এমপি হওয়ার মিশনে নেমেছেন অপু-মাহী
ছবি: সংগৃহীত
সাধারণ রাজনীতিবিদদের মতো সংস্কৃতি অঙ্গনে বিচরণকারী সফল ব্যক্তিত্বদের মনেও এক সময় নেতা হওয়া বা জাতীয় সংসদে নিজের এলাকার প্রতিনিধিত্ব করার একটা সুপ্ত বাসনা কাজ করে। এই বাসনা অনেকেরই পূর্ণ হয়, কারও আবার হয় না। তবে অনেকেই বাসনা চরিতার্থ করতে নিরবচ্ছিন্নভাবে প্রচেষ্টা চালিয়ে যান।
বিভিন্ন নেতা-নেত্রীর নির্বাচনী প্রচারনায় অংশ নিয়ে নিজেকে জানান দেওয়ার চেষ্টা করেন। সেই ধারাবাহিকতায় একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মতো এবারও আওয়ামী লীগ থেকে প্রার্থী হওয়া নিয়ে একঝাঁক তারকার নাম শোনা যাচ্ছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্ন মহলে এসব নাম উঠে আসছে। তাদের মধ্যে চিত্রনায়ক আলমগীর, চিত্রনায়ক ফেরদৌস আহমেদ, চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহী, ছোট পর্দার অভিনেতা সিদ্দিকুর রহমানের নাম রয়েছে।
এ তালিকায় সর্বশেষ যুক্ত হয়েছেন ঢালিউড কুইনখ্যাত চলচ্চিত্র অভিনেত্রী ও প্রযোজক অপু বিশ্বাসও। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হতে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন ফরম কিনেছিলেন অপু। তখন প্রার্থী হতে না পারলেও নতুন প্রত্যাশায় এবার ফের তিনি মনোনয়ন ফরম কিনেছেন। অন্যদিকে চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহী সরকারও মনোনয়ন ফরম তুলেছেন। আজ ফরম জমা দেওয়ার কথা রয়েছে। চলতি বছরের ১ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ আসনের উপনির্বাচনে অংশ নিতে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন ফরম তুলেছিলেন চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহী। এর আগে অক্টোবরে আনুষ্ঠানিকভাবে যোগ দেন দলটির রাজনীতিতে। দুই মাস না যেতেই চেয়ে বসেন মনোনয়ন। কিন্তু দল থেকে সাড়া পাননি।
মনোনয়ন পাবেন কি না প্রশ্নের জবাবে মাহী বলেন, ‘আমি চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ আসনে নৌকা প্রতীকে নির্বাচনের জন্য মনোনয়ন তুলেছি। বাকিটা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সিদ্ধান্ত। তিনি যেটা ভালো মনে করবেন সেটাই করবেন।
আমি নির্বাচনে লড়ার জন্য প্রস্তুত। মাহিয়া মাহী সরকার বলেন, আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাওয়ার ব্যাপারে আমি শতভাগ আশাবাদী। তৃণমূলের মতামতের নেওয়া হলে দল আমাকে মনোনয়ন দেবে, ইনশাআল্লাহ। এলাকার সাধারণ মানুষ উৎসাহ দিয়েছেন, তারা আমাকে তাদের প্রতিনিধি হিসেবে দেখতে চান বলেই আমি মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছি। তবে মনোনয়ন না পেলেও দলের পক্ষ থেকে যাকে মনোনয়ন দেওয়া হবে, তার পক্ষেও একইভাবে কাজ করবেন বলে জানিয়েছেন মাহী। তিনি বলেন, আমাদের মূল লক্ষ্য হলো নৌকাকে জয়যুক্ত করা।
যেই মনোনয়ন পাক, যাকেই মনোনয়ন দেওয়া হোক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আরেকবার ক্ষমতায় আনতে নৌকার জন্য সর্বোচ্চ কাজ করব। আমার জন্মস্থান চাঁপাই, বেড়ে উঠেছি রাজশাহীতে। দুই এলাকার জনগণই আমাকে সংসদ সদস্য হিসেবে দেখতে চান। প্রধানমন্ত্রী আমাকে যে আসনের জন্য যোগ্য মনে করবেন, সেখান থেকেই নির্বাচন করতে চাই।
এদিকে এর আগে ২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করার পরিকল্পনা করেছিলেন অপু বিশ্বাস। পরে সে সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেন। এরপর ক্ষমতাসীন দলটির নির্বাচনী প্রচারে অংশ নেন। এরপর ২০১৯ সালে জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত নারী আসনের জন্য আওয়ামী লীগের মনোনয়ন ফরম কেনেন অপু বিশ্বাস।
বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে অপু বিশ্বাস জানিয়েছেন, এবার প্রার্থী হওয়ার সুযোগ পেলে অবশ্যই নির্বাচনের মাঠে নামবেন তিনি এবং তা অবশ্যই নৌকা প্রতীকে। এই ঢালিউড কুইন বলেন, এবার নির্বাচনে প্রার্থী হওয়া নিয়ে পরিকল্পনা রয়েছে। তো প্রার্থী হওয়ার সেই সুযোগ যদি আমাকে করে দেয়, তাহলে অবশ্যই আমি নির্বাচন করব। জন্মস্থান বগুড়া থেকে মনোনয়ন চাইব।’
শাকিব খানের প্রাক্তন স্ত্রী অপু বিশ্বাস বলেন, ‘অপু বিশ্বাসের জায়গা নারীদের কাছে ভিন্ন রকম। বিশেষ করে ব্যক্তিত্ব, সন্তানের মা এবং একজন নারী হিসেবে। আমার কাছে মনে হয় নারীদের তুলে ধরতে একজন নারীই প্রয়োজন। যেমনটা আমাদের প্রধানমন্ত্রী। তিনি সবসময় নারী নেতৃত্বকে সাপোর্ট দেন। এবারও আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় দেখতে চান বলে জানান এ নায়িকা। এ অভিনেত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ আবারও ক্ষমতায় আসুক, এই কামনাই আমার থাকবে। কিছুদিন পরই জাতীয় নির্বাচন। এজন্য অপেক্ষা করছি। আমরা চলচ্চিত্রের মানুষ। আমাদের চলচ্চিত্র হচ্ছে কর্মজীবী মানুষকে ঘিরে। কিন্তু যখন অস্থিরতা বিরাজ করে তখন কাজের জায়গা সংকুচিত হয়ে যায়। তবে আমি মনে-প্রাণে চাইব আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসুক। আওয়ামী লীগ আমাদের যে উন্নয়ন করেছে, এটার বিকল্প আর কিছু নেই। আমাদের প্রধানমন্ত্রী, তিনি আসলেই মা।
প্রসঙ্গত, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হয়েছে গত ১৫ নভেম্বর। ইতোমধ্যে আগ্রহী প্রার্থীদের মনোনয়ন ফরম সংগ্রহের জন্য আহ্বান জানিয়েছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। শনিবার থেকে দলীয় মননোয়ম ফরম বিতরণ শুরু হয়েছে।