সরকার পদত্যাগ না করলে প্রতিরোধে অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠবে বাংলাদেশ: রিজভী
সরকারকে হুঁশিয়ার করে বিএনপি'র সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, 'গুম-অপহরণ-দুঃশাসন চালিয়ে যেভাবে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছেন তার পরিণতি হবে ভয়ংকর। সেদিন বেশি দূরে নয়, যেদিন গুম-খুন অপহরণের শিকার পরিবারগুলোর শোকার্তরা কাফনের কাপড় পরে স্বজনদের খোঁজে গণভবনের দিকে রওনা দেবে।'
বৃহষ্পতিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে রিজভী এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, 'দেশের প্রতিটি শোকার্ত মানুষের ধারণা প্রতিটি গুমের হুকুমের প্রধান আসামি বসে আছেন গণভবনে। গুম-খুন ও বিচারবহির্ভূত হত্যাসহ গণতন্ত্র হত্যার বিচার এদেশেই হবে। কারণ এদের জন্য মানবতা ভয়ংকর ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে।'
'একযুগের বেশি সময় ধরে অবৈধ সরকার গুম, খুন, অপহরণকে তাদের ক্ষমতা টিকিয়ে রাখার রক্ষা-কবজে পরিণত করেছে। সাম্প্রতিক সময়ে র্যাববাহিনী ও ৭ র্যাব-পুলিশ কর্মকর্তার ওপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা এবং দেশি-বিদেশি মানবাধিকার সংস্থাগুলোর চাপে পিছু হটায় গুম-খুনের আতঙ্কে থাকা পরিবারগুলোতে কিছুটা হলেও স্বস্তি নেমে এসেছিল। কিন্তু ইদানীং আবারও পুরোনো পৈশাচিক চেহারায় ফিরে এসে গুমের মতো ভয়াবহ অপরাধ শুরু করেছে সরকার।'
বিএনপির এই নেতা বলেন, শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত বাহিনী রূপে প্রতিষ্ঠিত করা হয়েছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। এদের নিয়োজিত করা হয়েছে পৃথিবীর জঘন্যতম এই অপরাধ সংঘঠনে। এর পরে রাষ্ট্রীয় আরেক বাহিনী গোয়েন্দা পুলিশ ও পুলিশকেও গুম-অপহরণ-বন্দুকযুদ্ধে নামানো হয় গোটা দেশে। এখন সিআইডিকেও গুম-অপহরণে নামানো হয়েছে। এহেন পৈশাচিকতায় তাদের সাজানো গল্প একই থাকে, প্রথমে সাদা পোশাকে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয় দিয়ে তুলে নিয়ে যাওয়া, অতঃপর কখনো অনন্তকালের জন্য অন্তর্ধান-নিঁখোজ, কখনো অস্ত্র উদ্ধারের নামে ক্রসফায়ারের হত্যা আবার কখনো রাস্তার ধারে অথবা ডোবা নালা বা নদীতে লাশ পাওয়ার রোমহর্ষক নাৎসীয় বর্বরতা।'
'ইতিমধ্যে জাতিসংঘ থেকে গুম হওয়া সম্পর্কে তথ্য জানতে চাওয়া হয়েছে। জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদের গুমবিষয়ক ওয়ার্কিং গ্রুপ পর্যালোচনা করে জরুরি পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে। দুরাচার অবৈধ সরকারকে আতঙ্ক ঘিরে ফেলেছে। স্বয়ংক্রিয় ভোটের পররাষ্ট্রমন্ত্রী, স্বরাষ্টমন্ত্রী গুম-খুন নিয়ে প্রলাপ বকছেন।'
বাংলাদেশ আন্তর্জাতিকভাবে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছে মন্তব্য করে রিজভী বলেন, নিষেধাজ্ঞার কারণে ব্যবসা-বাণিজ্য, আমদানি-রপ্তানিতে বিরূপ প্রভাব পড়া শুরু করেছে। ক্ষণ গণনা চলছে নিশিরাতের সরকারের বিদায়ের। আওয়ামী দুঃশাসনের ভয়ংকর শৃঙ্খল থেকে মুক্তি পেতে দেশবাসীর আসন্ন দুর্বার আন্দোলনের আশংকায় সরকার ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে পড়েছে। তবে সুস্পষ্টভাবে বলতে চাই সরকার এই মুহূর্তে পদত্যাগ না করলে মিটিং-মিছিল-স্লোগান প্রতিরোধে অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠবে বাংলাদেশ।'
'বাংলাদেশকে ঘিরে ধরেছে অদ্ভুত এক রহস্যময় আঁধার। রাস্ট্র ও সরকারে কোথায় কী হচ্ছে সব কিছুতেই অস্পষ্টতা- রহস্যময়তা। বড় প্রশ্নটি হচ্ছে রাস্ট্র- সরকারের অভ্যন্তরে হচ্ছেটা কী? সরকারের নাটাই কার হাতে?'
টিটি/