সময় এলে বিদ্যুতের দুর্নীতির বিচার হবে: মির্জা ফখরুল
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, 'বিদ্যুৎ খাতে বিশেষ দায়মুক্তি আইন তৈরি করে দুর্নীতি ও লুটপাটের জন্য সংশ্লিষ্ট আমলা-প্রকৌশলীদের দায়মুক্তি দেওয়া হয়েছে। তবে যদি সময় আসে তাহলে আমরা (বিএনপি) এর বিচার করব।'
শনিবার (১৩ আগস্ট) খালেদা জিয়ার গুলশানের রাজনৈতিক কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল এসব কথা বলেন।
বিএনপি নির্বাচিত হয়ে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় গেলে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের উন্নয়নে যেসব পদক্ষেপ গ্রহণ করবে, তা তুলে ধরেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল।
১. বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি (বিশেষ বিধান) আইনসহ এ সংক্রান্ত সব কালাকানুন বাতিল করা হবে।
২. রেন্টাল/কুইক রেন্টাল কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি নবায়ন বন্ধ/বাতিল করা হবে।
৩. স্বচ্ছ প্রতিযোগিতামূলক আন্তর্জাতিক টেন্ডারের মাধ্যমে বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ ও অন্যান্য কাজ সম্পাদন করা হবে।
৪. চাহিদা অনুযায়ী পাওয়ার প্ল্যান্ট স্থাপনের জন্য মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ করা হবে।
৫. উৎপাদন ও চাহিদার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ প্রয়োজনীয় বিদ্যুৎ সঞ্চালন ও বিতরণ লাইন অতি দ্রুত স্থাপন করা হবে।
৬. বাপেক্স ও অন্যান্য সরকারি সংস্থার মাধ্যমে দেশীয় খনিজ ও গ্যাস উত্তোলনের জন্য যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। একই সাথে দেশীয় প্রকৌশলী ও সংশ্লিষ্ট সংস্থাসমূহকে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারে দক্ষ করে তুলতে উপযুক্ত উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।
৭. বঙ্গোপসাগরে সম্ভাবনাময় গ্যাস/পেট্রোলিয়াম ও অন্যান্য খনিজ পদার্থ উত্তোলনে দ্রুত কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
৮. বিদ্যুৎ ও জ্বালানিখাতের সব দুর্নীতি-অনিয়মের সঙ্গে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে।
৯. দেশের বিদ্যুৎ ও জ্বালানিখাতকে টেকসই ও নিরাপদ করতে জীবাশ্ম জ্বালানি নির্ভরতা কমিয়ে ক্রমান্বয়ে মোট উৎপাদনের ৫০ শতাংশ নবায়নযোগ্য শক্তিনির্ভর জ্বালানি নীতি গ্রহণ করা হবে। বিশেষ জোর দেওয়া হবে জল-বিদ্যুৎ উৎপাদনে।
১০. Base load power plant স্থাপনের মাধ্যমে স্বল্প ব্যয়ে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ উৎপাদন নিশ্চিত করা হবে।
১১. বৃহৎ বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রগুলোকে প্রয়োজনীয় মেরামত ও overhauling এর মাধ্যমে উৎপাদন উপযোগী করে গড়ে তোলা হবে।
১২. দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া কর্তৃক বিএনপির ভিশন- ২০৩০-এ বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সেক্টর উন্নয়নে ঘোষিত পদক্ষেপসমূহ বাস্তবায়ন করা হবে।
তিনি বলেন, 'জনগণের উচিত এখনি সোচ্চার হওয়া, বর্তমান কর্তৃত্ববাদী জবাবদিহিহীন সরকারের গুম-খুন অমানুষিক অত্যাচার অনাচার নিশিরাতের ভোট ডাকাতি ও রাষ্ট্রীয় কোষাগার লোপাট সর্বগ্রাসি দুর্নীতি এবং সাগর চুরি ও হরিলুটের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো।’
মির্জা ফখরুল বলেন, 'বিদ্যুৎ খাতের এই বিপর্যয় রিজার্ভের সংকট সৃষ্টির মাধ্যমে অর্থনৈতিক নৈরাজ্য ও দ্রব্যমূলের ঊর্ধ্বগতিতে জনগণের বর্তমান অবৈধ ফ্যাসিস্ট সরকারকে অনতিবিলম্বে পদত্যাগের দাবি জানাচ্ছি। তা না হলে দুর্বার গণআন্দোলনের মাধ্যমে সরকারকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করবে জনগণ।'
মির্জা ফখরুল বলেন, দেশের মানুষ প্রতিনিয়ত হিমশিম খাচ্ছে, ভোগান্তির শিকার হচ্ছে, জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে, সেই সময় পররাষ্ট্রমন্ত্রী বেহেস্তে যাওয়ার কথা বলেছেন। উনার পরিহাস করার কোনো অধিকার নেই। এখন দেশে প্রচুর লুটপাট হচ্ছে, সেই লুটপাটের জন্য জনগণের সঙ্গে তারা পরিহাস-তামাশা শুরু করেছে।
এসএন