কাজী ফিরোজ রশীদ খুনীদের সঙ্গে হাত মিলিয়েছেন : জাসদ
জামায়াত, হেফাজত, সাম্প্রদায়িক, মৌলবাদী, জঙ্গিবাদীদের বিরুদ্ধে জাসদের বলিষ্ঠ অবস্থানই জাসদের প্রতি ফিরোজ রশীদসহ অন্যান্যদের বিদ্বেষের মূল কারণ বলে জানিয়েছে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ)। শনিবার (২৯ জানুয়ারি) দলটির দফতর সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয় গত ২৭ জানুয়ারি সংসদে রাষ্ট্রপতির ভাষণের উপর ধন্যবাদ প্রস্তাবের উপর আলোচনায় সম্পূর্ণ অপ্রাসঙ্গিক ও অযাচিতভাবে ‘আমাদের হেফাজতে ইসলাম তাদের জঙ্গি বানাইছে ইনু সাহেব। আরে জঙ্গি কারে বলে? আন্দোলন তো মানুষেই করে, আন্দোলন সাধারণত ভায়োলেন্সে চলে যায়। তারা জঙ্গি না, জঙ্গি হচ্ছে সশস্ত্র বিপ্লব যারা করে সরকারকে হটানোর জন্য। যেটা ইনু সাহেবরা করেছিলেন।’ জাসদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে কাজী ফিরোজ রশীদ যে বক্তব্য দিয়েছেন তা শুধু সর্বৈব মিথ্যাচার ও জাসদবিরোধী বিদ্বেষে পরিপূর্ণ।
আরও পড়ুন : জাসদ বঙ্গবন্ধুকে হত্যার ক্ষেত্র প্রস্তুত করেছিল: ফিরোজ রশীদ
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘কাজী ফিরোজ রশীদ প্রায়শই জাসদের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করেন এবং মিথ্যাচার ছড়ান। অবশ্য তার বক্তব্যে জাসদের বিরুদ্ধে তার এই বিদ্বেষের কারণ তিনি নিজেই প্রকাশ করেছেন। তিনি নিজে তার থলের বিড়াল বের করেছেন। জাসদের জামায়াত, হেফাজত, সাম্প্রদায়িকতা, মৌলবাদ, জঙ্গীবাদ বিরোধী জাসদের বলিষ্ঠ অবস্থানই কাজী ফিরোজ রশীদের গাত্রদাহ, জাসদের প্রতি বিদ্বেষের মূল কারণ। কাজী ফিরোজ রশীদ তার নিজের ভাষায় ‘আমাদের হেফাজতে ইসলাম’ বলে প্রমাণ করেছেন তিনি বার বার দল বদল করে উপরে উপরে যেই দলই করেন না কেন, তিনি আসলে হেফাজত, জামাত, সাম্প্রদায়িক, মৌলবাদী, জঙ্গীবাদীদের পক্ষেরই লোক। তিনি তার এই আসল চেহারা প্রকাশ করে ফেলেছেন।’
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘২০১৩ সালের ৫ মে হেফাজতের তাণ্ডব বা ২০২১ সালের ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবস স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া, হাঠহাজারীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে হেফাজতের সহিংস তাণ্ডব দেখার পরও হেফাজতকে জঙ্গী হিসাবে চিহ্নিত করায় গোস্বা করে এবং হেফাজতের সহিংস তাণ্ডবকে মানুষের আন্দোলন হিসাবে চিহ্নিত করে কাজী ফিরোজ রশীদ প্রমাণ করেছেন যে তিনি হেফাজতের বাংলাদেশ রাষ্ট্র ও সংবিধান বিরোধী রাজনীতির সাথে ওতপ্রোতভাবে যুক্ত।’
জাসদের বিবৃতিতে বলা হয়, ‘যে কাজী ফিরোজ রশীদ বঙ্গবন্ধুর হত্যার পর খুনী মুশতাক, সামরিক শাসক জিয়া ও এরশাদের সাথে হাত মিলিয়ে আখের গোছানোয় ঝাঁপিয়ে পরেছিলেন সেই কাজী ফিরোজ রশীদের বঙ্গবন্ধুর জন্য কান্না-মায়াকান্না ও কপটতা ছাড়া আর কিছুই না। কাজী ফিরোজ রশীদের বঙ্গবন্ধুর প্রতি সামান্য শ্রদ্ধা থাকতো তাহলে কাজী ফিরোজ রশীদ বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যের বিরোধীতা করে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য বুড়িগঙ্গায় ভাসিয়ে দেয়ার প্রকাশ্য হুমকি দাতা হেফাজতের পক্ষে নির্লজ্জ দালালি করতেন না। ১৯৭২ সাল থেকে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত জাসদ প্রকাশ্যেই ঘোষণা দিয়ে আওয়ামী লীগ ও বঙ্গবন্ধু সরকারের বিরুদ্ধে প্রকাশ্য রাজনৈতিক অবস্থানে ছিল। সেই সময়ে পুলিশ ফাঁড়ি, থানা লুট, ব্যাংক ডাকাতি, পাটের গুদামে আগুণ দেয়া, আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের হত্যার সাথে জাসদের কোনো পর্যায়ের নেতা-কর্মী যুক্ত থাকতেন তাহলে নিশ্চয়ই তৎকালীন সরকার-প্রশাসন-পুলিশ জাসদের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট মামলা দিয়ে আদালতে বিচারের সম্মুখীন করে শাস্তি নিশ্চিত করতো। কিন্তু সেই সময়কালে উল্লেখিত অভিযোগে বাংলাদেশের কোনো থানায়ই জাসদের কোনো নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে কোনো মামলাও হয়নি। খোদ বঙ্গবন্ধুও কখনই জাসদের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ করেন নাই।’
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের ক্ষেত্র প্রস্তুত করাসহ বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের কোনো পর্যায়ে জাসদের কোনো নেতা-কর্মীর সামান্যতম সংশ্লিষ্টতা থাকলে বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার এফআইআর, তদন্ত, চার্জশীট, সাক্ষীদের সওয়াল জবাব, চার্জ ফ্রেম, মূল রায় ও রায়ের পর্যবেক্ষণে জাসদের নেতা-কর্মীদের নাম আসতো। কিন্তু তা আসেনি।’
এসএম/এপি/