সরকার হটাতে কঠোর কর্মসূচি চান গয়েশ্বর
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে উদ্দেশ্য করে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘আমি এখনো মনে করি রাজপথে নামার মতো শক্তি সামর্থ্য আছে। আমার যেহেতু আছে তাহলে সবার শক্তি সামর্থ্য আছে। আমরা কেউ কাপুরুষ নই। সেই জন্য বলছি আমাদের যে ধরণের গণতান্ত্রিক প্রোগ্রাম, গণতান্ত্রিক কর্মসূচির বাইরে গণতন্ত্র ও সংবিধান সম্মতভাবে অনেক কর্মসূচি আছে, সেই কর্মসূচি আমরা রাজপথে আনলে সরকারের ভিত কেঁপে উঠবে। তাই বলছিলাম, সে কারণেই আমার মনে হয় দলের মহাসচিব আমার বক্তব্যের উপর অসন্তুষ্ট নয়। আমার মনে হয় আমি যা বলেছি এই কথায় সমাবেশের সবাই একমত, ঠিক কি না? তাই বলছি আপনারা জাতির কাছে আন্দোলন কর্মসূচি উপস্থাপন করেন।’
সোমবার (৮ আগস্ট) নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে যুবদলের বিক্ষোভ সমাবেশে এসব কথা বলেন গয়েশ্বর।
তিনি বলেন, ‘আমরা প্রতিদিন সমাবেশ করব, বক্তব্য দিব, আর শেখ হাসিনাকে ক্ষমতা থেকে নামাতে পারব সেটার কোনো কারণ নাই। আওয়ামী লীগ হরতালে রাস্তায় পেট্রল বোমা দিয়ে বাস পুড়িয়ে মানুষ মেরেছে। শুধুমাত্র সভা সমাবেশে বক্তব্য দিয়ে আওয়ামী লীগের পতন ঘটানো সম্ভব হবে না। জনগণ শেখ হাসিনার ক্ষমতা দেখতে চায় না। জনগণ তার বিরুদ্ধে আন্দোলন করতে চায়, আন্দোলনে রাস্তায় নামতে চায়।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘ভোলায় হরতাল ঘোষণা করা হয়েছিল। সেখানে সর্বস্তরের মানুষ হরতালকে সমর্থন জানিয়েছিল। নেতা-কর্মীরা অনেকে পালিয়ে ছিল কিন্তু হরতাল থেমে থাকে নাই। আমি সরকারের পক্ষে বলছি না। আমি বলছি, প্রতিদিন সমাবেশে বসে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বক্তব্য শুনে, বলে শেখ হাসিনাকে ক্ষমতা থেকে নামানো যাবে না। সম্প্রতি নুরে আলমের জানাজার নামাজে হাজার হাজার নেতা-কর্মীরা জড়ো হয়েছিল। কিন্তু জানাজা শেষে নেতা-কর্মীরা কেউ মিছিল করে কোনো দিকে রওনা দেয় নাই। আজ যারা বিক্ষোভ সমাবেশে এসেছেন তারাও যদি সমাবেশ শুরুর এক ঘণ্টা আগে যেদিকে খুশি সেদিকে মিছিল সহকারে রওনা দিত তাহলে মিছিল আটকিয়ে রেখে পুলিশের বাধা দেওয়ার কোনো ক্ষমতা ছিল না।’
দলের নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্য করে গয়েশ্বর বলেন, ‘আমাদেরকে আন্দোলন সংগ্রামে একটি কার্যকর ভূমিকা নিতে হবে। কারণ জনগণ বিএনপির কাছে সেই প্রত্যাশা করে। বক্তব্যের মধ্যে দিয়ে শেখ হাসিনাকে ক্ষমতা থেকে নামানোর আস্ফালন বৃথা, তাকে নামাতে ‘যেমন কুকুর তেমন মুগুর’ কর্মসূচি নিয়ে যদি নামতে চান এবং কর্মীরা যদি সেখানে সাড়া দেয় তাহলে সরকার ভেসে যাবে। তখন সম্ভব হবে নির্দলীয় সরকারের অধীনে একটি নির্বাচন, গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা, খালেদা জিয়ার মুক্তি। কর্মসূচিতে আমরা যদি হার্ড লাইনে না যাই এবং সরকারকেও আমরা আমাদের শক্তি প্রদর্শন না করি তাহলে সরকার সরকারের জায়গায় থাকবে আর আমরা জনসভা করব, অগণিত মামলায় জর্জরিত হব। সরকারের পতন ঘটাতে পারব না।’
যুবদলের সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকুর সভাপতিত্বে বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, কেন্দ্রীয় নেতা আমান উল্লাহ আমান, আবদুস সালাম, খায়রুল কবির খোকন, ফজলুল হক মিলন, রফিকুল আলম মজনু, আমিনুল হক, সাইফুল আলম নিরব প্রমুখ।
এমএইচ/এসজি/