সংঘাত-সংঘর্ষে মানবজাতি ক্ষতবিক্ষত: ফখরুল
বুদ্ধপূর্ণিমা উপলক্ষে সকল বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেন, ‘বৌদ্ধ ধর্মের প্রবর্তক মহামতি গৌতম বুদ্ধ অহিংসা ও মানুষে-মানুষে গভীর ভালবাসার বাণী প্রচার করে গেছেন। তিনি তার অনুসারীদের চিরন্তন বাণীতে মানব কল্যানে ব্রতী এবং জীবের প্রতি প্রেম দেখাতে উদ্বুদ্ধ করে গেছেন।’
বুধবার (৩ মে) বুদ্ধপূর্ণিমা উপলক্ষে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বাণীতে এসব কথা বলেন বিএনপি মহাসচিব।
গৌতম বুদ্ধ বলেছেন, হিংসা দিয়ে হিংসাকে জয় করা যায় না, বরং শরণ নিতে হয় অহিংসার। আজ বাংলাদেশসহ সারা বিশ্ব রক্তাক্ত, সংঘাত-সংঘর্ষে মানব জাতি ক্ষতবিক্ষত। এই শ্বাসরুদ্ধকর মুহূর্তে গৌতম বুদ্ধের হিতোপদেশ মানুষকে অহিংসার পথে, ন্যায়ের পথে চালিত করবে। শান্তি, সৌহার্দ্য, সম্প্রীতি ও মানবপ্রেম সকল ধর্মের মর্মবাণী। আমার দৃঢ় বিশ্বাস, আজও বিশ্ব সমাজে শান্তি ও সৌহার্দ্য প্রতিষ্ঠায় গৌতম বুদ্ধের বাণী অতীব প্রাসঙ্গিক, যোগ করেন তিনি।
মির্জা ফখরুল বলেন, মহামানব গৌতম বুদ্ধ ত্যাগের মধ্য দিয়ে সুখ আহরণে এক অনন্য দৃষ্টান্ত। সকল বন্ধন উপেক্ষা করে চলার পথের সকল প্রতিকূলতাকে সহ্য করে তিনি বোধিজ্ঞান বা বুদ্ধত্ব লাভ করেন। বুদ্ধত্ব লাভের মাধ্যমে তিনি জগতের সকল প্রাণীর কল্যাণ, সুখ ও মঙ্গলের অমরবাণী প্রচার করেছেন। ন্যায় ও অহিংসাই হচ্ছে তার বাণীর মূল প্রতিপাদ্য।
তিনি বলেন, ‘আমরা জানি, গৌতম বুদ্ধ সমাজের ঐক্য-সংহতি প্রতিষ্ঠার জন্য ধর্ম প্রচার করেছিলেন। মানুষের নীতি, আদর্শ, ভালোবাসা এবং সকল স্তরের মানুষের কল্যাণের জন্য মঙ্গল সূত্রের বাণী প্রচার করেছিলেন।’
তিনি চেয়েছিলেন একটি সুখী-সমৃদ্ধময় আলোকিত সমাজ যেই সমাজে কোনো ধরনের হিংসা-প্রতিহিংসা থাকবে না, থাকবে না কোনো ধরনের সংঘাত সহিংসতা। তিনি জীবনের সর্ববিধ ক্লেশ থেকে মুক্তির উপায় বের করেন। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি সকল বাধা-বিপত্তির মধ্যেও আমাদের দীর্ঘ প্রত্যাশিত গণতন্ত্র, শান্তি ও নিরাপদ আশ্রয় ফিরে আসবেই। চলুন আমরা আজ সকলে দল, মত, ধর্ম, বর্ণ, সম্প্রদায় নির্বিশেষে সর্বস্তরের মানুষের ঐক্য ও আত্মীয়তাবোধ সৃষ্টি করি এবং নাগরিকদের স্বাধীনতা ও যথাযথ মর্যাদা রক্ষার ব্যবস্থা করি।
সর্বোপরি ত্যাগে, উদারতায় ও মহত্ত্বতায় উন্নত সুখময় জীবন এবং সব ধরনের ধর্মীয় ও রাজনৈতিক সংকীর্ণতামুক্ত সমাজ ও বিশ্বজনীন শান্তি প্রতিষ্ঠা করি-শুভ বুদ্ধপূর্ণিমার এ দিনে আমরা সেই শপথ ও প্রতিজ্ঞায় আবদ্ধ হই। বুদ্ধপূর্ণিমা সফল হোক। বিশ্বে শান্তি বিরাজ করুক।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, সর্বোপরি বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদী দর্শণেই এদেশের সকল বর্ণ, ধর্মীয় সম্প্রদায় ও নৃগোষ্ঠীসমূহ একীভূত হয়। বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদই সকলকে একই বন্ধনে আবদ্ধ করে। পরস্পরের মধ্যে শুভেচ্ছা ও সৌহার্দ্য সৃষ্টি করে।
বুদ্ধপূর্ণিমার সাফল্য এবং বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী সকলের সুখী ও শান্তিময় জীবন কামনাও করেন মির্জা ফখরুল।
এমএইচ/এমএমএ/