যেখানে জনগণের অংশগ্রহণই নেই, সেখানে কিসের আচরণবিধি লঙ্ঘন: রিজভী
ছবি: সংগৃহীত
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনকে ‘একতরফা’ আখ্যা দিয়ে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, এমন ভোটে আচরণবিধি লঙ্ঘনের নোটিস দেওয়া মানে ‘জনগণের সাথে ঠাট্টা’ করা। রোববার বিকালে এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
ভোট বর্জনে থাকা বিএনপির নেতা রিজভী বলেন, “জনগণের বিরুদ্ধে নির্বাচনি তফসিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশনই সংবিধানের সারবত্তা ভূলুণ্ঠিত করেছে। এখন আওয়ামী ঘরোয়া নির্বাচনের আচরণবিধি লঙ্ঘনের কথা মানে জনগণের সাথে কমিশনের ঠাট্টা করা।
“কিসের আচরণবিধি লঙ্ঘন আর কিসের কি? এখানে তো জনগণের অংশগ্রহণই নেই, এখানে ভোটারদের ভোটের কোনো আগ্রহই নেই।”
এবারের ভোটে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীর বাইরেও দলটির যে বিপুল সংখ্যক নেতা স্বতন্ত্র হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছে, সে প্রসঙ্গে রিজভী বলেন, “এখানে একতরফা একটি নির্বাচন। সেখানে সবাই মিলে একই দলের লোক…একই দলের কেউ প্রত্যক্ষ প্রার্থী, কেউ পরোক্ষ প্রার্থী, কেউ এক নম্বর প্রার্থী, কেউ দুই নম্বর প্রার্থী, কেউ তিন নম্বর প্রার্থী… সব আওয়ামী লীগের প্রার্থী।”
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন যাতে পক্ষপাতহীনভাবে হয়, সেজন্য একই কর্মস্থলে এক বছরের বেশি দিন ধরে থাকা ইউএনওদের অন্য জেলায় বদলি চেয়েছে ইসি। পাশাপাশি ছয় মাসের বেশি সময় ধরে যারা এক স্থানে ওসি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন, তাদেরও বদলি চেয়েছে সাংবিধানিক সংস্থাটি।
রিজভী বলেন, “নির্বাচন উপলক্ষে ইউএনও ও ওসিদের বদলির সিদ্ধান্তটিও আওয়ামীমনা ইউএনও-ওসিদের রদবদল মাত্র। সমগ্র প্রক্রিয়াটিও হাসি-তামাশার নজিরবিহীন হাস্যরসোদ্দীপক নাটিকা।
“এই একতরফা নির্বাচনে জনগণের কোনো ভ্রূক্ষেপ নেই। যেখানে ৬০টির বেশি রাজনৈতিক দল অংশ নিচ্ছে না, সেই নির্বাচন নিয়ে এত তোড়জোর করতে কীসের কৃতিত্ব দেখাচ্ছেন কাজী হাবিবুল আউয়াল?”
গত ২৮ অক্টোবর ঢাকায় সংঘর্ষের জের ধরে সমাবেশ ভণ্ডুল হয়ে যাওয়ার পর বিএনপির বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী গ্রেপ্তার হয়েছে। তার মধ্যে আত্মগোপনে থেকে দলীয় কর্মসূচি ঘোষণার পাশাপাশি মুখপাত্রের ভূমিকায় আছেন রিজভী।
তিনি বলেন, “সারাদেশে বিএনপিসহ গণতন্ত্রকামী নেতাকর্মীর বাড়িঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে নিরবচ্ছিন্ন হামলার ঘটনা ঘটছে। আলবদরের মত, রাজাকারদের মত এরা বিএনপির নেতাকর্মীদের বাড়ি-ঘরে লুটপাট করছে, পুরুষ-শূন্য বাড়িগুলো হামলা চালিয়ে ধ্বংস করছে, বাড়ির নারীদের অপদস্থ করছে। এমন পরিস্থিতিতে আতঙ্ক উদ্বেগ শুধু বিএনপির পরিবারগুলোতে বিরাজ করছে না, সাধারণ ভোটাররা অজানা আশঙ্কায় সন্ত্রস্ত হয়ে আছে।”
গত ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে ২৩০ বিএনপি নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে দাবি করে রিজভী বলেন, এ সময়ে ১০টি মামলায় ৯২৫ জনকে আসামি করা হয়েছে।
সারাদেশে রোববার সকাল থেকে শুরু হওয়া ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ কর্মসূচির প্রথম দিনে রাজপথে বিএনপি ও সমমনা জোটের নেতাকর্মীরা শামিল হওয়ায় তাদের ধন্যবাদ জানান তিনি।