখ লাখ যুবক বেকার। এভাবে ভারতের তাঁবেদারি করে সরকার ক্ষমতায় টিকে থাকতে চায়।
চা শ্রমিকদের সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘চা শ্রমিকরা দীর্ঘদিন যাবৎ তাদের মজুরি বৃদ্ধির দাবি করে আসছে। ১২০ টাকা মজুরি হয়? দেশের হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার হয়, আর চা শ্রমিকরা তাদের ৩০০ টাকা মজুরি দাবিতে রাজপথে আন্দোলন করে, এটা সরকারের জন্য লজ্জাজনক। তিনি চা শ্রমিকদের দাবি মেনে নেওয়ার আহ্বান জানান।
সার ও ডিজেলের মূল্য বৃদ্ধি প্রসঙ্গে ফয়জুল করীম বলেন, ইউরিয়া সারের মূল্য প্রতি কেজিতে ৭ টাকা বৃদ্ধি, ডিজেলের মূল্য আকাশচুম্বী করে কৃষকদেরকে কৃষি পণ্য উৎপাদন করতে উৎসাহ মূলক বক্তব্য কৃষকদের সঙ্গে তামাশা ছাড়া কিছুই না ৷ দ্রব্যমূল্যের কষাঘাতে জনগণের জীবন শেষ। সরকার দলের ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে জনগণকে শোষণ করছে।
তিনি বলেন, ‘আমার দেশের ট্রানজিট সুবিধা ভারতকে প্রদান করেছেন অথচ দৃশ্যমান কিছুই আদায় করতে পারেননি। এভাবে একটা দেশকে ধ্বংস হতে দেওয়া যায় না। ভারতের আশীর্বাদে ক্ষমতা দখল করে রাখার স্বপ্ন জনগণ দুঃস্বপ্নে পরিণত করবে।’
দলটির সহকারী মহাসচিব ও ঢাকা মহানগর উত্তর সভাপতি অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা শেখ ফজলে বারী মাসউদ-এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ পূর্ব সমাবেশে বক্তব্য রাখেন দলের মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ, প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান, সহকারী মহাসচিব ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সভাপতি মাওলানা ইমতিয়াজ আলম, কেএম আতিকুর রহমান, মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ূম, মাওলানা নেছার উদ্দিন, মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাকী, মাওলানা আরিফুল ইসলাম, ডা. শহিদুল ইসলাম, কেএম শরীয়াতুল্লাহ প্রমুখ।
এমএইচ/এমএমএ/