পুলিশ ‘ক্র্যাকডাউন’ চালাচ্ছে: রিজভী

ফাইল ছবি
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, আগামী ১০ ডিসেম্বর ঢাকা বিভাগীয় গণসমাবেশ নিয়ে পুলিশের টানা-হেঁচড়ায় দেশবাসী ক্ষুব্ধ। বিএনপির মতো একটি বৃহৎ রাজনৈতিক দলের শান্তিপূর্ণ গণসমাবেশের কর্মসূচিতে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির জন্য এক পরিকল্পিত নীলনকশায় মেতেছে আওয়ামী সরকার। সমাবেশের ভেন্যু নিয়ে সিদ্ধান্তহীনতার দোলাচল তৈরির পরিস্থিতি সরকারের অসৎ অনাচারের বহিঃপ্রকাশ।
মঙ্গলবার (৬ ডিসেম্বর) রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে উপস্থিত সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন রিজভী।
সাবেক এই ছাত্রনেতা বলেন, বিএনপির গণসমাবেশকে নিয়ে সরকারের কপালে কেন এত দুশ্চিন্তার ভাঁজ? ওবায়দুল কাদের সাহেবরা কেন এত বিচলিত হয়ে পড়েছে। আওয়ামী লীগের ষড়যন্ত্র অভিলাষী নেতারা গণসমাবেশকে নিয়ে বানোয়াট গল্প প্রচারে নেমেছে। বানোয়াট গল্পকে নিয়ে পুলিশ প্রশাসন অতি উৎসাহী হয়ে ঢাকা মহানগরসহ সারা দেশে ‘ক্র্যাকডাউন’ চালাচ্ছে। বিএনপি নেতা-কর্মীদের বাড়ি বাড়ি চলছে গ্রেপ্তার, গ্রেপ্তারের নামে পুলিশি তল্লাশি, আসবাবপত্র ভাঙচুরসহ পরিবারের লোকজনের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ। এরা গণতন্ত্রকামী জনগণকে দাবিয়ে রাখার জন্য সরকারের রাষ্ট্রীয় দমনযন্ত্রকে ব্যবহার করছে বিএনপির উপর। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে যে, বিএনপি নেতা-কর্মীদের বাঁচা অর্থ কায়ক্লেশে বেঁচে বর্তে থাকা।
তিনি বলেন, পুলিশের কাছে এখন নিরপেক্ষতা কোনো বিবেচ্য বিষয় নয়, বরং দলীয় আনুগত্য গুরুত্ব পেয়ে থাকে। এদের বিবেচনাশক্তি থাকলে বিএনপির ঢাকার গণসমাবেশ নিয়ে বাড়াবাড়ি করতেন না। আজকে আওয়ামী ফ্যাসিবাদ চলছে বলেই রাষ্ট্রের প্রতিটি অঙ্গকে দলীয় চেতনায় সংগঠিত করা হয়েছে। বিচারব্যবস্থা সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে কাজ করতে পারছে না। দলীয়করণের রাজনীতি গণতান্ত্রিক রাজনীতি নয়। বিরোধী দল শত্রুদল নয়। বিএনপির রাজনীতি জনস্বার্থকেন্দ্রিক। জনসমাবেশে জনগণের পক্ষেই কথা বলা হবে।
বিএনপির এই নেতা বলেন, সবদেশে সবকালে সমাবেশ আহ্বানকারীরা সব সময় সেটিকে সাফল্যমণ্ডিত করার জন্য শান্তি ও স্থিতির উপর সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়। সমাবেশ জনগণের কাছে বক্তব্য পৌঁছার একটি অন্যতম পদ্ধতি। কিন্তু শেখ হাসিনার সরকার এতটাই গণবিচ্ছিন্ন যে, অসংখ্য মানুষের শব্দে ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে পড়ে। গণতন্ত্রে দলমত, চিন্তা নির্বিশেষে সবার অংশীদারিত্ব নিশ্চিত হয়। কিন্তু শেখ হাসিনা সেটি বিশ্বাস করেন না, তিনি একদলীয়, একমাত্রিক, কর্তৃত্ববাদী নিষ্ঠুর শাসনকে রাজনৈতিক দর্শন হিসেবে বেছে নিয়েছেন। সেজন্য শেখ হাসিনা ক্ষমতায় টিকে থাকতে মানবতার অস্তিত্বকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলেছেন। বিএনপির গণসমাবেশ নিয়ে মিথ্যা প্রশাসনের বাড়াবাড়ি, গুজব রটানো, রঙ চড়িয়ে কথা বলা যেন সরকারেরই মানসিক বৈকল্যের বর্ধিত প্রকাশ।
রিজভী আরও বলেন, ঢাকার গণসমাবেশকে নিয়ে টালবাহানায় আবারও প্রমাণিত হলো- অগণতান্ত্রিক শক্তির দোসররা কখনোই গণতান্ত্রিক শক্তির মিত্র হতে পারে না। বিএনপির সঙ্গে অবৈধ সরকার শত্রুতা করতে পারে, কিন্তু তাদেরকে মনে রাখতে হবে বিএনপির বন্ধুর সংখ্যা অসংখ্য। জনগণই বিএনপির সবচেয়ে বড় বন্ধু। এত ষড়যন্ত্র চক্রান্তের মাঝেও বিএনপি এখনো দেশের প্রধান রাজনৈতিক শক্তি।
এমএইচ/এসজি
