‘মানবাধিকার লঙ্ঘন সরকারের রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত’
মানবাধিকার লঙ্ঘনের সঙ্গে সম্পৃক্ত সবাইকে জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ তদন্ত নিশ্চিত করে দোষীদের বিচারের মুখামুখি করার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেন, একইসঙ্গে এই প্রক্রিয়া শুরু করে নিরপেক্ষ, স্বচ্ছ ও গ্রহণযোগ্য তদন্তের স্বার্থে সরকারের পদত্যাগের আহ্বান জানাচ্ছে বিএনপি। কারণ, বিএনপি বিশ্বাস করে সমস্ত মানবাধিকার লঙ্ঘনের সঙ্গে সরকারের রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত রয়েছে।'
বুধবার (১৭ আগস্ট) রাতে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে বিএনপি মহাসচিব বলেন, 'জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাই কমিশনার মিশেল ব্যাচলেট বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি, বিশেষ করে গুম, নির্যাতন, বিচারবহির্ভূত হত্যা, বাক স্বাধীনতা, সভা-সমাবেশ, রাজনৈতিক নিপীড়ন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনসহ নারীর প্রতি সহিংসতা এবং সংখ্যালঘুদের অধিকার রক্ষার বিষয়ে গণমাধ্যমের নিকট লিখিত বক্তব্য দিয়েছেন। তার বক্তব্য বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সুশীল সমাজ, বিরোধী মত, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন এবং বিভিন্ন রাষ্ট্রের প্রকাশিত প্রতিবেদনেরই প্রতিচ্ছবি বলে আমরা মনে করি।'
তিনি বলেন,' মানবাধিকার হাইকমিশনার এর বক্তব্যে দ্ব্যর্থহীনভাবে উঠে এসেছে, গুম, নির্যাতন ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড বিষয়ে দীর্ঘদিন ধরে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক বিভিন্ন মেকানিজম এবং তাদের নির্যাতনবিরোধী কমিটি যে উদ্বেগ তুলে ধরেছে তার অনেকটাই র্যাবের ভূমিকা নিয়ে এবং এ ধরনের মানবাধিকার লঙ্ঘনের জবাবদিহি না থাকা বিষয়ে।'
মির্জা ফখরুল বলেন, 'তিনি একটি নিরপেক্ষ, স্বাধীন ও স্বচ্ছ তদন্তের উপর জোর দিয়েছেন। একইসঙ্গে তিনি নিরাপত্তা বিভাগ সংস্কারের উপরও জোর দিয়েছেন। হাইকমিশনার স্পষ্টভাবে বলেছেন যে, স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি গুম, যথাযথ আইনি ব্যবস্থা এবং বিচারিক রক্ষাকবচ না থাকার অ্যালার্মিং অভিযোগ আছে। বিশেষ করে দীর্ঘদিন ঘটনাগুলোর তদন্তে অগ্রগতি না হওয়া এবং ন্যায়বিচারের অন্যান্য প্রতিবন্ধকতার বিষয়টি তিনি তুলে ধরেছেন।'
তিনি বলেন, 'গুম ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের মতো গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার ও সুশীল সমাজের সঙ্গে এ সংক্রান্ত বিষয়ে তদন্তে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করবে।'
বিএনপি মহাসচিব বলেন,'গুম সংক্রান্ত জাতিসংঘের ওয়ার্কিং গ্রুপকে এই বিষয়ে আমন্ত্রণ জানালে তা হবে এটা সমাধানের জন্য সরকারের সদিচ্ছার বহিঃপ্রকাশ। এ ছাড়াও, তিনি এখন থেকে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে পাঠানোর জন্য আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য বাছাইয়ে তাদের মানবাধিকার লঙ্ঘনে সম্পৃক্ততার বিষয়টি নিবিড়ভাবে পরীক্ষা নিশ্চিত করার তাগিদ দিয়েছেন। তিনি ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের সংশোধনের উপরও জোর দিয়েছেন।'
এসএন