‘সরকার দেশকে ডেঞ্জার জোনে পরিণত করেছে’
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, 'গত শুক্রবার ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকারের গণবিরোধী সিদ্ধান্তে জ্বালানি তেলের মূল্য প্রায় ৫০ শতাংশ বৃদ্ধিতে জনজীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। ফলে কৃষি, শিল্পের উৎপাদন ব্যয় বৃদ্ধিসহ নজীরবিহীন মূল্যস্ফীতি অতীতের সব রেকর্ড ছাড়াতে শুরু করেছে। যখন বিশ্বব্যাপী জ্বালানি তেলের দাম কমেছে তখন বাংলাদেশে এটির মূল্য বৃদ্ধি কর্তৃত্ববাদী নব্য বাকশালী সরকারের দম্ভের বিকৃত প্রকাশ।'
সোমবার (৮ আগস্ট) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ কথা বলেন মির্জা ফখরুল।
তিনি বলেন, ‘জ্বালানি তেলের মূল্য কমানোর যৌক্তিক দাবি নিয়ে জনগণ যখন রাস্তায় নেমে আসতে শুরু করেছে, তখন সেটিকে দমন করার জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে ব্যক্তিগত লাঠিয়াল বাহিনী হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।'
জ্বালানি তেলের লাগামহীন ও অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধি ও লুটপাটের প্রতিবাদে গতকাল সন্ধ্যায় রাজধানীর শাহবাগে বামপন্থী ছাত্র সংগঠন ‘প্রগতিশীল ছাত্র সংগঠন সমূহের’ ব্যানারে ডাকা বিক্ষোভ সমাবেশে পুলিশ বর্বরোচিত হামলা চালায়। এই পৈশাচিক হামলায় অসংখ্য নেতা-কর্মীকে আহত করার ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, 'আওয়ামী লীগের গণভিত্তি ধ্বংস হয়ে যাওয়ায় তারা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে দিয়ে জনগণের ওপর হামলা চালিয়ে প্রতিনিয়ত রক্ত ঝরাচ্ছে। নিজেদের লুটপাট, হরিলুট ও দুর্নীতিসহ সব অপকর্ম ঢাকার জন্যই গণতন্ত্রকে সমাধিস্থ করে বাংলাদেশকে পুলিশী রাষ্ট্রে পরিণত করেছে।'
তিনি বলেন, “ভোলায় বিএনপির শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ কর্মসূচিতে গুলি চালিয়ে ছাত্রদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের দুজন নেতার প্রাণ কেড়ে নেওয়ার পর জনদৃষ্টিকে বিভ্রান্ত করতেই জ্বালানি তেলের অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধি করে জনরোষ থেকে বাঁচার জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে জনগণের বিরুদ্ধে লেলিয়ে দেওয়া হয়েছে। এই সরকার আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও নিজেদের পেটোয়া ছাত্রলী-যুবলীগ দিয়ে গোটা দেশকে ‘ডেঞ্জার জোনে’ পরিণত করেছে।”
মির্জা ফখরুল বলেন, 'বিরুদ্ধে এই জুলুমের আরেকটি নগ্ন বহিঃপ্রকাশ গতকাল রবিবার শাহবাগে বাম ছাত্র সংগঠনের ডাকা শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে পুলিশের অমানবিক হামলা ও অসংখ্য ছাত্রকে আহত করা। মূলত গণআন্দোলনের ভয়ে ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে পড়ায় অবৈধ সরকার কর্তৃক এখন জুলুমের বৈচিত্র্যময় বিন্যাস দেখা যাচ্ছে। এ ঘটনায় আওয়ামী লীগের ভবিষ্যত পরিকল্পনা নিয়ে দেশবাসী শঙ্কিত। এরা যে আগামী নির্বাচন, ভোট, একতরফা করার জন্য জনগণের ওপর পূর্ণমাত্রায় আগ্রাসন চালাবে এই পুলিশি হামলা তারই নমুনা ফুটে উঠেছে।'
তিনি বলেন, 'দ্ব্যর্থহীন কণ্ঠে বলতে চাই- দুঃশাসনের পরিকাঠামো নির্মাণ করে কেউ বেশি দিন মসনদে বসে থাকতে পারেনি। এদেশের জনগণ কর্তৃত্ববাদী দুঃশাসনের অবসান ঘটিয়ে বাংলাদেশকে গণতন্ত্রের একটা নিরাপদ ও শান্তিপূর্ণ স্থান হিসেবে গড়ে তুলতে বদ্ধপরিকর।'
এসএন