সরকার পতনের আন্দোলনে কৌশলী বিএনপি
নির্দলীয় সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচন, নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠন এবং খালেদা জিয়ার পরিপূর্ণ মুক্তির দাবিতে যুগপৎ আন্দোলনে যেতে বিএনপি ধীরে চলো নীতি নিয়েছে। দলটি এখন ইস্যুভিত্তিক কর্মসূচি নিয়ে মাঠ চাঙা রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। দলের কেন্দ্রীয় নেতারা চাচ্ছেন মাঠ পর্যায়ের নেতা-কর্মীদের চাঙা করে চূড়ান্ত আন্দোলনের দিকে অগ্রসর হতে।
একই সঙ্গে বিএনপি চাচ্ছে সমমনা রাজনৈতিক দলগুলোকে সঙ্গে নিয়ে রাজপথে থাকতে। এ লক্ষ্যে জোটভুক্ত দল এবং জোটের বাইরেও অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ করে যাচ্ছেন বিএনপির শীর্ষ নেতারা।
বিএনপির একাধিক নেতার সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।
বিএনপি সূত্র জানায়, সরকারের প্রতিটি অনিয়ম ও দুর্নীতির চিত্র তুলে ধরে আপাতত ইস্যুভিত্তিক কর্মসূচির মাধ্যমে নিজেদের মাঠে উপস্থিতির বিষয়টি জানান দিতে চাচ্ছে দলটি। একই সঙ্গে প্রত্যেকটি বিষয় আলাদা আলাদাভাবে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে দেশবাসীর কাছে তুলে ধরার চেষ্টা অব্যাহত থাকবে। এমনটাই সিদ্ধান্ত হয়েছে সম্প্রতি অনুষ্ঠিত দলটির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম স্থায়ী কমিটির বৈঠকে।
জানতে চাইলে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, দলের কর্মসূচি চলমান। ধারাবাহিকভাবে নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের দাবিতে চূড়ান্ত আন্দোলনের পরিকল্পনা করছে মাঠের বিরোধী দল বিএনপি। তবে চূড়ান্ত আন্দোলনের আগে ইস্যুভিত্তিক কর্মসূচি দিয়ে রাজপথে সক্রিয় হতে চায় দলটি। মূলত নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের যৌক্তিকতা তুলে ধরতেই এ আয়োজন।
তিনি বলেন, আপাতত যুগপৎ আন্দোলনকে গুরুত্ব দিচ্ছে দলটির হাইকমান্ড। বিভিন্ন ইস্যুতে যার যার অবস্থান থেকে রাজপথে আন্দোলনের একপর্যায়ে বৃহত্তর ঐক্য গড়ে উঠবে বলে আমরা আশাবাদী।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচন সবার দাবি। এ ইস্যুতে আমরা বৃহত্তর ঐক্য গড়তে চাই। ইতোমধ্যে সরকার বিরোধী অনেক রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। শিগগিরই সরকারবিরোধী সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বৈঠক শেষ করব। আমরা মনে করি, সবাইকে দেশ ও গণতন্ত্রের স্বার্থে একটা জায়গায় নিয়ে আসতে সক্ষম হব।
তিনি বলেন, আপনি নিশ্চয়ই অবগত আছেন যে বিএনপি নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে বিগত কয়েক মাস ধরেই কর্মসূচি অব্যাহত রেখেছে। এরই ধারাবাহিকতায় এখনো কর্মসূচি পালন করে যাচ্ছে। সরকারের প্রতিটি অনিয়ম ও দুর্নীতির চিত্র জনগণের সামনে তুলে ধরতে কর্মসূচির আয়োজন করা হবে।
আন্দোলনের ধরন কেমন হবে- এমন প্রশ্নে বিএনপি নেতারা জানান, আপাতত জ্বালানি তেল, গ্যাস, বিদ্যুৎসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদে সারা দেশে বিক্ষোভ-মানববন্ধন-সমাবেশ অব্যাহত রাখা হবে।
ইস্যুভিত্তিক আন্দোলনের কর্মসূচির অংশ হিসেবে গত কয়েক দিন ধরেই দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি ও মুদ্রাস্ফীতি এবং জ্বালানি তেলের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির বিষয়ে সভা-সেমিনার ও সমাবেশ করেছে বিএনপি। এরই ধারবাহিকতায় জ্বালানি তেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধগতির প্রতিবাদে আগামী ২২ আগস্ট থেকে মহানগর, ওয়ার্ড, জেলা, উপজেলা পর্যায়ে নিয়মিত সভা, সমাবেশ, বিক্ষোভ মিছিল বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠনগুলো।
এনএইচবি/এসজি/