শেখ হাসিনা জনআতঙ্কে ভুগছেন: রিজভী
বিএনপি সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ১০ ডিসেম্বর ঢাকার বিভাগীয় গণসমাবেশ নিয়ে অবৈধ সরকার বেসামাল হয়ে পড়েছে। শুরু করেছে বিএনপি নেতা-কর্মীদের গণগ্রেপ্তার, মিথ্যা কাহিনি সাজিয়ে পাইকারিহারে মামলা দায়ের, গভীর রাতে নেতা-কর্মীদের বাড়িতে ডাকাতের মতো হানা দেওয়া, পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার চরম মাত্রায় শুরু করেছে আওয়ামী আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
বৃহস্পতিবার (১ ডিসেম্বর) নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি একথা বলেন।
তিনি বলেন, মনে হয় পুলিশ শেখ হাসিনার কাছে শপথ গ্রহণ করেছে যেভাবেই হোক ১০ ডিসেম্বর গণসমাবেশ বাধাগ্রস্ত করতে হবে। ইতোমধ্যে গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রীয় নেতাসহ ঢাকা মহানগর এবং দেশের অন্যান্য অঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। মনে হয় শেখ হাসিনা জনআতঙ্কে ভুগছে। তাই ঢাকায় গণসমাবেশের কথা শুনেই তিনি দিশেহারা হয়ে দমনের নিষ্ঠুর পথ অবলম্বন করেছেন।
রুহুল কবির বলেন, বাংলাদেশে আইনের উৎস হচ্ছে শেখ হাসিনার ইচ্ছা। প্রকৃত আইন, সুবিচার ও গণতন্ত্রেবিরোধী দলের অধিকারের যবনিকা টানা হয়েছে। সরকারের নির্দেশে পুলিশ এই মুহূর্তে যা কিছুই করছে সেটি এক গভীর চক্রান্ত। গতকাল পুলিশ সদর দপ্তর থেকে ‘বিশেষ অভিযান পরিচালনা’ প্রসঙ্গে যে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে তা দুরভিসন্ধিমূলক। ১০ ডিসেম্বরের গণসমাবেশকে বাধাগ্রস্ত করার জন্যই আজ থেকে আবাসিক হোটেল, মেস, হোস্টেল, প্রতিষ্ঠান ও কমিউনিটি সেন্টারে নিয়মিত তল্লাশি চালানোর কথা বলা হয়েছে। এটা দিবালোকের মতো সত্য যে, গণসমাবেশকে নিয়েই পুলিশের এই অশুভ তৎপরতা। নেতা-কর্মীদের হয়রানি এবং জনমনে ভীতি তৈরি করাই এর উদ্দেশ্য।
সাবেক এই ছাত্র নেতা বলেন, পুলিশের মিথ্যা মামলা এবং মিথ্যা ককটেল বিস্ফোরণের সংবাদ গণমাধ্যমে প্রচারিত হওয়ার পর গতকাল নারায়ণগঞ্জে মশাল মিছিল করে ককটেল বিস্ফোরণ এবং মুন্সিগঞ্জে সিএনজিতে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। এই ঘটনা একের পর এক চক্রান্তের ধারাবাহিকতা। গোয়েন্দা সংস্থা ও আওয়ামী সন্ত্রাসীদের আগুন সন্ত্রাস মঞ্চস্থ করার যৌথ মহড়া। এই চক্রান্তগুলো শুরু হয়েছে ঢাকা জেলা আদালত থেকে দুই জঙ্গি পলায়নের নাটক থেকে। গত আন্দোলনের মতোই ঘটনা নিজেরা ঘটিয়ে বিএনপি নেতা-কর্মীদের উপর দায় চাপানোর অপচেষ্টা করা হচ্ছে। কিন্তু জনগণের কাছে অতীতের মতো এসব ঘটনাও বিশ্বাসযোগ্য হবে না। নাটক-ফাটক করে গণতান্ত্রিক আন্দোলন রোধ করা যাবে না। কর্তৃত্ববাদী সরকার যারা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না, তারা টিকে থাকার স্বার্থে মনুষ্যত্বহীন যেকোনো অপকর্ম করতে দ্বিধা করবে না।
তিনি বলেন, বিএনপির গণসমাবেশকে নানাভাবে বিতর্কিত ও প্রতিহত করার জন্যই দিন-রাত কাজ করে যাচ্ছে সরকারের বিভিন্ন এজেন্সি এবং আওয়ামী লীগের দুর্বৃত্তরা। পাইকারি হারে গ্রেপ্তার করার পরেও ফ্যাসিস্ট সরকার নিশ্চিত হতে পারছে না জনগণের বাঁধভাঙা ঢল আটকাতে পারবে কি না।
রিজভী বলেন, আওয়ামী কর্তৃত্ববাদী সরকারের উত্থান এই মুহূর্তেই প্রতিহত করতে হবে। মানুষের মানবাধিকার রক্ষার স্বার্থেই অবৈধ আওয়ামী দুঃশাসনের অবসান ঘটাতে হবে। অবাধ-স্বচ্ছ নির্বাচন, প্রকৃত গণতন্ত্র, শান্তি ও স্থিতিশীলতা এবং সর্বোপরি খালেদা জিয়ার মুক্তি তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনার দাবিতে গণতন্ত্রকামী মানুষের যে আন্দোলন তা দমানো যাবে না।
এসএন