৩ দিনে বিএনপির ৭৭৬ নেতা-কর্মী গ্রেপ্তার: রিজভী
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, নয়াপল্টনেই বিএনপির শান্তিপূর্ণ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। সোহওরাওয়ার্দী উদ্যান চার দিক থেকে ঘেরা একটা খাঁচার মতো সেখানে নেতা-কর্মীরা নিরাপদ মনে করছেন না। নয়াপল্টনকেই তারা নিরাপদ মনে করছেন। সরকার বা পুলিশের পক্ষ থেকে যাই বলা হোক না কেন বিএনপির সমাবেশ নয়াপল্টনেই হবে।
শনিবার (৩ ডিসেম্বর) নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় সমাবেশ নিয়ে পুলিশের আইজিপির বক্তব্যের তীব্র সমালোচরা করেন।
রিজভী হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, তবে শেখ হাসিনার মর্জিমাফিক আর কিছুই হবে না। বিরোধী দলের আন্দোলনের ঝড়ো হাওয়ায় তিনি আর স্থির থাকতে পারবেন না। নতুন নতুন প্রহসন ও নাটক করে শেষ রক্ষা হবে না।
গত তিন দিনে ৭৭৬ জন নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে দাবি করে রিজভী বলেন, আজ রাজশাহী মহানগরে রাজশাহী বিভাগীয় গণসমাবেশ। এই গণসমাবেশকে কেন্দ্র করে পুলিশ প্রচণ্ড রকম বাড়াবাড়ি করেছে। তিন দিন আগে থেকেই জনগণ সমাবেশের মূল মাঠে আসার জন্য চেষ্টা করলেও পুলিশ তাদের ঢুকতে দেয়নি এবং প্রচণ্ড রকমের হয়রানি করেছে। প্রশাসন ও সরকারি দলের নির্দেশেই গণপরিবহন বন্ধ করে দেওয়ার পর গতকাল থেকে তিন চাকার পরিবহনও বন্ধ করতে বাধ্য করা হয়েছে।
তিনি বলেন, পরিবহন শ্রমিকরা বলছেন-‘দাবি-টাবি কিছুই না, বিএনপির সমাবেশ বন্ধ করতেই গরিবের পেটে লাথি মারা।’ এর মধ্যেও কিছু কিছু সিএনজিচালক ও অটোচালক তাদের গাড়ি বের করলে তাদের প্রচণ্ড রকম হয়রানি ও মারধর করেছে পুলিশ। সব বাধা, হামলা-মামলা ভেদ করে রাজশাহীর সমাবেশে যোগ দিয়েছে লক্ষ লক্ষ জনতা। পদ্মাবিধৌত রাজশাহী ছিল জনসমাগমে পূর্ণ। তারা গতকাল পর্যন্ত সমাবেশ মাঠে ঢুকতে না পারলেও পাশের ঈদগাহ মাঠ, পাশের রাস্তাসহ আশপাশের এলাকায় অবস্থান নিয়ে চাল-ডাল-মুড়ি-চিড়া-গুড় সঙ্গে নিয়ে হাজির হয়েছে সমাবেশ ময়দানে। খিচুড়ি রান্না করে মানুষের মাঝে বিতরণ করতে দেখা গেছে স্বতস্ফূর্তভাবে। এ এক বিস্ময়কর দৃশ্য, যা চোখে না দেখলে বিশ্বাস করা যায় না। সমাবেশে আসার পথে সিরাজগঞ্জ, বগুড়া, নাটোরে জনতার উপর সহিংস আক্রমণ করা হয়।
বিএনপির মুখপাত্র বলেন, অর্থনৈতিক ধাক্কা ও দুঃশাসনের কষাঘাতে ফ্যাসিস্ট সরকার ক্ষমতা হারানোর ভয়ে বেসামাল হয়ে গেছে। সরকারবিরোধী হাওয়া প্রবল আকার নিচ্ছে। তাই ছলে-বলে কৌশলে ক্ষমতা ধরে রাখতে দেশজুড়ে পুলিশ-র্যাব দিয়ে তাণ্ডবলীলা চালাচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ‘কো-অপারেটিভ ফ্যাসিজম’ রুপে আত্মপ্রকাশ করেছে। এক ধরনের দুর্ভাবনা থেকেই স্বাধীন কণ্ঠস্বরকে নিবৃত্ত করতেই বিএনপি নেতা-কর্মীদের নামে গায়েবি মামলা ও গণগ্রেপ্তার চালানো হচ্ছে। পথে-ঘাটে চলছে পুলিশ ও আওয়ামী ক্যাডারদের মিলিত অপমান, অত্যাচার ও সহিংস পৈশাচিকতা।
এসএন