হানিফের প্রশ্ন
জাফরুল্লাহ নাম দিলে বিএনপির নাম দেওয়া হলো না?
'নির্বাচন কমিশন গঠনে বিএনপির পক্ষ থেকে নাম পাঠাবে না বলছে কিন্তু ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী কার? আমরা এতদিন জানতাম উনি বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা। তিনি যদি নাম দেন সেই নামটা কি বিএনপি'র পক্ষ থেকে দেয়া হয়না? আমরা তো এটা বলতে পারি সরাসরি নিজেরা না দিয়ে আর একজনের মাধ্যমে নাম প্রস্তাব করছে। আর রাজনীতিতে স্ট্যান্টবাজি করছে।'
বুধবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে খুলনা বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে খুলনা বিভাগের সাংগঠনিক জেলা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক সম্পাদকবৃন্দ, দলীয় সদস্য এবং জেলা চেয়ারম্যানরে সঙ্গে ভার্চ্যুয়ালি মতবিনিময় সভা শেষে সাংবাদিকদের সামনে এমন মন্তব্য করেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ।
হানিফ বলেন, বিএনপি রাজনীতিটা সব সময় একটা মিথ্যাচার এবং অপকৌশলের মধ্য দিয়ে করে আসছে। বিএনপি'র সৃষ্টি হয়েছিল একটা অবৈধ পন্থায় তারা সব অবৈধ পথ খোঁজে।
তিনি বলেন, স্থানীয় নির্বাচনে বিএনপি'র পক্ষ থেকে বলা হল তারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে না। কিন্ত বিভিন্ন জায়গায় তাদের দলীয় প্রার্থীরা কিন্তু অংশ নিয়েছে। সরাসরি নাই কিন্তু দলীয় প্রতীকের বাইরে নির্বাচন করেছে।
তিনি আরও বলেন, বিএনপি সকালে এক কথা, বিকালে এক কথা বলে। নির্বাচন কমিশন গঠনে যখন রাষ্ট্রপতি রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপের আহ্বান করলেন তখন বিএনপি বলল না, আমরা নির্বাচন কমিশন গঠনে আইন চাই। সেসময় আইনমন্ত্রী বলেছিলেন আইনটা দ্রুত করা কঠিন হয়ে যাবে। সেসময় মির্জা ফখরুল বলেছিলেন সরকার চাইলে এক দিনে আইন করা যায়। যখন বিলটা সংসদে উঠল সংসদীয় কমিটির যাচাই-বাছাই হলো। বিএনপি দলীয় সংসদ সদস্যরা সেখানে উপস্থিত ছিলেন। তারা যাচাই বাছাই করলেন। সংসদে বিএনপি ও জাতীয় পার্টির পক্ষ থেকে সংশোধনী দিয়েছিল ২২ টা সংশোধনী গ্রহণ করেছে। বিএনপির সংসদ সদস্যদের অনুরোধে বিলের নামটাও পরিবর্তন করা হয়েছে। বিলটি সার্বজনীনভাবে গৃহীত হল সংসদে। এমন না যে সরকার তড়িঘড়ি করে বিল করছে যেটা দূরভিসন্ধিমূলক? আসলে বিএনপি পরস্পর বিরোধী কথা বলা আর জনগণের কাছে মিথ্যাচার এবং ভাঁওতাবাজি করা ছাড়া কিছু নেই। বিএনপির রাজনীতি করার কোনো কটেন্ট নেই, সরকারের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করে মানুষকে বিভ্রান্ত করা ছাড়া তাদের আর কি আছে। ক্ষমতায় থাকতে যে অপকর্ম করেছে সেই অপকর্মের দায়ভার আরও বহুদিন টানতে হবে বিএনপিকে।
হানিফ বলেন, গুম খুন নিয়ে কথা বলে বিএনপি? এসব অভিযোগ করার আগে তাদের চেহারা আয়নায় দেখা উচিত ছিল। ২০০১-০৫ পর্যন্ত বিএনপি আওয়ামী লীগের কত নেতা-কর্মীকে গুম করেছে। আমাদের ২৬ হাজার নেতা-কর্মীকে হত্যা করেছিল বিএনপির পাঁচ বছরে। এরা কথায় কথায় মিথ্যাচার করে। বিএনপি রাজনীতিটা হল মিথ্যাচারে ভরা এবং পরস্পর বিরোধী।
হানিফ আরও বলেন, সার্চ কমিটি সকলের মতামত নিয়ে সকলের কাছ থেকে নাম নিয়ে যাচাই-বাছাই করে দশটি নাম পাঠাবে রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠাবে। রাষ্ট্রপতি পাঁচজনের নাম চূড়ান্ত করে একটা কমিশন গঠন করবেন।
বিএনপি যে নাম দিলো না এতে নির্বাচন কমিশন প্রশ্নবিদ্ধ হবে কী না? এমন প্রশ্নের জবাবে হানিফ বলেন, কেন প্রশ্নবিদ্ধ হবে? ইসি গঠনের সময় কোন একদল নাম দিল না এতে কি নির্বাচন কমিশন প্রশ্নবিদ্ধ হবে? বিএনপি যখন নির্বাচন কমিশন গঠন করল তখন কার সঙ্গে আলাপ করে নির্বাচন কমিশন গঠন করেছিল? তারা তো কখনোই কারো সঙ্গে আলাপ করে নির্বাচন কমিশন গঠন করে নাই। তাদের নেত্রীকে নাম পাঠিয়েছেন সেই নামই রাষ্ট্রপতি ইসি গঠন করেছেন। এরপরও যদি কেউ নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে প্রশ্ন তোলে তাহলে বুঝতে হবে তারা এদেশের সুস্থ রাজনীতির চায়না। সব সময় একটা অস্বস্তিকর পরিবেশ রাখতে চায়।
আওয়ামী লীগের প্রস্তাবিত নাম থেকে যদি ইসি গঠন না হয় তাহলে সাধুবাদ জানাবেন কি না এমন প্রশ্নের জবাবে বলেন, অবশ্যই সাধুবাদ জানাবো । আমাদের দল থেকে পাঠানো নাম হোক না হোক, আমরা চাই একটা ভালো নির্বাচন কমিশন গঠন হোক সেটাই আমাদের কাম্য।
এর আগে সভায় উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য কাজী জাফর উল্লাহ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, উপ-দপ্তর সম্পাদক আবু সায়েম খান, সদস্য আমিরুল আলম মিলন, পারভিন জামান কল্পনা, অ্যাডভোকেট গ্লোরিয়া সরকার ঝর্ণা।
এসএম/এএস