বিশ্বের কাছে দেশকে হাস্যরসে পরিণত করেছে সরকার: রিজভী
দুস্থদের মাঝে কম্বল বিতরণ। ছবি: সংগৃহীত
ভোটবিহীন ‘ডামি নির্বাচন’ করে ‘অবৈধ’ সরকার বিশ্বের কাছে দেশকে হাস্যরসে পরিণত করেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী।
শনিবার (২০ জানুয়ারি) সকালে গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে মহিলা দল কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদ এর সভাপতিত্বে বিএনপিপ্রতিষ্ঠাতা সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৮৮তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের উদ্যোগে দুস্থদের মাঝে কম্বল বিতরণ করা হয়।
এ সময় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্যের কঠোর সমালোচনা করেন রুহুল কবির রিজভী। বিএনপির এ জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন বিএনপি নির্বাচনে না এসে দেশের সার্বভৌমত্ব নষ্ট করার চেষ্টা করছে। অজ্ঞ ওবায়দুল কাদেররা এই দেশটাকে দোজখে পরিণত করেছেন। আমরা তো সার্বভৌমত্ব ফিরিয়ে আনার আন্দোলন করছি। আপনারা তো সার্বভৌমত্বকে বন্ধক রেখেছেন। দেশের সার্বভৌমত্বকে বন্ধক রেখে একটি ভোটবিহীন ডামি নির্বাচন করে দেশকে বিশ্বের কাছে হাস্যরসে পরিণত করেছেন। আমরা যদি সার্বভৌমত্ব বন্ধক রাখতাম প্রভুদের কথা শুনতাম নিজেদের শক্তি বলে আন্দোলন করতাম না। এদেশের জনগণ আমাদের শক্তি, তাদের ভরেই আমরা রাজনীতি করছি। কোনো প্রভুদের ভরে নয়। যারা প্রভু রাষ্ট্রের ভরে রাজনীতি করে তারাই এদেশের সার্বভৌমত্বকে বিক্রি করে।
রিজভী আরও বলেন, ‘শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ও দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার আদর্শে আমরা চলছি, যার কারণে দুর্নীতিবাজ সরকারের নির্যাতনের মধ্যেও আমাদের আন্দোলন চলমান। এই ফ্যাসিবাদ ও দুর্নীতিবাজ সরকার আমাদের দলের পুরুষ নেতাকর্মীদের ওপর জেল-জুলুম-অত্যাচার তো করছেই, সেই সঙ্গে আমাদের নারী নেত্রীদের ওপরও জুলুম-অত্যাচার করছে। এর মধ্যেও আমাদের নারী নেত্রীরা পুরুষ নেতাকর্মীদের সঙ্গে আন্দোলন-সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছেন।’
সরকারের সমালোচনা করে বিএনপির এই জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, ‘আজ আমরা নদীর পানি আনতে পারি না। টিপাই মুখ বাঁধ, পদ্মা বাঁধ আটক করে রেখেছে। আপনারা কথা বলতে পারেন না। কারণ আপনারা সর্বভৌমত্ব বিক্রি করা লোক। জনগণের ভোটের অধিকার হরণ করে একদলীয় কর্তৃবাদী হয়েছেন শেখ হাসিনা। তিনি (শেখ হাসিনা) আজ নিজেকে সম্রাট হিসেবে পরিণত করেছেন। তার কথায়, তার ইশারায় দেশ চলছে। এর মধ্যেও আমাদের এখানে যে নেতারা আছেন, তারা গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার জন্য, সার্বভৌমত্ব রক্ষা ও শক্তিশালী করার জন্য জীবনকে বাজি রেখে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন।’
রিজভী বলেন, ‘আমাদের জীবন চলে যাবে, তারপরও বাংলাদেশের এক ইঞ্চি মাটি এজারা দিতে দেবো না আমরা। এটাই হচ্ছে বিএনপি। কারণ এই শিক্ষাটাই, স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও গণতন্ত্র—এই তিনটি সুরক্ষার বাণী শুনিয়েছিলেন শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান। এ বাণী শুনিয়েছিলেন বলেই আন্তর্জাতিক চক্রান্ত দ্বারা তাকে হত্যা করা হয়েছে।’
রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘অকুতোভয় দেশপ্রেমী শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের যে পতাকা, সেই পতাকা হাতে তুলে নিয়েছিলেন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া। এই সরকার তাকে জেলে ভরে নিপীড়ন-নির্যাতন করছে। তিনি এখন রোগে আক্রান্ত হয়েছেন, তারপরও তার সঙ্গে আপস করা যায়নি। তার মাথা নোয়াতে পারেনি। এটাই হচ্ছে সার্বভৌমত্ব রক্ষার বড় প্রমাণ দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার।’
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন, বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক, ডাঃ রফিক, যুবদল কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সাহিত্য ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক মেহবুব মাসুম সান্ত ও মহিলা দল কেন্দ্রীয় কমিটির নেতৃবৃন্দ।