নতুন সরকার প্রতিষ্ঠায় সবাইকে রুখে দাঁড়াতে ফখরুলের আহ্বান
বর্তমান সরকার জনগণের ভোটে নির্বাচিত নয়। আন্দোলনের মাধ্যমে তাদেরকে পরাজিত করে নতুন সরকার প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেন, ‘আসুন আমরা সংগ্রামের দিকে এগিয়ে যাই সেই নতুন সরকার প্রতিষ্ঠায় ঐক্যবদ্ধ হই।’
সোমবার (১ মে) বেলা আড়াইটার দিকে মে দিবস উপলক্ষে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনের সড়কে শ্রমিক সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘দেশের মানুষ সবাইকে রুখে দাঁড়াতে হবে। শ্রমজীবী মানুষের জন্য রুখে দাঁড়াতে হবে। সবাইকে সঙ্গে নিয়ে এই সরকারের পতন ঘটাতে হবে।’
সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘তারা আবার পুরানো কায়দায় নির্বাচন করতে চায়। আবারও যেন তারা ক্ষমতায় আসতে চায়। তাই আগে থেকেই হুমকি দামকি দিচ্ছে। সারা বাংলাদেশকে কারাগারে পরিণত করেছে। গণতান্ত্রিক স্বপ্ন ভেঙেচুরে তছনছ করে দিয়েছে। ভয়ভীতি দেখিয়ে মিডিয়া, আদালত নিয়ন্ত্রণ করছে। শিক্ষাব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দিয়েছে।
খালেদা জিয়া হাসপাতালে ভর্তি উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘একজন মন্ত্রী বলেছেন, এটা নিয়ে নাকি আমরা রাজনীতি করছি। এত বড় একজন নেত্রীকে নিয়ে এ ধরনের বক্তব্যে ধিক্কার জানাই। আপনারা তাকে সুচিকিৎসার দিচ্ছেন না, তাকে বিদেশে উন্নত চিকিৎসা নিতে দিচ্ছেন না।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘শপথ নিতে হবে শ্রমিকের ন্যায্য অধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার দাবিতে রাজপথে আছি, থাকব। সরকারকে বিদায় করে দেশে গণতান্ত্রিক সরকার পুনঃপ্রতিষ্ঠা করব।
আওয়ামী লীগের উদ্দেশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, মাত্র ৪০ হাজার লোক জেলে জায়গা দিতে পারবেন। আজকে দেখে যান এখনে কত লোক হয়েছে? কত লোক গ্রেফতার করবেন?
তিনি বলেন, ‘আমরা কয়দিন আগে বিদেশি কূটনীতিকের আমন্ত্রণে বাসায় দাওয়াত খেতে গেলাম। তারা (আওয়ামী লীগ নেতারা) বিএনপি নাকি ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য দ্বারে দ্বারে যাচ্ছে। আমরা তা করছি না। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকার জন্য বিদেশে বিদেশে ঘুরে ধরনা দিচ্ছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘যদি সাহস থেকে নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধিনে নির্বাচন দিন।’ মির্জা আব্বাস অভিযোগ করেন, শ্রমিকরা, যুবকরা বাড়িতে থাকতে পারছে না। এই জন্য দেশ স্বাধীন হয়নি। গণতন্ত্রের জন্য আজকে শ্রমিকরা ঐক্যবদ্ধ। তাই এই সরকারের নিস্তার নাই।
শ্রমিক সমাবেশে যোগ দেয় ঢাকা মহানগর বিএনপি এবং অঙ্গ দলের নেতা-কর্মীরা। এ ছাড়া, ঢাকা এবং এর পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন জেলার বিএনপি খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে নেতা-কর্মীরা সমাবেশে যোগ দেন।
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি আনোয়ার হোসেন। সমাবেশে বক্তব্য দেন, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, নজরুল ইসলাম খান, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, বিএনপি'র ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, আব্দুল আউয়াল মিন্টু, অ্যাডভোকেট আহমেদ আজম খান, বিএনপির উপদেষ্টা জয়নুল আবেদীন ফারুক, আবুল খায়ের ভূঁইয়া, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, বিএনপি চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ, শামা ওবায়েদ,গাজীপুর জেলা বিএনপির সভাপতি ফজলুল হক মিলন, বিএনপির স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু, শ্রমিক দলের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান মজুমদার, কেন্দ্রীয় নেতা সালাহউদ্দিন সরকার, মুক্তিযোদ্ধা দলের সাধারণ সম্পাদক সাদেক খান, যুবদলের সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম মিল্টন, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এসএম জিলানী, সাধারণ সম্পাদক রাজিব আহসান, সাংগঠনিক সম্পাদক নাজমুল হাসান, মহিলাদলের হেলেন জেরিন খান, ছাত্রদলের সভাপতি কাজী রওনাকুল ইসলাম শ্রাবণ, বিএনপি ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের সিনিয়র নেতারা উপস্থিত হয়েছেন।
শ্রমিক দলের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মঞ্জুরুল ইসলাম মঞ্জু সমাবেশ সঞ্চালনা করেন।
সমাবেশের পরে শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হবে। নয়াপল্টন থেকে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় সামনে থেকে শুরু হওয়া শোভাযাত্রা কাকরাইল মোড় হয়ে শান্তিনগর মোড় হয়ে মালিবাগ মৌচাক হয়ে মগবাজার মোড়ে গিয়ে শেষ হবে।
সমাবেশ ফিরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের শর্তক অবস্থানে থাকতে দেখা যায়।
এমএইচ/এমএমএ/