‘বুয়েটের আন্দোলনের পেছনে কলকাঠি নাড়ছে জামাত-শিবির’
ফাইল ছবি
গত ২৮ মার্চ মধ্যরাতে ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের প্রবেশকে কেন্দ্র করে আবারো উত্তাল বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ক্যাম্পাস। ক্যাম্পাসে রাজনৈতিক নেতা–কর্মীদের প্রবেশ ও তাদের কর্মসূচি বন্ধে বিক্ষোভ করছেন বুয়েটের শিক্ষার্থীরা। বিক্ষোভের জেরে শুক্রবার ২১ ব্যাচের শিক্ষার্থী ও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সদস্য ইমতিয়াজ রাহিম রাব্বিকে সাময়িক বহিষ্কার করেছে বুয়েট প্রশাসন৷
এদিকে বুয়েটে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধের সিদ্ধান্তকে অসাংবিধানিক আখ্যা দিয়েছে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। একইসঙ্গে ক্যাম্পাসটিতে ছাত্র রাজনীতি ফেরাতে আজ প্রতিবাদ সমাবেশের ডাক দিয়েছে সংগঠনটি।
বুয়েটের শিক্ষার্থীদের এই আন্দোলনের পেছনে ষড়যন্ত্র দেখছে ছাত্রলীগ৷ আন্দোলনের পেছনে পেছনে জামাত-শিবির কলকাঠি নাড়ছে বলে অভিযোগ করছে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ৷
এর আগে গত বুধবার রাত ২টার দিকে নেতাকর্মীসহ বুয়েট ক্যাম্পাসে প্রবেশ করেন ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন। শিক্ষার্থীরা সংগঠনটির এমন পদক্ষেপকে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ বুয়েটে ফের রাজনীতি শুরুর তৎপরতা বলে উল্লেখ করেছেন। এরপর থেকে শিক্ষার্থীরা ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে আন্দোলন শুরু করেন।
পরে শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের প্রবেশের ঘটনায় অভিযুক্ত ২১ ব্যাচের পুরকৌশল বিভাগের শিক্ষার্থী ইমতিয়াজ হোসেন রহিম ওরফে ইমতিয়াজ রাব্বির হলের সিট বাতিল করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
এদিকে, ইমতিয়াজ রাব্বির বিরুদ্ধে বুয়েট প্রশাসনের নেওয়া পদক্ষেপে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ছাত্রলীগ। সংগঠনটির বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ইমতিয়াজের আবাসিক হলের বরাদ্দকৃত সিট বাতিল ঘোষণা করার সিদ্ধান্তকে বাংলাদেশের স্বাধীনতা-গণতন্ত্রকামী মানুষ ও ছাত্রসমাজ চূড়ান্তভাবে প্রত্যাখ্যান করছে।
এতে বলা হয়, বাংলাদেশের ছাত্রসমাজ বুয়েট প্রশাসনের এই সিদ্ধান্তকে একটি অন্যায্য, অসাংবিধানিক, মৌলিক অধিকার পরিপন্থী ও সর্বোচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কর্তৃক নৈতিক স্খলনজনিত শিক্ষাবিরোধী কর্মকাণ্ড হিসেবে আখ্যায়িত করছে।
উল্লেখ্য, ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেয়ার জের ধরে বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে ২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর রাতে ডেকে নিয়ে যায় বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মী। এরপর রাত ৩টার দিকে শেরেবাংলা হলের নিচতলা ও দুইতলার সিঁড়ির করিডোর থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
আবরারের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে বিক্ষোভ শুরু করেন বুয়েট শিক্ষার্থীরা। পরে শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে বিশ্ববিদ্যালয়টির তৎকালীন উপাচার্য অধ্যাপক সাইফুল ইসলাম আবরার ফাহাদ হত্যায় অভিযুক্ত ১৯ জনকে বহিষ্কারের ঘোষণা দেন। একইসঙ্গে বুয়েটে সব দলের ছাত্র-শিক্ষক রাজনীতি নিষিদ্ধ ঘোষণা করেন তিনি।