হু আর ইউ? সিইসি কে গয়েশ্বর
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর সদস্য চন্দ্র রায় বলেছেন, ‘নিজে নিজে প্রধানমন্ত্রী মিডনাইট এর প্রধানমন্ত্রী বলেছেন-তার বাড়ি ঘেরাও করতে গেলে তিনি ছাদে আপ্যায়ন করাবেন, আপনার বাড়ি যদি কখনো কেউ ঘেরাও করতে যায় চায়ের জন্য যতটুকু পানি প্রয়োজন ততটুকু পানি মজুত আছে তো? নাই। চায়ের দাওয়াতের জন্য নয় যদি এদেশের জনগণ কখনো গণভবন ঘেরাও করতে যায় তাহলে আপনার জিনিসপত্র গুছিয়ে গাড়িতে তুলে দিতে যাবে। আপনাকে সিঅফ করতে যেতে পারে অর্থাৎ আপনাকে বিদায় জানাতে যেতে পারে। হয়তো একটা সময় আপনি স্বইচ্ছা না গেলে এমন ঘটনা ঘটতে পারে এটা মনের অজান্তেই হয়তো বলেছেন ঘেরাও করতে গেলে চা খাওয়াতে পারে।’
তিনি বলেন, ‘গতকাল ওবায়দুল কাদের বলেছেন খালেদা জিয়াকে দোষ করে ফেলে দেওয়া এটা একান্তই হিউমার মশকরা-উত্তর অর্থাৎ হাসিনা ঠাট্টা করতেও জানে। ঠাট্টা খালেদা জিয়ার সঙ্গে করেন কিন্তু জাতির সঙ্গে যেটা মশকরা শুরু করেছেন ১৪ বছর ধরে এর হিসেব একদিন না একদিন জনগণের কাছে দিতেই হবে।’
বুধবার (২৭ জুলাই) জাতীয় প্রেস ক্লাবের মিলনায়তনে এক স্মরণসভায় এসব কথা বলেন তিনি। স্বেচ্ছাসেবক দলের প্রয়াত সভাপতি শফিউল বারী বাবুর দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এ স্মরণ সভার আয়োজন করেছে স্বেচ্ছাসেবক দল। এ সভায় সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি মুস্তাফিজুর রহমান।
নির্বাচন কমিশন ও প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) তীব্র সমালোচনা করে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, ‘নির্বাচন কমিশন এটা ঠাট্টা মশকরা করার জায়গা। সকালে এক কথা বিকালে আরেক কথা বলে সাবেক নির্বাচন কমিশনার নূরুল হুদাকে ইতিমধ্যে হার মানিয়ে দিয়েছেন। যার কাজ সে করবে নির্বাচন কমিশন এত কথা বলেন কেন?’
তিনি বলেন, ‘কে নির্বাচনে আসবে কে আসবে না তাতে কিছু আসে যায় না। এত দায়িত্ব আপনাদের (নির্বাচন কমিশন) দেয় নাই । হু আর ইউ? তুমি কে এই কথা বলার। রাজনৈতিক সমস্যার মীমাংসা হবে রাজনৈতিকভাবে, সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন-সরকার চিন্তা করবে কীভাবে তারা জনগণের সঙ্গে মীমাংসা করবে। কীভাবে জনগণের পথ ফেরত দিবে সেই বিষয়। এই কাজ ঠুট জগন্নাথ নির্বাচন কমিশনের নয়। আমি আশা করব নো টক। শেখ হাসিনা যেদিন থাকবে না তখন কি আপনাদেরকেও তাড়াতে হবে? কোন দিক দিয়ে পালাবেন, যতদিন দায়িত্বে আছেন চুপচাপ বসে থাকেন বেতন ভাতা খান। নির্বাচন রাজনীতি ও রাজনৈতিক দল, গণতন্ত্র নিয়ে ছবক দেওয়ার অধিকার সাংবিধানিক এই পদে বসে আপনাকে দিতে কেউ দেয় নাই। আশা করি বাংলা কথাটা বুঝতে আপনার কষ্ট হবে না। আমরা যা করব রাজপথে ফয়সালা করব, যা বলেছি হাসিনাকে ক্ষমতায় রেখে নির্বাচনে যাব না। হাসিনাকে রেখে নয়, ক্ষমতা থেকে ফেলেই নির্বাচন করব।’
সরকারের নানা অনিয়ম ও দুর্নীতি চিত্র তুলে ধরে স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, ‘এখন বিদ্যুৎ যায় না মাঝে মাঝে আসে। বিদ্যুৎ বলে আমি জীবিত আছি এখনো মরি নাই। এই সরকারের উন্নতি শেষ পর্যন্ত ঘরে ঘরে মোমবাতি। এই সরকার ঘরে ঘরে জনগণের হাতে হারিকেন ধরিয়ে দিয়েছে। বিদ্যুৎ নাই তাহলে বিদ্যুৎ উৎপাদনের নামে টাকা গেল কোথায়? বিদ্যুতের জন্য যে টাকা ব্যাংক থেকে ঋণ করা হয়েছে লুট করা হয়েছে এর দায়ভার তো জনগণকে পরিশোধ করতে হবে। প্রশ্ন হচ্ছে বিদ্যুৎপাব না তাহলে আমরা সেই দিন পরিশোধ করব কেন? যে সকল কোম্পানিকে কুইক রেন্টাল বেসিসে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য নিয়োগ দিয়েছেন তাদেরকে ব্যাংক থেকে কত টাকা ঋণ দিয়েছেন, তাদের কত বিদ্যুৎ উৎপাদন করার কথা ছিল কতটুকু তারা করতে পেরেছেন কতটুকু সরকারের কাছে হস্তান্তর করেছেন তার শ্বেতপত্র প্রকাশ করতে হবে। জনগণের সেই হিসাব চাওয়ার অধিকার আছে।’
'প্রধানমন্ত্রী কোন কোন প্রজেক্টে আপনি কত টাকা ব্যয় করেছেন তার সামগ্রিক উৎপাদন ক্যাপাসিটি কত, আপনি পেয়েছেন কত এখন ঋণ আছে কত, এটা জাতির সামনে সুস্পষ্ট ভাবে বলেন। যদি না বলেন তাহলে ধরে নিতে হবে সকল প্রজেক্ট এর এই দুর্নীতি ও লাভের অংশ আপনার আঁচলের গিয়াছে, আপনার আত্মীয়স্বজন নিয়েছে।’
অর্থমন্ত্রীকে আদম বেপারী আখ্যা দিয়ে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘উনি বলেন আইএমএফ এর কাছে টাকা চাওয়া হয়নি। পত্রিকায় দেখলাম ভেতরে ভেতরে আবার তাদের কাছে টাকা চাওয়া হয়েছে। আর আই এম এফ বলেছে আপনারা কোন খাতে কত টাকা ব্যয় করেছেন তার একটা হিসাব দেন।’
নির্বাচন ইস্যুতে বিএনপির অবস্থান হচ্ছে জনগণের ভোট জনগণ দিবে যাকে খুশি তাকে দিবে দিনের ভোট দিনে দিবে। ভোটকেন্দ্রে গিয়ে নিরাপদে ভোট দিব। একটা ফয়সালা করতে হবে রাজপথে। এর জন্য আমাদেরকে সেভাবেই এগোতে হবে।
এমএইচ/এমএমএ/