অসুস্থ রিজভীর কিছু হলে দায় সরকারের: ইউট্যাব

৭ ডিসেম্বর থেকে কারাগারে বন্দি বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর শারীরিক অসুস্থায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে অনতিবিলম্বে তার নিঃশর্ত মুক্তি এবং সুচিকিৎসার দাবি জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সংগঠন ইউনিভার্সিটি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ইউট্যাব)।
বৃহস্পতিবার (২৬ জানুয়ারি) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে ইউট্যাবের প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ড. এবিএম ওবায়দুল ইসলাম ও মহাসচিব অধ্যাপক ড. মো. মোর্শেদ হাসান খান এ দাবি জানান।
বিবৃতিতে নেতারা বলেন, বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী প্রায় দেড় মাসের বেশি সময় ধরে কারাবন্দি রয়েছেন। রিজভী একজন মার্জিত, পরিচ্ছন্ন ও সুপরিচিত রাজনীতিবিদ। গত সোমবার থেকে তিনি পেটে প্রচণ্ড ব্যথা অনুভব করেন এবং বমি করেছেন। এমতাবস্থায় তার জীবনে বড় ধরনের জটিলতার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
নেতারা বলেন, এমনিতেই তিনি নানা রোগে আক্রান্ত। মহামারি করোনাকালেও তিনি কয়েকবার করোনায় আক্রান্ত হয়ে প্রায় চার মাস হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। তাকে চিকিৎসকের পরামর্শে খুবই মেপে জীবনযাপন করতে হয়। অথচ কারাগারের ভেতরে রিজভীকে জীর্ণ কক্ষে স্যাঁতস্যাঁতে পরিবেশে থাকতে দেওয়া হয়েছে। তাকে মিথ্যা মামলায় কারাগারে নেওয়ার পর সপ্তাহে প্রায় তিন থেকে চার দিন আদালতে আনা নেওয়া করা হচ্ছে। একজন বয়স্ক ও অসুস্থ ব্যক্তিকে এভাবে বার বার কারাগার থেকে আদালত এবং আদালত থেকে কারাগারে নেওয়ার কারণে রিজভী আরও বেশি অসুস্থ হয়েছেন বলেই সর্বমহলে আলোচনা।
ইউট্যাবের শীর্ষ দুই নেতা বলেন, আমরা জেনেছি, রিজভীর স্ত্রী আরজুমান আরা আইভী কারাগারে গেলে তাকে স্বামীর সঙ্গে দেখা করতে দেওয়া হয়নি। কারা কর্তৃপক্ষকে বারবার ফোন দিলেও তারা ফোন ধরেননি। কারাগারে গিয়ে যোগাযোগ করলে জেলসুপার দেখা করেননি, রিজভীর সঙ্গেও দেখা করতে দেননি। ডেপুটি জেলার আমিনুর রহমান দীর্ঘক্ষণ বসিয়ে রেখে বলেন, ‘রিজভী সাহেব ভালো আছেন। তাকে চিকিৎসকরা দেখাশোনা করছেন। আপনি চলে যান।’ একজন অসুস্থ ব্যক্তির স্ত্রীকেও দেখা করতে না দেওয়াটা চরম অমানবিক।
তারা আরও বলেন, রুহুল কবির রিজভী শুধু রাজনীতিবিদন নন তিনি একজন আইনজীবীও বটে। তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদের সাবেক ভিপি ছিলেন। তিনি ৯০’র দশকে স্বৈরাচার এরশাদ সরকারের বিরুদ্ধে নিজের জীবনবাজি রেখে প্রাণপন লড়াই-সংগ্রাম করেছেন। রিজভীর ন্যায় অসংখ্য ছাত্রনেতা সেসময় রাজপথে নেমে এসেছিল স্বৈরতন্ত্রের পরিবর্তে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে। রিজভী পরবর্তীতে রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের চেয়ারম্যান হিসেবে সফলতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছেন।
ইউট্যাবের নেতারা বলেন, আমরা শিক্ষক সমাজ মনে করি যে, রিজভীর মতো একজন সজ্জন রাজনীতিবিদকে কারাগারের ভেতরে নিম্ন পরিবেশে থাকতে দেওয়ার কারণেই তার শারীরিক অবস্থা আরও অবনতি হয়েছে। তা না হলে, যেই রিজভী সুস্থ অবস্থায় কারাগারে গেলেন সেই ব্যক্তি কীভাবে এত অল্প সময়েই গুরুতর অসুস্থ হলেন? অবিলম্বে নিঃশর্ত মুক্তি এবং কারাগারের বাইরে বিশেষায়িত হাসপাতালে সুচিকিৎসার দাবি জানাচ্ছি। অন্যথায় রুহুল কবির রিজভীর কিছু হলে তার দায় সম্পূর্ণভাবে কারা কর্তৃপক্ষ এবং সরকারকেই বহন করতে হবে।
এসএন
