সোমবার, ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ | ১১ ফাল্গুন ১৪৩১
Dhaka Prokash

‘ক্ষমতায় গেলে ঐকমত্যের সরকার প্রতিষ্ঠা করা হবে’

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, দেশের জনগণ গণতন্ত্র, সাম্য, মানবিক মর্যাদা, সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন নিয়ে এক সাগর রক্তের বিনিময়ে মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে যে রাষ্ট্র গড়ে তুলেছিলেন, সেই রাষ্ট্রের মালিকানা আজ তাদের হাতে নাই। বর্তমান কর্তৃত্ববাদী সরকার বাংলাদেশ রাষ্ট্র কাঠামোকে ভেঙে চুরমার করে ফেলেছে। এই রাষ্ট্রকে মেরামত ও পুনর্গঠন করতে হবে।

তিনি বলেন, দেশের জনগণের হাতেই দেশের মালিকানা ফিরিয়ে দেওয়ার লক্ষ্যে একটি অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ, গ্রহণযোগ্য ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনে জয়লাভের পর বর্তমান ফ্যাসিস্ট সরকার হটানোর আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী রাজনৈতিক দলগুলোর সমন্বয়ে একটি ‘জনকল্যাণমূলক জাতীয় ঐকমত্যের সরকার’ প্রতিষ্ঠা করা হবে। উক্ত ‘জাতীয় সরকার’ ২৭ দফায় রাষ্ট্র রূপান্তরমূলক সংস্কার কার্যক্রম গ্রহণ করবে।

তিনি বলেন, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ঘোষিত ১৯ দফা এবং বেগম খালেদা জিয়া ঘোষিত বিএনপির ভিশন-২০৩০ এর আলোকে এই রূপরেখাটি প্রস্তুত করা হয়েছে। পরবর্তীতে যথাসময়ে অন্যান্য বিষয়ভিত্তিক সংস্কার প্রস্তাব ও উন্নয়ন কর্মসূচি প্রকাশ করা হবে। রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের এই রূপরেখা অধিকতর সমৃদ্ধ করতে আপনাদের গঠনমূলক পরামর্শ জাতীয় বৃহত্তর স্বার্থে আমরা সাদরে গ্রহণ করব।

সোমবার (১৯ ডিসেম্বর) বেলা সাড়ে ৩টার দিকে রাজধানীর হোটেল দ্য ওয়েস্টিনে এ রূপরেখা তুলে ধরেন বিএনপির এই বর্ষীয়ান নেতা।

বিএনপি ঘোষিত ২৭ দফা রূপরেখা

১. বিগত এক দশকের অধিককালব্যাপী আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখার হীন উদ্দেশে অনেক অযৌক্তিক মৌলিক সাংবিধানিক সংশোধনী আনয়ন করেছে। একটি ‘সংবিধান সংস্কার কমিশন’ গঠন করে সব বিতর্কিত ও অগণতান্ত্রিক সাংবিধানিক সংশোধনী ও পরিবর্তনগুলো পর্যালোচনা করে এসব রহিত/সংশোধন করা হবে এবং অন্যান্য অত্যাবশ্যকীয় সাংবিধানিক সংস্কার করা হবে। সংবিধানে গণভোট ব্যবস্থা পুনঃপ্রবর্তন করে জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার পুনঃস্থাপন করা হবে।

২. প্রতিহিংসা ও প্রতিশোধের রাজনীতির বিপরীতে সব মত ও পথের সমন্বয়ে বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদের ভিত্তিতে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক, বৈষম্যহীন ও সম্প্রীতিমূলক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা হবে। এজন্য অব্যাহত আলোচনা, মতবিনিময় ও পারস্পারিক বোঝাপড়ার ভিত্তিতে ভবিষ্যৎমুখী এক নতুন ধারার সামাজিক চুক্তিতে পৌঁছাতে হবে। এজন্য একটি ‘জাতীয় সমঝোতা কমিশন’ গঠন করা হবে।

৩. বাংলাদেশে গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠায় এবং স্বচ্ছ গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে স্থায়ী সাংবিধানিক ও প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়ার লক্ষ্যে একটি ‘নির্বাচনকালীন দলনিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার’ ব্যবস্থা প্রবর্তন করা হবে।

৪. অর্থবিল, আস্থা ভোট, রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার প্রশ্ন এবং সংবিধান সংশোধনী বিল ব্যতীত অন্যসব বিষয়ে সংসদ সদস্যদের মতামত প্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিত করে সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ সংশোধন করা হবে।

৫. পরপর দুই টার্মের অতিরিক্ত কেউ রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করতে পারবেন না।

৬. প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রপতি ও সরকারের প্রধানমন্ত্রীর নির্বাহী ক্ষমতায় ভারসাম্য আনয়ন করা হবে। রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার ভারসাম্য প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে নির্বাহী বিভাগ, আইন বিভাগ ও বিচার বিভাগের ক্ষমতা, দায়িত্ব ও কর্তব্যের সুসমন্বয় করা হবে।

৭. বিদ্যমান সংসদীয় ব্যবস্থার পাশাপাশি বিশেষজ্ঞ জ্ঞানের সমন্বয়ে রাষ্ট্র পরিচালনার লক্ষ্যে দেশের প্রথিতযশা শিক্ষাবিদ, পেশাজীবী, রাষ্ট্রবিজ্ঞানী, সমাজবিজ্ঞানী ও প্রশাসনিক অভিজ্ঞতাসমৃদ্ধ ব্যক্তিদের সমন্বয়ে ‘দ্বি-কক্ষ বিশিষ্ট আইনসভা’ প্রবর্তন করা হবে।

৮. রাজনৈতিক দলগুলোর মতামত এবং বিশিষ্টজনের অভিমতের ভিত্তিতে স্বাধীন, দক্ষ, নিরপেক্ষ, গ্রহণযোগ্য ও দৃঢ়চিত্ত ব্যক্তিদের সমন্বয়ে একটি কার্যকর নির্বাচন কমিশন গঠন করার লক্ষ্যে বর্তমান ‘নির্বাচন কমিশন নিয়োগ আইন’ সংশোধন করা হবে। ইভিএম নয়, সব কেন্দ্রে পেপার-ব্যালটের মাধ্যমে ভোট প্রদান নিশ্চিত করা হবে। আরপিও, ডেলিমিটেশন অর্ডার এবং রাজনৈতিক দল নিবন্ধন আইন সংস্কার করা হবে। স্থানীয় সরকার নির্বাচনে দলীয় প্রতীক ব্যবহার বাতিল করা হবে।

৯. সংকীর্ণ রাজনৈতিক দলীয়করণের ঊর্ধ্বে উঠে সব রাষ্ট্রীয়, সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও বিশ্বাসযোগ্যতা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার লক্ষ্যে এই সব প্রতিষ্ঠান পুনর্গঠন করা হবে। শুনানির মাধ্যমে সংসদীয় কমিটির ভেটিং সাপেক্ষে এসব প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ দেওয়া হবে।

১০. বাংলাদেশের সংবিধান ও মাসদার হোসেন মামলার রায়ের আলোকে বিচার বিভাগের কার্যকর স্বাধীনতা নিশ্চিত করা হবে। বর্তমান বিচারব্যবস্থার সংস্কারের জন্য একটি ‘জুডিশিয়াল কমিশন’ গঠন করা হবে। জুডিশিয়াল সার্ভিসে পেজ ২ নিযুক্ত ব্যক্তিদের এবং জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটদের নিয়ন্ত্রণ, বদলি, পদোন্নতি, ছুটি মঞ্জুরিসহ চাকরির শৃঙ্খলাবিধান সুপ্রিমকোর্ট কর্তৃক পরিচালিত হবে। বিচারবিভাগের জন্য সুপ্রিমকোর্টের নিয়ন্ত্রণাধীন একটি পৃথক সচিবালয় থাকবে। সুপ্রিমকোর্টের বিচারপতিদের অভিশংসন প্রশ্নে সংবিধানে বর্ণিত ইতোপূর্বেকার ‘সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল’ ব্যবস্থা পুনঃস্থাপন করা হবে। এজন্য সংবিধানে প্রয়োজনীয় সংশোধনী আনয়ন করা হবে। দলীয় বিবেচনার ঊর্ধ্বে উঠে কেবলমাত্র জ্ঞান, প্রজ্ঞা, নীতিবোধ, বিচারবোধ ও সুনামের কঠোর মানদণ্ডে যাচাই করে বিচারক নিয়োগ করা হবে। সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি নিয়োগের লক্ষ্যে সংবিধানের ৯৫(গ) অনুযায়ী সুনির্দিষ্ট যোগ্যতা ও মানদণ্ড সম্বলিত ‘বিচারপতি নিয়োগ আইন’ প্রণয়ন করা হবে।

১১. দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ পরিষেবা, জনপ্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসন উপহার দেওয়ার লক্ষ্যে যোগ্য ও প্রাজ্ঞ ব্যক্তিদের সমন্বয়ে একটি ‘প্রশাসনিক সংস্কার কমিশন’ গঠন করে প্রশাসন পুনর্গঠন করা হবে। মেধা, সততা, সৃজনশীলতা, দক্ষতা, অভিজ্ঞতা ও প্রশিক্ষণ বেসামরিক ও সামরিক প্রশাসনে নিয়োগ, বদলি ও পদোন্নতিতে যোগ্যতার একমাত্র মাপকাঠি হিসেবে বিবেচনা করা হবে।

১২. সুপ্রিম কোর্টের একজন সাবেক বিচারপতির নেতৃত্বে সার্বিক সংস্কারের লক্ষ্যে একটি ‘মিডিয়া কমিশন’ গঠন করা হবে। সৎ সাংবাদিকতার পরিবেশ পুনরুদ্ধার করা হবে এবং চাঞ্চল্যকর সাগর-রুনি হত্যাসহ সব সাংবাদিক নির্যাতন ও হত্যার বিচার নিশ্চিত করা হবে।

১৩. দুর্নীতির ক্ষেত্রে কোনো আপোষ করা হবে না। বিগত দেড় দশকব্যাপী সংগঠিত অর্থ-পাচার ও দুর্নীতির অনুসন্ধান করে একটি শ্বেতপত্র প্রকাশ করা এবং শ্বেতপত্রে চিহ্নিত দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। দেশের বাইরে পাচারকৃত অর্থ দেশে ফেরত আনার প্রয়োজনীয় প্রশাসনিক ও আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। দুর্নীতি দমন কমিশন ও দুর্নীতি দমন আইন সংস্কারের পাশাপাশি পদ্ধতিগত সংস্কারের মাধ্যমে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা হবে। সংবিধান অনুযায়ী ‘ন্যায়পাল’ নিয়োগ করা হবে।

১৪. সর্বস্তরে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে মানবিক মূল্যবোধ ও মানুষের মর্যাদা পুনঃপ্রতিষ্ঠা এবং গুম, খুন, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড এবং অমানবিক নিষ্ঠুর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের অবসান ঘটানো হবে। ‘সর্বজনীন মানবাধিকার চার্টার’ অনুযায়ী মানবাধিকার বাস্তবায়নের লক্ষ্যে সুনির্দিষ্ট মানদণ্ডের ভিত্তিতে মানবাধিকার কমিশনে নিয়োগ দেওয়া হবে। গত দেড় দশক যাবৎ সংগঠিত সব বিচারবহির্ভূত হত্যা, ক্রসফায়ারের নামে নির্বিচারে হত্যা, গুম, অপহরণ, ধর্ষণ, নির্মম শারীরিক নির্যাতন, নিষ্ঠুর ও অমানবিক অপরাধের সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত সব ব্যক্তির সুবিচার নিশ্চিত করা হবে।

১৫. অর্থনৈতিক ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে বিশেষজ্ঞ অর্থনীতিবিদ, অভিজ্ঞ ব্যাংকার, কর্পোরেট নেতা, প্রশাসনিক অভিজ্ঞতাসম্পন্ন ব্যক্তির সমন্বয়ে একটি ‘অর্থনৈতিক সংস্কার কমিশন’ গঠন করা হবে। মুক্তিযুদ্ধের মূলমন্ত্র সাম্য ও সামাজিক ন্যায়বিচারের নিরিখে প্রবৃদ্ধির সুফল সুষম বণ্টনের মাধ্যমে ধনী-দরিদ্রের বৈষম্য দূরীকরণ করা হবে। উপরোক্ত সাংবিধানিক সংস্কার কমিশন, প্রশাসনিক সংস্কার কমিশন, জুডিশিয়াল কমিশন, মিডিয়া কমিশন এবং অর্থনৈতিক সংস্কার কমিশনগুলো সুনির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে স্ব-স্ব প্রতিবেদন দাখিল করবে যেন সংশ্লিষ্ট সুপারিশগুলো দ্রুত বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়।

১৬. ‘ধর্ম যার যার, রাষ্ট্র সবার’ এই মূলনীতির ভিত্তিতে প্রত্যেক ধর্মাবলম্বী নিজ নিজ ধর্ম পালনের পূর্ণ অধিকার ভোগ করবেন। দলমত ও জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে পাহাড়ি ও সমতলের ক্ষুদ্র-বৃহৎ সব জাতিগোষ্ঠীর সংবিধান প্রদত্ত সামাজিক, রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক, অর্থনৈতিক ও ধর্ম-কর্মের অধিকার, নাগরিক অধিকার এবং জীবন, সম্ভ্রম ও সম্পদের পূর্ণ নিরাপত্তা বিধান করা হবে।

১৭. শ্রমজীবী মানুষ এবং চা-বাগান, বস্তি, চরাঞ্চল, হাওর-বাওর ও মঙ্গাপীড়িত ও উপকূলীয় অঞ্চলের বৈষম্য দূরীকরণ ও সুষম উন্নয়নে বিশেষ কর্মসূচি গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করা হবে। শ্রমিকদের ন্যায্য মজুরি নিশ্চিত করা হবে। শিশুশ্রম বন্ধ করা হবে।

১৮. সব কালাকানুন বাতিল করা হবে এবং অপ্রয়োজনীয় কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো হতে বিদ্যুৎ ক্রয় বন্ধ করা হবে। আমদানি নির্ভরতা পরিহার করে নবায়নযোগ্য ও মিশ্র এনার্জি-নির্ভর বিদ্যুৎ উৎপাদন এবং উপেক্ষিত গ্যাস/খনিজ সম্পদ আহরণ/আবিষ্কারে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

১৯. বৈদেশিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের জাতীয় স্বার্থকে সর্বোচ্চ প্রাধান্য দেওয়া হবে। বাংলাদেশ ভূখণ্ডের মধ্যে কোনোরকম সন্ত্রাসবাদী তৎপরতাকে বরদাশত করা হবে না এবং কোনো সন্ত্রাসবাদী তৎপরতা আশ্রয়-প্রশ্রয় পাবে না। ভিন্নমতের বিরোধী শক্তি দমনে সন্ত্রাসবাদকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা এবং সন্ত্রাসবাদের তকমা লাগিয়ে বিরোধী দল দমনের অপতৎপরতা বন্ধ করা হবে।

২০. দেশের সার্বভৌমত্ব সুরক্ষায় প্রতিরক্ষা বাহিনীকে সুসংগঠিত, যুগোপযোগী এবং সর্বোচ্চ দেশপ্রেমের মন্ত্রে উজ্জীবিত করে গড়ে তোলা হবে। স্বকীয় মর্যাদা বহাল রেখে প্রতিরক্ষাবাহিনীকে সব বিতর্কের ঊর্ধ্বে রাখা হবে।

২১. ক্ষমতার ব্যাপক বিকেন্দ্রীকরণের লক্ষ্যে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোকে অধিকতর স্বাধীন, শক্তিশালী ও ক্ষমতাবান করা হবে। এসব প্রতিষ্ঠানকে এমনভাবে জবাবদিহিতার আওতায় আনা হবে যেন তারা শিক্ষা, স্বাস্থ্যসহ বিভিন্ন পরিষেবা প্রদান ও উন্নয়ন কার্যক্রমে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে। স্থানীয় প্রশাসন ও অন্য কোনো জনপ্রতিনিধির খবরদারি মুক্ত স্বাধীন স্থানীয় সরকার নিশ্চিত করা হবে এবং স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানে সরকারি প্রশাসক নিয়োগ বন্ধ করা হবে। আদালত কর্তৃক দণ্ডপ্রাপ্ত না হওয়া পর্যন্ত স্থানীয় সরকারের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের নির্বাহী আদেশবলে বহিষ্কার/অপসারণ করা হবে না।

২২. রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে নিবিড় জরিপের ভিত্তিতে মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের একটি তালিকা প্রণয়ন করা হবে এবং তাদের যথাযথ মর্যাদা ও রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি প্রদান করা হবে। এই তালিকার ভিত্তিতে শহীদ মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের কল্যাণার্থে নীতি প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করা হবে। মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা যাচাই বাছাই করে একটি সঠিক তালিকা প্রস্তুত করা হবে।

২৩. যুবসমাজের ভিশন ও চিন্তা-চেতনাকে ধারণ করে আধুনিক ও যুগোপযোগী যুব-উন্নয়ন নীতিমালা প্রণয়ন করা হবে। বেকার যুবকদের যথাযথ কর্মসংস্থান না হওয়া পর্যন্ত অথবা নূন্যতম এক বছর পর্যন্ত (যা আগে ঘটে) বেকার ভাতা প্রদান করা হবে। যুব-দক্ষতা বৃদ্ধি করে ‘ডিমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ড’ আদায়ের লক্ষ্যে দৃশ্যমান পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে এবং বেকারত্ব দূরীকরণের লক্ষ্যে নানামুখী বাস্তবসম্মত কর্মসূচি গ্রহণ করা হবে। স্বাস্থ্য ও পুষ্টির উপর সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে মানবসম্পদ উন্নয়নে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

২৪. নারীর ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সুনির্দিষ্ট কর্মসূচি গ্রহণ করা হবে। জাতীয় সংসদে মনোনয়নের ক্ষেত্রে নারীদের গুরুত্ব প্রদান এবং স্থানীয় সরকার ব্যবস্থায় নারীর প্রতিনিধিত্ব বাড়ানোর উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।

২৫. বর্তমানে শিক্ষাক্ষেত্রে বিরাজমান নৈরাজ্য দূর করে নিম্ন ও মধ্য পর্যায়ে চাহিদা ভিত্তিক শিক্ষা এবং উচ্চ শিক্ষার ক্ষেত্রে জ্ঞানভিত্তিক শিক্ষা-ক্যারিকুলামকে প্রাধান্য দেওয়া হবে। গবেষণায় বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হবে। জাতীয় বাজেটে শিক্ষা খাতে জিডিপির ৫ শতাংশ অর্থ বরাদ্দ করা হবে।

২৬. ‘সবার জন্য স্বাস্থ্য’ এই নীতির ভিত্তিতে স্বাস্থ্যসেবা সহজলভ্য করার নিমিত্তে সর্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা প্রবর্তন করা হবে। জাতীয় বাজেটে স্বাস্থ্য খাতে জিডিপির ৫ শতাংশ অর্থ বরাদ্দ করা হবে।

২৭. কৃষিপণ্যের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করা হবে। প্রয়োজনে ভর্তুকি দিয়ে হলেও শস্য বিমা, পশু বিমা, মৎস্য বিমা এবং পোল্ট্রি বিমা চালু করা হবে। কৃষি জমির অকৃষি ব্যবহার বন্ধ করা হবে।

এমএইচ/এসজি

Header Ad
Header Ad

এলিফ্যান্ট রোডের একটি বাসা থেকে ঢাবি ছাত্রীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার

ছবিঃ সংগৃহীত

রাজধানীর নিউমার্কেট থানাধীন এলিফ্যান্ট রোডের একটি ছাত্রী হোস্টেল থেকে আনিকা মেহেরুন্নেসা সাহি (২৪) নামে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তিনি ঢাবির ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন।

রোববার (২৩ ফেব্রুয়ারি) দিবাগত রাত ১১টার দিকে এলিফ্যান্ট রোডের ৮০৩ নং মকসুদ টাওয়ারের ৮ তলার একটি কক্ষে এই ঘটনা ঘটে।

পরে অচেতন অবস্থায় রাত পৌনে ২টার দিকে তাকে ঢাকা মেডিকেলে নিয়েলে জরুরি বিভাগের দায়িত্বরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

অনিকা জয়পুরহাট সদরের নতুন হাট গ্রামের ফিরোজ হোসেনের মেয়ে। বর্তমানে এলিফ্যান্ট রোডে একটি ছাত্রী নিবাসে থাকতেন।

নিউমার্কেট থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) বিরাজ মিস্ত্রি বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে ওই শিক্ষার্থীকে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার করি। পরে অচেতন অবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

তিনি বলেন, এলিফ্যান্ট রোডে একটি ছাত্রী হোস্টেলে কয়েকজন মেয়ে মিলে থাকতেন। রাতে ছাত্রী হোস্টেলের অন্যান্য রুমমেটরা বিষয়টি আমাদেরকে জানায়। আমরা তাদের সঙ্গে কথা বলে জানতে পেরেছি প্রেমঘটিত কলহের জেরে ওই শিক্ষার্থী এমন ঘটনাটি ঘটিয়ে থাকতে পারে।

এ ঘটনায় বুয়েটের এক শিক্ষার্থীকে জিজ্ঞাসা করার জন্য থানা পুলিশের হেফাজতের নেওয়া হয়েছে। মৃত্যুর সঠিক কারণ নির্ণয়ে মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গে রাখা হয়েছে। এ বিষয়ে আইনি প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।

Header Ad
Header Ad

চ্যানেল ‘চ্যানেল ওয়ান’ সম্প্রচারে বাধা নেই  

ছবিঃ সংগৃহীত

বেসরকারি স্যাটেলাইট টিভি চ্যানেল ‘চ্যানেল ওয়ান’ বন্ধ করে দেয়া নোটিশ বাতিল চেয়ে করা আবেদন খারিজ করে হাইকোর্টের দেয়া আদেশের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল মঞ্জুর করে আদেশ দিয়েছেন সর্বোচ্চ আদালত।

সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) সকালে আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি আশফাকুল ইসলামের নেতৃত্বাধীন ৪ বিচারপতির আপিল বেঞ্চ হাইকোর্টের রায়ের কার্যকারিতা স্থগিত করে এই আদেশ দেন।

এ সময় আদালতে চ্যানেল ওয়ানের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ব্যারিস্টার মো. রুহুল কুদ্দুস কাজল, অ্যাডভোকেট পলাশ চন্দ্র রায়, অ্যাডভোকেট কাজী আখতার হোসেন, অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ মাসুম বিল্লাহ ও ব্যারিস্টার মারুফ ইব্রাহিম (আকাশ)।

পরে ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল সাংবাদিকদের বলেন, এ আদেশের ফলে ১৬ বছর পর চ্যানেল ওয়ান খুলতে সব আইনি বাধা কাটলো।

প্রসঙ্গত, ২০১০ সালের ২৭ এপ্রিল আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর চ্যানেল ওয়ানের সম্প্রচার বন্ধ করা হয়েছিল। বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি কমিশন (বিটিআরসি) চ্যানেল ওয়ানের ফ্রিকোয়েন্সি বরাদ্দ বন্ধ করার পর টিভি চ্যানেলটির কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে হাইকোর্টে আবেদন করে,আবেদনটি খারিজ হয়ে যায়।

সেসময় সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, অনুমতি না নিয়ে চ্যানেল ওয়ান কর্তৃপক্ষ আমদানি করা সম্প্রচার যন্ত্রপাতি বিক্রি করেছে। আর সেজন্য চ্যানেলটি বন্ধ করা হয়েছে।

চ্যানেল ওয়ান ব্যবসায়ী গিয়াস উদ্দিন মামুনের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান। তিনি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত।

Header Ad
Header Ad

নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে যুদ্ধবিরতি চুক্তি ভাঙার অভিযোগ  

ছবিঃ সংগৃহীত

ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে গাজার যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলেছে দেশটির বিরোধী দল।

রোববার (২৩ ফেব্রুয়ারি) ডেমোক্রেটিক পার্টির নেতা ইয়াইর গোলান অভিযোগ করেন নেতানিয়াহু ফিলিস্তিনি বন্দিদের মুক্তি স্থগিত করেছেন, যা চুক্তির সরাসরি লঙ্ঘন এবং প্রথম পর্যায়ের চুক্তির বিপর্যয় ঘটিয়েছে।

গোলান এক টুইট বার্তায় উল্লেখ করেন, নেতানিয়াহু বন্দিদের মুক্তি স্থগিত করার আদেশ দিয়েছেন, চুক্তি স্পষ্টভাবে লঙ্ঘন করেছেন এবং প্রথম পর্যায়ের চুক্তি ধ্বংস করেছেন, যেমন আমরা আগেই সতর্ক করেছিলাম।

গোলান, যিনি নেতানিয়াহুর সরকারের তীব্র সমালোচক বলে পরিচিত, তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, আমাদের ভাইবোনদের খেসারত দিয়ে বিরোধী দল প্রধানমন্ত্রীকে তার পদে থাকতে দেবে না।

তিনি আরও বলেন, বিবি (নেতানিয়াহু), যদি তুমি চুক্তি ধ্বংস করো, তবে সবকিছু অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠবে।

হামাসের পক্ষ থেকে মুক্ত ৬ জন বন্দির বিনিময়ে শনিবার ৬২০ জন ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দেওয়ার কথা ছিল ইসরাইলের। তবে, তেল আবিব এটি স্থগিত করে দাবি করেছে বন্দি হস্তান্তরের অনুষ্ঠান আপমানজনক ছিল।

গাজার যুদ্ধবিরতি ও বন্দি বিনিময় চুক্তি গত মাসে কার্যকর হয়েছিল, যা ইসরাইলের গণহত্যামূলক যুদ্ধের বিরতি দেয়। এই যুদ্ধে ৪৮,৩০০ এরও বেশি প্রাণহানি ঘটেছে, যার মধ্যে বেশিরভাগই নারী ও শিশু, এবং গাজা অঞ্চল সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গেছে।

আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত নভেম্বরে নেতানিয়াহু এবং তার সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োাভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গাজায় যুদ্ধাপরাধ ও মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের অভিযোগে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে। ইসরাইল বর্তমানে আন্তর্জাতিক আদালতে গাজায় তার যুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগের মুখোমুখি।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

এলিফ্যান্ট রোডের একটি বাসা থেকে ঢাবি ছাত্রীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার
চ্যানেল ‘চ্যানেল ওয়ান’ সম্প্রচারে বাধা নেই  
নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে যুদ্ধবিরতি চুক্তি ভাঙার অভিযোগ  
‘ডু অর ডাই’ ম্যাচে নিউজল্যান্ডের বিপক্ষে আজ মাঠে নামছে বাংলাদেশ
আ:লীগ পাচার হওয়া অর্থ দিয়ে দেশকে অস্থিতিশীল করছে : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা  
বনশ্রীতে ব্যবসায়ীকে গুলি করে ২০০ ভরি সোনা ছিনতাই    
চট্টগ্রাম কলেজে ছাত্রদলের ওপর ছাত্রশিবিরের হামলা
সেমিফাইনালের পথে ভারত, কোহলির সেঞ্চুরিতে পাকিস্তানের হার
নাহিদের পদত্যাগ নিয়ে যা জানা গেল
দুর্ঘটনায় আহত ছেলেকে হাসপাতালে দেখতে যাওয়ার পথে সড়কে প্রাণ গেল মায়ের
অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা দ্রুত মৃত্যু ডেকে আনে!
জীবন থাকতে কোনো স্থানীয় নির্বাচন করতে দেওয়া হবে না: ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক
২৫ ফেব্রুয়ারি ‘জাতীয় শহীদ সেনা দিবস’ ঘোষণা, সরকারি ছুটি নিয়ে যা জানা গেল!
ঢাবির মধুর ক্যান্টিনে ছাত্রশিবিরের সংবাদ সম্মেলন, ছাত্রদলের নিন্দা
ভারতে ৫ বছর ধরে নিকটজনদের কাছে ধর্ষণের শিকার কিশোরী
ইলন মাস্ককে বাংলাদেশ সফর ও স্টারলিংক চালুর আমন্ত্রণ প্রধান উপদেষ্টার
পাঁচ দফা দাবিতে মেডিকেল শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ, একাডেমিক শাটডাউন ও লংমার্চের ঘোষণা
নির্বাচন নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের দুটি সময়সীমা নির্ধারণ: সিইসি
নিজ বাড়িতে গুলিবিদ্ধ অভিনেতা আজাদ, আহত মা ও স্ত্রী
আহতদের চিকিৎসা বন্ধে ‘নো ট্রিটমেন্ট, নো রিলিজ’ শেখ হাসিনার নির্দেশ ছিলো