নয়াপল্টনে মোবাইল ফোন চেক করে ঢুকতে দিচ্ছে পুলিশ
পুলিশের সঙ্গে বুধবার (৮ ডিসেম্বর) বিএনপি নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষের পর নয়াপল্টনে অবস্থান নেয় পুলিশ। এই ঘটনার পর গতকাল বৃস্পতিবার সকালে থেকে সন্ধা পর্যন্ত নাইটেঙ্গেল মোড় থেকে পল্টন-আরামবাগের রাস্তা বন্ধ ছিল। রাতে এই রাস্তাটি ছেড়ে দিলেও শুক্রবার (৯ ডিসেম্বর) সকাল থেকে আবারও ব্যারিকেড বসিয়ে রাস্তা বন্ধ করে রেখেছে পুলিশ।
নয়াপল্টনে কর্মজীবী মানুষকে পড়তে হচ্ছে বিভিন্ন বাধার মুখে। দেখা যায়, যাতায়াতকারীদের ফোন নিয়ে পুলিশ চেক করে প্রবেশ করতে দিচ্ছে। পুলিশের চেকের মধ্যে পড়ে অসন্তুষ্টি প্রকাশ করছেন অনেকেই।
হোটেল ভিক্টরের কর্মচারী ফরহাদ হোসেন বলেন, আমরা কর্ম করে খাই, রাস্তা বন্ধ করে পুলিশ যেটা করছে সেটি কি ঠিক হচ্ছে? তা ছাড়া আমরা অনেকেই আছি শ্রমিক। কাজকর্ম না করলে কী করে পরিবার চালাব?
পল্টনের মিঠাই হোটেলের বয় রাজু বলেন, আমার স্মার্ট ফোন পুলিশ বেরিকেডে প্রবেশের আগেই চেক করে প্রবেশ করতে দিয়েছে। আমাকে চেক করার সময় পুলিশ বলছে তুমি কী কর, বিএনপি কর না তো, তোমার ফোনটা দাও দেখি।
মোবাইল ফোন চেক করছেন কেন জানতে চাইলে পল্টনে পুলিশের দায়িত্বরত সদস্য মো. মামুন বলেন, আমরা মোবাইল ফোন চেক করছি তার কারণ হলো বিএনপি নেতা-কর্মীরা সরকারবিরোধী কোনো অপপ্রচারে যুক্ত কি না তা জানার জন্য। যারা সরকারবিরোধী অপপ্রচারে যুক্ত তাদের আমরা আইনের আওতায় আনতে মোবাইল ফোন চেক করছি।
নয়াপল্টন এলাকায় ঢুকতে গেলে পুলিশের প্রশ্নের মুখে পড়তে হচ্ছে। ওই এলাকায় বসবাসরতদের ঢুকতে দেওয়া হলেও তাদের মেসেঞ্জার-হোয়াটসঅ্যাপও বা অন্যান্য অ্যাপস চেক করছে পুলিশ।
পুলিশ বলছে, ঊর্ধ্বতনদের নির্দেশনায় এই ব্যারিকেড দেওয়া হয়েছে। এই এলাকায় যদি কারও বাসা থাকে, তাদের ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে, এর বাইরে কেউই ঢুকতে পারবে না।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত উপকমিশনার আবুল হাসান সাংবাদিকদের বলেন, উপর থেকে নির্দেশনা আছে এই এলাকায় কাউকে ঢুকতে দেওয়া যাবে না। তারপরও আমরা ওই এলাকায় বসবাসরত বা যৌক্তিক কারণে কেউ এলে তাকে আমরা ঢুকতে দিচ্ছি। এক্ষেত্রে কাউকে সন্দেহজনক মনে হলে তাদের মোবাইল ফোন বা অন্যান্য জিনিসপত্র চেক করে ভেতরে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে।
নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনের সকাল ৭টা থেকে ওই সড়কে সব যান চলাচল ও লোকজনের প্রবেশে বিধি-নিষেধ আরোপ করে পুলিশ।
পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, জনসাধারণের শান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এই সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে।
বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয় তালাবদ্ধ, কলাপসিবল গেট আটকানো রয়েছে। নাইটেঙ্গেল মোড় থেকে ফকিরাপুল মোড় পর্যন্ত প্রতিটি গলিরমুখে ব্যারিকেড দিয়ে চলাচল বন্ধ করা হয়েছে।
গত বুধবার নয়াপল্টনে বিএনপির নেতা-কর্মীদের সরাতে পুলিশ টিয়ারগ্যাস নিক্ষেপ ও লাঠিচার্জ করায় সংঘর্ষ বাধে। সেখানে কয়েক দফায় ককটেল বিস্ফোরণ ঘটে। কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে পুলিশ তল্লাশি চালানো হয়। কার্যালয় থেকে চার শতাধিক নেতা-কর্মী গ্রেপ্তার করা হয়।
কেএম/এসএন