রাজপথ দখলের মধ্য দিয়ে সরকারকে বিদায় করা হবে: মির্জা ফখরুল
আগামী ২২ আগস্ট থেকে সারা দেশের প্রতিটি থানা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে দলের নেতা-কর্মীদেরকে সরকার বিরোধী আন্দোলনে ঐক্যবদ্ধ করার জন্য জনগণের সঙ্গে ছড়িয়ে পড়ার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
মির্জা ফখরুল বলেন, প্রথমে উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়ন ও গ্রাম পর্যায়ে ছড়িয়ে পড়ব। পরবর্তীতে এরই অংশ হিসেবে জেলা এবং মহানগরগুলোতে বিক্ষোভ সমাবেশ করব। জনতার ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনে এই অনির্বাচিত অবৈধ সরকারকে পতনের জন্য বাধ্য করব। সব ব্যর্থতার দায় নিয়ে এই সরকারকে অবিলম্বে পদত্যাগের দাবি জানান মির্জা ফখরুল।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনা সরকারকে বলতে চাই, অবিলম্বে পদত্যাগ করুন। আপনাদেরকে এই মুহূর্তে পদত্যাগ করে নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে। সংসদ ভেঙে দিতে হবে। নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করতে হবে। নতুন নির্বাচন দিয়ে সংসদ গঠন করতে হবে। সরকার গঠন করতে হবে।
দলের নেতা-কর্মীদের রাজপথ দখলের আহ্বান জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমাদেরকে রাজপথ দখল করতে হবে। রাজপথ দখলের মধ্য দিয়ে এই সরকারকে বিদায় করে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করব।
বৃহস্পতিবার (১১ আগস্ট) রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
জ্বালানি তেলের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি, বিদ্যুতের ভয়াবহ লোডশেডিং এবং সকল পণ্যের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপি এ প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করে। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আবদুস সালাম সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, তরুণ সমাজই দেশকে স্বাধীন করেছে, আজকে আবারও এই তরুণ সমাজকে জেগে উঠতে হবে। তরুণদের নতুন করে দেশ স্বাধীন করতে হবে। সেই স্বাধীনতা হবে আমাদের গণতন্ত্রের। তারেক রহমানের নেতৃত্বে আমরা নতুন বাংলাদেশ নির্মাণ করব।
তিনি বলেন, সংগ্রাম শুরু হয়েছে, লড়াই শুরু হয়েছে। এই লড়াই আমাদের বেঁচে থাকার লড়াই। এই লড়াই বিএনপির নয়, তারেক রহমানের নয়, দেশের ১৮ কোটি মানুষের বাঁচা মরার লড়াই। আমাদের লড়াইয়ে শরিক হতে হবে, আমাদের ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে। এই লড়াইয়ের মধ্য দিয়ে আমরা ফ্যাসিষ্ট, দানবীয়, মাফিয়া সরকারকে পরাজয়ের মাধ্যমে সত্যিকার অর্থে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে পারব।
সমাবেশে বক্তব্য চলাকালে আকাশে ড্রোন উড়তে দেখে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আপনারা অনেকে ড্রোনের দিকে তাকিয়ে ছিলেন। কিন্তু কয়েকদিন আগে একটি খবর আমার চোখে পড়েছে, সরকার বিশেষ করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ইরান থেকে ২১টি ড্রোন আমদানি করেছে। তারা বলেছেন, এই ড্রোন নিয়েছে ভাসানচরে রাখা রোহিঙ্গাদের মনিটরিং করবেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নিজে গিয়েছিলেন, তিনি দেখেছেন ড্রোন দিয়ে কীভাবে কী করে। আসলে তারা এগুলো নিয়ে এসেছে দেশের মানুষদের মনিটরিং করার জন্য, নিয়ে এসেছে যারা গণতন্ত্র চায় তাদের মনিটরিং করার জন্য।
মির্জা ফখরুল বলেন, ড্রোনের নাম শুনলেই আমরা ভয় পাই। ভয় পাই কারণ আমরা দেখেছি, ড্রোন দিয়ে কীভাবে এক দেশ থেকে অন্য দেশে গিয়ে বিভিন্ন নেতাদের হত্যা করা হয়। আমরা দেখেছি এই ড্রোন দিয়ে কীভাবে যারা গণতন্ত্র চায়, গণতন্ত্রের জন্য লড়াই সংগ্রাম করছে তাদেরকে হত্যা করা হয়।
তিনি আরও বলেন, আগামীকাল উপজেলা পর্যায়ে সমাবেশ আছে। আগামী ২২ আগস্ট থেকে আমরা সারাদেশে ছড়িয়ে পড়ব। প্রত্যেকটি উপজেলায় শান্তিপূর্ণ সমাবেশের মধ্য দিয়ে জনগণ গঠনের ঐক্যবদ্ধ লড়াইয়ের মাধ্যমে এই সরকারকে পরাজিত করতে বাধ্য করব।
সমাবেশে সঞ্চালনায় ছিলেন ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সদস্য সচিব আমিনুল হক ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনু। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বিএনপির সিনিয়র নেতারা।
এমএইচ/এসজি/