রেকর্ড তাপপ্রবাহের জন্য সরকার দায়ী: রিজভী
বক্ত রাখছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। ছবি: ঢাকাপ্রকাশ
দেশে চলমান রেকর্ড তাপপ্রবাহের জন্য সরকারকে দায়ী করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) রাজধানীর খেটে খাওয়া মানুষের মাঝে পানি ও স্যালাইন বিতরণ অনুষ্ঠানে এই অভিযোগ করেন তিনি।
রিজভী বলেন, দেশে রেকর্ড পরিমাণ তাপপ্রবাহের জন্য সরকারের অপরিকল্পিত উন্নয়ন দায়ী। ১৫ বছর ধরে দেশে নির্বিচারে বন দখল ও বন উজাড় হয়েছে। এ কারণে পরিবেশ ভয়ংকর রূপ নিয়েছে।
তিনি বলেন, আমরা পাকিস্তান আমলেও গ্রীষ্মকালীন ছুটি কাটাতাম। অথচ এই সরকার রমজান মাসেও ১৫ দিন স্কুল খোলা রেখেছিল। যেখানে স্কুল সপ্তাহে দুদিন বন্ধ, তার মধ্যে শনিবার স্কুল-কলেজ খোলা রেখে বাংলাদেশ যে অগ্নিবর্ণ হয়ে উঠেছে, সেই আগুন রাঙা বাংলাদেশের মধ্যে এই বাচ্চাদের ঠেলে দেওয়া হচ্ছে।
তীব্র তাপপ্রবাহের জন্য সরকারকে দায়ী করে রিজভী বলেন, বাংলাদেশে এখন উত্তপ্ত আগুনের মতো পরিবেশ। এই উত্তপ্ত গরমে মানুষের ত্রাহি ত্রাহি অবস্থা। এজন্য একমাত্র দায়ী এই গণবিরোধী সরকার। এরা নদী রক্ষা করতে পারেনি। ভূমিদস্যুরা নদী দখল করে রেখেছে। অন্যায়ভাবে গাছ কেটে নিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু সরকার কিছুই করছে না। বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, কয়লা পুড়িয়ে তাপকেন্দ্র করলে দেশের কোনো লাভ হবে না। গাছ, ফসল, মাছ পুড়ে যাবে।
তিনি আরও বলেন, কুয়াকাটায় তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র, বাগেরহাটের রামপালে কয়লা পুড়িয়ে তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র করেছে। যার কারণে সমুদ্রপারে নারিকেল গাছে আর নারকেল ধারে না, ফসল হয় না। আমাদের নিঃশ্বাস, আমাদের অক্সিজেন হচ্ছে সুন্দরবন। সেই সুন্দরবনকে পুড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। উজাড় করে দেওয়া হচ্ছে।
বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, বাংলাদেশ নদীমাতৃক দেশ। এই দেশে নদী খাল-বিল দিয়ে ভরা। কিন্তু সেই নদী খাল-বিলগুলো ভরাট হয়ে যাচ্ছে। সারাদেশ গরমে উত্তপ্ত হয়ে পড়েছে। ৪১ ডিগ্রি তাপমাত্রা মনে হচ্ছে ৪৩ বা ৪৪ ডিগ্রি তাপমাত্রা। এরকম গরম বাংলাদেশের ইতিহাসে আর কখনো পড়েনি। সাহারা মরুভূমির গরমের মতো অনুভূতি হচ্ছে। যে দেশে এতো গাছপালা, এতো নদী, সেই দেশে এ রকম গরম হওয়ার কথা না। শুধু সরকারের লুটেরা নীতি, নদী ভরাট করার নীতির কারণে এই পরিস্থিতি হয়েছে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের মন্তব্যের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘বিএনপি না কি যে কোনোভাবে ক্ষমতা দখল করতে চায়।’ আমরা দখল করতে যাবো কেন? দখল তো আপনারা করে রেখেছেন। জনগণ ছাড়া, ভোট ছাড়া। দেশের জনগণ চায় আন্দোলনের মাধ্যমে অতি দ্রুত এ সরকারের পতন হোক।
তিনি আরও বলেন, আপনারা যদি ক্ষমতা না ছাড়েন তাহলে বাংলাদেশের মানুষ না খেয়ে মরবে, গরমে আগুনে পুড়ে মরবে, মানুষ চাল-ডাল, চিনি -লবণ পাবে না। দেশে যে পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে তাতে মানুষ ধুকে ধুঁকে মারা যাবে।
এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডাঃ মোঃ রফিকুল ইসলাম, সহ অর্থনৈতিক সম্পাদক মাহমুদুর রহমান সুমন, তাঁতীদলের আহ্বায়ক আবুল কালাম আজাদ, মৎস্যজীবীদলের সদস্য সচিব আবদুর রহিম, যুবদলের সহ সভাপতি জাকির হোসেন সিদ্দিকী, চট্টগ্রাম বিভাগীয় সহ সভাপতি মোশাররফ হোসেন দীপ্তি, যুবদলের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক আলহাজ্ব আনোয়ার হোসেন আনু, সহ সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান, শামসুর রহমান, যুবদলের সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক মেহবুব মাসুম শান্ত, সাদিউল কবির নীরব, তৌহিদুল হাসান রিয়ন, বিএনপি নেতা জাকির হোসেন, ছাত্রদলের সাবেক সহ সভাপতি এজমল হোসেন পাইলট, তারেক উজ জামান তারেক, কাজী রফিকুল ইসলাম, ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডাঃ তৌহিদুর রহমান আউয়াল, লিয়াকত হোসেন, সহ সাধারণ সম্পাদক মাইন উদ্দিন নিলয়, স্বাস্থ্য সম্পাদক ডাঃ সাইফুল আলম বাদশা, মতিঝিল থানা বিএনপি নেতা জাহিদুল হক জাহিদ, আলমগীর হোসেন, ঢাবি ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক রাজু আহমেদসহ প্রমূখ।