শেখ হাসিনার জন্য নিজাম উদ্দিন আউলিয়ার মাজারে দোয়া করালেন শামীম ওসমান
শেখ হাসিনার জন্য নিজাম উদ্দিন আউলিয়ার মাজারে দোয়া করালেন শামীম ওসমান। ছবি: সংগৃহীত
ছাত্র-জনতার আন্দোলনে নিজের এলাকা নারায়ণগঞ্জে অস্ত্র হাতে প্রতিরোধে নেমেছিলেন সাবেক এমপি শামীম ওসমান। গণ–অভ্যুত্থানের দুদিন আগেও দলের কার্যালয়ে প্রকাশ্যে দেখা গিয়েছিল তাকে। ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার বিপ্লবে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের সূচনা হলে আর দেখা যায়নি শামীম ওসমানকে। ইতোমধ্যে সাবেক এই এমপির বিরুদ্ধে একাধিক হত্যা মামলা হলেও তাকে খুঁজে পাওয়া যায়নি।
অবশেষে সব রহস্যের অবসান ঘটেছে একটি ভিডিও থেকে। শামীম ওসমানের দেখা মিলেছে ভারতের রাজধানী দিল্লিতে হজরত নিজামউদ্দিনের দরগায়। শেখ হাসিনার জন্য নিজামউদ্দিন আউলিয়ার মাজারে দোয়া করিয়েছেন তিনি।
ভারতের একটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সদ্য স্নাতকোত্তর চূড়ান্ত পরীক্ষা শেষ করে ঘুরতে গিয়ে বাংলাদেশের মনিরুল হক দিল্লির নিজাম উদ্দিন আউলিয়ার দরগাহে তাকে দেখতে পান। মনিরুল হক জানান, শেখ হাসিনার জন্য নিজাম উদ্দিন আউলিয়ার দরগাহে দোয়া করান শামীম ওসমান। সে সময় তার পরিবারের কয়েকজন সদস্যও ছিলেন।
ফ্রিল্যান্স ফটোগ্রাফার ও নির্মাতা মনিরুল হক সিকিম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তরের চূড়ান্ত পরীক্ষা দিয়ে বাংলাদেশে ফেরার আগে ভারতের বিভিন্ন জায়গা ঘোরেন। তিনি সেপ্টেম্বরের শুরুর দিকে একদিন সন্ধ্যায় নিজাম উদ্দিনের দরগাহে বসেছিলেন। এ সময় হঠাৎ ‘বাংলাদেশ’ শব্দ শুনে তাকালে দেখেন এক ব্যক্তি বাংলাদেশের নাম উচ্চারণ করে দোয়া করছেন। তখন সঙ্গে সঙ্গে মোবাইলের ক্যামেরা চালু করে ভিডিও করা শুরু করেন তিনি। মনিরুল সেই ভিডিও গণমাধ্যমকে দিয়েছেন এবং ওই সময়কার বর্ণনা দিয়েছেন।
ভিডিওর উর্দু ভাষার সেই দোয়া বাংলা করলে হয়, ‘শামীম ওসমান সাহেবকে সালাম পৌঁছানোর সামর্থ্য দাও। শেখ হাসিনা সাহেবাকে শানদার সাফল্য দান করে বাংলাদেশে ফিরে যাওয়ার ভাগ্য দান করো।’
মনিরুল হক জানান, তিনি সেখানে শামীম ওসমানকে দেখে অবাক হন। ওই সময় শামীম ওসমানের সঙ্গে তার পরিবারের সম্ভবত আরও তিনজন সদস্য ছিলেন। পরে তিনি শামীম ওসমানকে অনুসরণ করতে থাকেন। দরগাহের এক পাশে থাকা খাবার জায়গায় শামীম ওসমান ও তার পরিবারের সদস্যদের তবারক বিতরণ করতে দেখেন তিনি। এমনকি যিনি দোয়া পড়ছিলেন, তাকে টাকাও দিতে দেখেন।
মনিরুলের দাবি, শামীম ওসমানের সঙ্গে তার একবার চোখাচোখি হয়। তবে কোনো বাক্যবিনিময় হয়নি। শামীম ওসমানকে দেখে হতাশ মনে হয়েছিল বলেও জানান বাংলাদেশি এই শিক্ষার্থী।
এর আগে, শামীম ওসমানকে পরিবারসহ দেখেছেন বলে ফেসবুক পোস্টে জানিয়েছিলেন ভারতে অধ্যয়নরত আরকে বাংলাদেশি শিক্ষার্থী আকাশ হক।
উল্লেখ্য, গত ১৯ জুলাই বিকালে নারায়ণগঞ্জ শহরের চাষাঢ়া বঙ্গবন্ধু সড়কে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের ওপর শামীম ওসমান ও তার সহযোগীদের গুলি ছোড়ার অভিযোগ রয়েছে। এর একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। ইতিমধ্যে শামীম ওসমানের বিরুদ্ধে একাধিক হত্যা মামলা হয়েছে।