শেখ হাসিনাকে আশ্রয় দেয়া মানে খুনিকে আশ্রয় দেয়া: রিজভী
গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম সচিব রুহুল কবির রিজভী। ছবি: সংগৃহীত
ভারত সরকারকে উদ্দেশ্য করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম সচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, শেখ হাসিনা শীর্ষ সন্ত্রাসী, খুনি। যে শিশুর রক্ত পান করতে পারে তার মতো শীর্ষ সন্ত্রাসী আর কে হতে পারে। তাকে আশ্রয় দেওয়া মানে অপরাধকে আশ্রয় দেওয়া। অন্যায়কে আশ্রয় দেওয়া, খুনিকে আশ্রয় দেওয়া।
শুক্রবার (১৮ অক্টোবর) জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনের রজতজয়ন্তী উপলক্ষ্যে সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মাজারে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে তিনি এসব কথা বলেন।
রিজভী বলেন, ভারতের সাথে তো আমাদের প্রত্যর্পণ চুক্তি আছে। শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে, গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হলে কূটনৈতিক আলাপ আলোচনার মাধ্যমে প্রত্যর্পণ বিষয়টি সমাধান করে তাকে ফিরিয়ে আনতে পারে। আর তা না হলে বাংলাদেশে যত শীর্ষ সন্ত্রাসী আছে তারা সেখানে আশ্রয় পাওয়ার সুযোগ নেবে। বিভিন্ন দেশে এভাবে আশ্রয় পাওয়ার সুযোগ পাবে।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনা সর্বশ্রেষ্ঠ শীর্ষ সন্ত্রাসী, খুনি। যে শিশুর রক্ত পান করতে পারে, তার মতো শীর্ষ সন্ত্রাসী আর কে হতে পারে। তাকে আশ্রয় দেওয়া মানে অপরাধকে আশ্রয় দেওয়া। অন্যায়কে আশ্রয় দেওয়া, খুনিকে আশ্রয় দেওয়া। গতকাল তাদের বক্তব্য দেখে মনে হচ্ছে তারা বিগ ব্রাদারের মতো আচরণ করেছে। সেখান থেকে তাদের বেরিয়ে আসতে হবে।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, এখনও স্বৈরাচারের হিংস্র থাবা থেকে মুক্ত হতে পারছি না। গতকাল হঠাৎ ৫০-৬০টি জেলায় বিদ্যুতের শাটডাউন করা হয়েছে। এরা কারা আমরা কিন্তু প্রায় দিনই বলেছি স্বৈরাচারের দোসররা ভেতরে আছে, এরা কিন্তু নাশকতা করবে। আরইবি ও পল্লী বিদ্যুৎ সংস্থাটি গঠন করেছিলেন মহান স্বাধীনতার ঘোষক জিয়াউর রহমান। গ্রামেগঞ্জে আলো ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য, কৃষি উৎপাদনের জন্য এক মহৎ উদ্যোগ নিয়ে গোটা জাতিকে আলোকিত করার উদ্যোগ নিয়েছিলেন তিনি।
রিজভী আরও বলেন, যেহেতু এটি জিয়াউর রহমান প্রতিষ্ঠিত করেছেন, এটি ধ্বংস করার জন্য স্বৈরাচার শেখ হাসিনা নানা ষড়যন্ত্র করেছিল। তারা এ নামটি রাখতে চায় না। গতকাল যে ঘটনা ঘটিয়েছে, এটি একটি গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ। এ ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে আমরা কয়েকবার বলেছি। তাদের দাবি-দাওয়া থাকলে সরকারের কাছে আবেদন-নিবেদন করতে পারত। কিন্তু তারা তা না করে গতকাল শাটডাউন করল কেন? কারণ এটি গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ, এটি নাশকতা। তারা শেখ হাসিনার আমলে এ কর্মসূচি নেয়নি কেন? কারণ এরা শেখ হাসিনার অনুচর।
বিদ্যুতের শাটডাউন কর্মসূচির সঙ্গে যারা জড়িত তারা সরাসরি শেখ হাসিনার লোক উল্লেখ করে তিনি বলেন, কথিত স্বৈরাচারের প্রেতাত্মারা ভৌতিক অস্তিত্ব নিয়ে ভেতরে ভেতরে ঢুকে আছে। এ প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করতে তারা ষড়যন্ত্র করছে। আমরা সরকারকে বলছি আরও বেশি সতর্ক হোন, না হলে এ রক্তের বিনিময়ে যে অর্জন, বাচ্চা ছেলেদের স্কুলকলেজের ছেলে-মেয়েদের আত্মদানে যে অর্জন, আমরা গণতন্ত্রের পথে যে যাত্রা করছি তা রোধ করে ফেলবে।
অন্তর্বর্তী সরকারকে উদ্দেশ করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, আপনারা সংস্কারের কথা বলে যে বিলম্ব করছেন তাতে মানুষের মনে সন্দেহ তৈরি হবে। যদি আপনাদের আন্তরিকতা থাকে তাহলে দ্রুত সংস্কার করে জনগণের ক্ষমতা জনগণের হাতে ফিরিয়ে দিন।
রিজভী বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে প্রত্যেকটা দল সমর্থন করেছে। এটা গণতন্ত্রকামী মানুষের সমর্থিত সরকার, আপনাদের জনগণের অন্তরের ভাষাটা আগে বুঝতে হবে।
এসময় উপস্থিত ছিলেন জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক ডা. ফরহাদ হালিম ডোনার, অধ্যাপক মোর্শেদ হাসান খান, কৃষিবিদ শামীমুর রহমান শামীম, ডা. শামীম, ডা. কাকনসহ অন্য নেতারা।