মুন্সিগঞ্জের লৌহজং উপজেলার পুরাতন মাওয়া ফেরি ঘাট থেকে শ্বশুরবাড়ি যাওয়ার উদ্দেশে ট্রলারে উঠে পদ্মা নদীর ডোমরাখালী চরে স্বামীর বন্ধু ও তার সহযোগীদের দ্বারা গণধর্ষণের শিকার হয়েছেন এক নারী (২২)। গত রবিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা থেকে ৯টার মধ্যবর্তী সময়ে পদ্মা নদীর ডোমরাখালী চরে এ ঘটনা ঘটে।
পুলিশ জানায়, স্বামীর বন্ধু পরিচয়ে ট্রলারে উঠিয়ে পদ্মার চরে নিয়ে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করা হয় ভুক্তভোগী ওই গৃহবধূকে। পদ্মা সেতু (উত্তর) থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি জাকির হোসেন এ খবর নিশ্চিত করেছেন।
এছাড়াও বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) রাতে মুন্সিগঞ্জ জেলা পুলিশের এক প্রেস ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, ধর্ষণের ঘটনার পরের দিন ভিকটিম বাদী হয়ে চারজনকে আসামি করে লিখিত অভিযোগ করলে পুলিশ সরেজমিনে গিয়ে প্রাথমিক তদন্তে সত্যতা পেয়ে মামলা রেকর্ডভুক্ত করে।
মামলার এজাহারনামীয় আসামি মো. জামাল মোল্লাকে (২৩) প্রথমে ও পরে ইয়ামিন মুন্সী (১৯) ও জব্বার শেখকে (১৮) গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানো হয়। এরপর তারা ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিলে আদালত তাদের কারাগারে প্রেরণ করে। এই ঘটনায় অভিযুক্ত আবু বক্কর সিদ্দিক নামে একজন এখনো পলাতক রয়েছে।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, ভিকটিম পুরাতন মাওয়া ফেরিঘাট থেকে তার স্বামীর বাড়ি যাওয়ার উদ্দেশে ঘাটে নৌকার জন্য অপেক্ষা করছিলেন। এ সময় অভিযুক্ত দুইজন ভিকটিমকে পৌঁছে দেয়ার কথা বলে ট্রলারে উঠায়। পথিমধ্যে অপর দুই অভিযুক্ত ইয়ামিন মুন্সী এবং জব্বার শেখ ট্রলারে ওঠে। পরে এক পর্যায়ে ভিকটিমকে ভয়ভীতি দেখিয়ে জোরপূর্বক পদ্মা নদীর ডোমরাখালী চরে নিয়ে গিয়ে ভিকটিমকে গণধর্ষণ করে তারা। পরবর্তীতে রাত ৯টার দিকে অভিযুক্তরা মাওয়া পুরাতন কোস্টগার্ড স্টেশনের পাশে ভিকটিমকে নামিয়ে কাউকে কিছু না বলার জন্য হুমকি দিয়ে দ্রুত চলে যায়।
পুলিশ আরও জানায়, গ্রেপ্তারকৃত তিনজনের কাছ থেকে ২টি স্মার্টফোন জব্দ করা হয় এবং পরীক্ষার জন্য সিআইডি ফরেনসিক ল্যাবে প্রেরণ করা হয়। মামলার ঘটনায় ব্যবহৃত নৌকা জব্দ করা হয়। ভিকটিমের ডাক্তারি পরীক্ষা করানো হয়। মামলার তদন্ত কার্যক্রম ও পলাতক আসামি গ্রেপ্তারের অভিযান অব্যাহত আছে।
এদিকে, বিষয়টি নিশ্চিত করে মুন্সিগঞ্জ পুলিশ সুপার মুহাম্মদ শামসুল আলম সরকার জানান, গত বুধবার (১৯ জানুয়ারি) রাতে পদ্মা সেতু সংলগ্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে অভিযুক্তরা আদালতে ধর্ষণের অভিযোগ স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন।