সরকার অস্থির হয়ে পড়েছে: মির্জা ফখরুল
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে সরকার অস্থির হয়ে পড়েছে। সরকার সাতদিনের মধ্যে যে আইনটি তৈরি করেছে সেটা বস্তুত নির্বাচন কমিশন গঠন আইন নয়, সার্চ কমিটি গঠন আইন।
শুক্রবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) বিকালে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে জাতীয়তাবাদী তাঁতী দলের ৪২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
নির্বাচন কমিশন গঠনে গঠিত অনুসন্ধান (সার্চ) কমিটির সমালোচনায় মির্জা ফখরুল বলেন, ‘যাদের নিয়ে সার্চ কমিটি গঠন করা হয়েছে, যারা সার্চ করে নিয়ে আসবেন তারা নিজেরাই নিরপেক্ষ নন। বরং এটাকে জায়েজ করার জন্য সুশীল সমাজের ব্যক্তিদের ডাকা হয়েছে। সরকারকে তাদের মন মতো নির্বাচন কমিশন গঠন করতেই হবে। আর সেই কমিশনের অধীনে তাদের নির্বাচন করতে হবে, কারণ নির্বাচন কমিশন যদি ঠিক করতে না পারে, তাহলে তাদের যে লক্ষ্য আবার ক্ষমতায় আসা, তা পারবে না। অন্যদিকে তারা সমস্ত রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে সব সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধ্বংস করে দিচ্ছে। নির্বাচন কমিশন, বিচার বিভাগ, আমলাতন্ত্রকে ধ্বংস করে দিয়েছে, গণমাধ্যমকে কুক্ষিগত করেছে।’
তিনি বলেন, সার্চ কমিটির প্রধান যিনি, তিনি নিজেই দলীয় মনোনয়ন চেয়েছিলেন। তার বাবা আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য ছিলেন। তার ছোট ভাই প্রধানমন্ত্রীর একান্ত সচিব ছিলেন। তাহলে নিরপেক্ষতা থাকলো কোথায়?
দুদকের উপ-সহকারী পরিচালক শরীফ উদ্দিনকে চাকরীচ্যুত করা বেআইনি মন্তব্য করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীদের দুর্নীতির জন্য বাংলাদেশ আজ শ্মশানে পরিণত হয়েছে। শিক্ষামন্ত্রীর দুর্নীতি বের হলো, বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রীর দুর্নীতির খবর আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে প্রকাশ হলো, আর এদিকে বেআইনিভাবে দুদকের সহকারী পরিচালক শরিফ উদ্দিনকে চাকুরিচ্যুত করা হয়েছে।
দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির জন্য সরকারের সমালোচনা করতে গিয়ে তিনি বলেন, দেশটা আজ দুর্নীতিবাজদের, কালো বাজারিদের, মুনাফাখোরদের স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়েছে।
সম্প্রতি আইনমন্ত্রী ও সরকারের শিল্প উপদেষ্টার যে ফোনালাপ ফাঁস হয়েছে তার পুরো বিস্তরসহ অন্যান্য ফাঁস হওয়া ফোনালাপের তদন্ত দাবি করেন মির্জা ফখরুল।
বর্তমান পরিস্থিতিকে রাজনৈতিক সংকট উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এই সংকট উত্তরণের জন্য জনগণকে রাজপথে আসার আহ্বান জানান। পাশাপাশি সরকারকে পদত্যাগ করে নির্দলীয়-নিরপেক্ষ সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করে নির্বাচন কমিশন গঠনের মাধ্যমে নির্বাচন করতে হবে। যে নির্বাচনের সত্যিকার অর্থে জনগণের প্রতিনিধিরা নির্বাচিত হবেন, সরকার গঠন করবেন। তারা আগামী পাঁচ বছরের জন্য দেশ পরিচালনা করবেন। এটাই একমাত্র পথ।
তিনি বলেন, 'এখন যেহেতু সরকারের সময় ঘনিয়ে এসেছে দাবি করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, যারা জুলুম করে মানুষের উপর অত্যাচার করে, চুরি করে, লুট করে দেশের টাকা বিদেশে পাচার করে ক্ষমতায় টিকে থাকতে চায়, তারা কখনো চিরদিনের জন্য ক্ষমতায় টিকে থাকতে পারেনি, অতীতেও পারেনি এখনো পারবে না, তাদের শেষ রক্ষা হয়নি।'
আয়োজক সংগঠনের আহ্বায়ক আবুল কালাম আজাদের সভাপতিত্বে এবং সদস্য সচিব মুজিবুর রহমানের সঞ্চালনায় সভায় অন্যদের মধ্যে বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম, সাংবাদিক নেতা রাশেদুল হক প্রমুখ বক্তৃতা করেন।
এমএইচ/আরএ/