জাতিসংঘের মহাসচিবকে বিএনপির চিঠি
ফাইল ছবি
আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে জাতিসংঘের মহাসচিবকে চিঠি দিয়েছে বিএনপি। সেখানে এই নির্বাচনকে একতরফা ও একটি ‘ডামি’ নির্বাচন উল্লেখ করে দেশে রাষ্ট্রযন্ত্রের পৃষ্ঠপোষকতায় বাস–ট্রেনে হামলা, অগ্নিসংযোগ করা হচ্ছে বলে দাবি করা হয় চিঠিতে। একই সঙ্গে বিএনপির নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তারের চিত্র তুলে ধরা হয়।
বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান গণমাধ্যমকে বলেন, গত ২৮ ডিসেম্বর জাতিসংঘের সদর দপ্তরে চিঠি পৌঁছে দিয়েছে বিএনপি। আর রোববার ঢাকায় জাতিসংঘসহ বিদেশি সব মিশনে ওই চিঠি দেওয়া হয়েছে।
রোববার (৩১ ডিসেম্বর) বিকেলে এক ভার্চ্যুয়াল সংবাদ সম্মেলনে এই চিঠি পড়েন দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
চিঠিতে অভিযোগ করা হয়, গত দুই মাস রাষ্ট্রযন্ত্রের পৃষ্ঠপোষকতায় বাস–ট্রেনে হামলা, অগ্নিসংযোগসহ নানা ধরনের নাশকতা করা হচ্ছে। আওয়ামী লীগ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একাংশকে ব্যবহার করে এ ধরনের ঘটনা ঘটাচ্ছে। এসব ঘটনায় বানোয়াট অভিযোগ এনে বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলোর নেতা–কর্মীদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। বিরোধী দলের আন্দোলন দমন করে সরকার প্রহসনের নির্বাচন করতে চাইছে।
চিঠিতে আরও বলা হয়, গত ১৯ ডিসেম্বর এক মর্মান্তিক ঘটনায়, ঢাকায় চলন্ত ট্রেনের তিনটি বগিতে অগ্নিসংযোগ করা হয় এবং চারজন যাত্রী মারা যান। ঘটনার বিশ্লেষণে প্রতীয়মান— রাষ্ট্রযন্ত্রের একটি চিহ্নিত অংশের যোগসাজশে এই নাশকতা সংঘটিত হয়েছে। অগ্নিকাণ্ডের দুই দিন আগেই, ১৯ ডিসেম্বরের জন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে বিশেষভাবে সরকারি হাসপাতালগুলোতে পর্যাপ্ত শয্যা, জরুরি পরিষেবা, ডাক্তার এবং এ্যাম্বুলেন্স প্রস্তুত রাখার জন্য ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল। আমাদের বিশ্বাস করার যথেষ্ট কারণ রয়েছে যে, এই নির্দেশনাটি কোনও কাকতালীয় বিষয় নয়। ডিএমপির এই প্রস্তুতিমূলক উদ্যোগ কেন নেওয়া হয়েছিল, নাশকতার সুস্পষ্ট তথ্য ও পরিকল্পনা তাদের কাছে কীভাবে এল এবং তারপরেও এটি রোধে কেন তারা কোনো ব্যবস্থা নিলেন না, জনমনে এসব প্রশ্ন রয়েছে।
চলমান অগ্নিসংযোগের ঘটনায় একটি সুনির্দিষ্ট প্যাটার্ন লক্ষ করা যাচ্ছে উল্লেখ করে চিঠিতে বলা হয়, যার একমাত্র উপকারভোগী আওয়ামী লীগ ও তার অধীন রাষ্ট্রযন্ত্র। আর প্রধান ভুক্তভোগী বিএনপি।
দলটি অভিযোগ করেছে, বিতর্কিত ২০১৪ ও ২০১৮ সালের দুটি নির্বাচনের মতো সরকার আবারও সহিংসতা ও কারচুপির প্রহসনের নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। সরকারের পদত্যাগ ও নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের এক দফা দাবিতে আন্দোলনে থাকা বিএনপিসহ বিভিন্ন দল ও জোট ৭ জানুয়ারির নির্বাচন বর্জন করছে। এসব দল তাদের আন্দোলনের কর্মসূচি অব্যাহত রেখেছে।
বিএনপির পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, ২৮ অক্টোবরের পর থেকে এ পর্যন্ত তাদের দলের ২৫ হাজার নেতাকর্মীকে আটক করা হয়েছে। ২৭ জনকে হত্যা করা হয়েছে। এর মধ্যে একজন সাংবাদিক রয়েছে।