খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে বিএনপির তিন দিনের কর্মসূচি
সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ছবি: সংগৃহীত
বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার মুক্তি ও উন্নত চিকিৎসার দাবিতে তিন দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে দলটি। বুধবার (২৬ জুন) দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টন বিএনপি কার্যালয়ে যৌথ সভা শেষে এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
মির্জা ফখরুল জানান, যৌথসভায় নেয়া সিদ্ধান্ত অনুযায়ী দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে আগামী ২৯ জুন (শনিবার) রাজধানীর নয়াপল্টনে সমাবেশ করবে বিএনপি। ওইদিন বিকেল ৩টায় এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। পাশাপাশি আগামী ১ জুলাই (সোমবার) একই দাবিতে সারাদেশের সব মহানগরে সমাবেশ পালন করবে দলটি।
এছাড়াও খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে আগামী ৩ জুলাই (বুধবার) দেশের সব জেলা সদরে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
খালেদা জিয়া গুরুতর অসুস্থ, যেকোনো সময় জীবনহানিও হতে পারে। এমন শঙ্কাও প্রকাশ করেছেন বিএনপি মহাসচিব।
মির্জা ফখরুল বলেন, এ সময় তিনি অভিযোগ করেন, দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব এবং গণতন্ত্রের প্রশ্নে কখনও আপস করেননি বিএনপি চেয়ারপারসন। কারাগারে খালেদা জিয়াকে নির্যাতন করে ও সঠিক চিকিৎসা না দিয়ে অসুস্থ করে দেয়া হয়। পরে আন্তর্জাতিক চাপে তাকে কারাগারের বাইরে পাঠাতে বাধ্য হয়েছে সরকার। খালেদা জিয়া যদি সামনে আসতে পারেন তাহলে এই সরকার টিকে থাকতে পারবে না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, খালেদা জিয়া ক্ষমতাসীনদের রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার। খালেদা জিয়ার অবস্থা খুবই সংকটাপন্ন ছিলো। সঠিক সময়ে চিকিৎসা দিতে না পারলে তিনি এই অবস্থায়ও আসতে পারতেন না। চিকিৎসকেরা বারবার বলেছেন তাকে উন্নত জায়গায় চিকিৎসা দেয়া উচিত। তবে তা দিচ্ছে না সরকার। সরকার পরিকল্পিতভাবে আদালতকে ব্যবহার করে সেখান থেক তাকে বঞ্চিত করছে।
এর আগে মঙ্গলবার (২৫ জুন) রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে করেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সেখানে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে কর্মসূচি ঘোষণার কথা জানান।
গতকাল বিএনপি মহাসচিব বলেন, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার অবদান, সংগ্রাম ও আত্মত্যাগ সাম্প্রতিক গণতান্ত্রিক বিশ্বে অতুলনীয়। খালেদা জিয়াকে পরিকল্পিতভাবে মিথ্যা মামলায় সাজা প্রদান করে রাজনীতি থেকে দূরে সরিয়ে দেওয়ার লক্ষে এই হীন চক্রান্ত করছে অবৈধ সরকার। শুধু রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে তাঁকে বন্দি করে রাখা হয়েছে, যা সম্পূর্ণ বেআইনী এবং সংবিধানবিরোধী। এই মামলায় জামিন পাওয়া তাঁর সাংবিধানিক অধিকার।
খালেদা জিয়া দীর্ঘ দিন ধরে বিভিন্ন জটিল রোগে ভুগছেন জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, চিকিৎসকেরা তাঁর উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর সুপারিশ করেছেন। দলের পক্ষ থেকে তাঁকে মুক্তি দিয়ে বিদেশে পাঠানোর দাবি জানানো হয়েছে। এমন কি পরিবারের পক্ষ থেকে দুই বার তাঁর বিদেশে চিকিৎসার অনুমতি চাওয়া হয়েছে। কিন্তু অবৈধ সরকার তাদের ক্ষমতাকে চিরস্থায়ী করতে তাঁকে হত্যার উদ্দেশে উন্নত চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত করেছে। অনতিবিলম্বে খালেদা জিয়াকে নিঃশর্ত মুক্তি দাবি জানাচ্ছি।