মঙ্গলবার, ৪ মার্চ ২০২৫ | ১৮ ফাল্গুন ১৪৩১
Dhaka Prokash

প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য দাম্ভিকতার বহিঃপ্রকাশ: মির্জা ফখরুল

নিরপেক্ষ নির্বাচন প্রশ্নে ‘বিএনপি কোনো ছাড় দেবে না’ বলে বলে জানিয়েছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

তিনি বলেন, ‘আমরা আর ছাড় দেব না, এদেশের মানুষের এখন দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে। আমার কথা বলছি না। চলেন না বের হই এক সঙ্গে। দ্যাট গো-আউট। টক টু দ্য পিপলস, ফারমার্স, রিকশাপুলার্স। নিরপেক্ষভাবে চলেন, আপনি ইনভেস্টিগেশন করেন-দেখেন মানুষ কী বলে।’

মঙ্গলবার (১৪ মার্চ) খালেদা জিয়ার গুলশানের রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন মির্জা ফখরুল।

প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে দাম্ভিকতার বহিঃপ্রকাশ

মির্জা ফখরুল বলেন, গতকাল আমাদের অনির্বাচিত স্বঘোষিত, প্রবল প্রতাপশালী, অহংকারী, দাম্ভিক প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘নো প্রেসার উইল ওয়ার্ক অন মি। তার ওপর কোনো চাপই কাজ করবে না। এখানেই বোঝা যায় তার (প্রধানমন্ত্রীর উক্তিতে) এদেশের প্রতি, এই মানুষের প্রতি তার যে কোনো দায়িত্ব নেই, তার যে সন্মান নেই, তার যে কোনোরকমে জনগণের ভবিষ্যত নিয়ে এই রাষ্ট্রকে একটা সত্যিকার অর্থে কার্যকর রাষ্ট্র করার চিন্তা তার নেই।’

চাপ কেনো পড়ছে ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, ‘এর কারণ হচ্ছে গত দুইটা নির্বাচন তারা করেছেন সম্পূর্ণভাবে একতরফাভাবে তাদেরকে ক্ষমতায় বসানো জন্য যত রকমের ভোট জালিয়াতি,যত রকমের কারচুপি, যত রকমের সন্ত্রাস, সেই সন্ত্রাসের মধ্য দিয়ে ভোটারদেরকে ভোট কেন্দ্রে যাওয়া বাধা দিয়ে ভোট কেন্দ্রে শূন্য করে তারা ফলাফল ঘোষণা করে বেআইনভাবে ক্ষমতায় গেছেন।’

যখন আবার নির্বাচন আসছে তখন তারা দেখছেন যে, জনগণ তাদের সঙ্গে নেই। সত্যিকার অর্থে যদি সুষ্ঠু ভোট হয় তাহলে তারা ক্ষমতায় যেতে পারবে না। এই কারণে তারা যেটা করছেন আগে থেকেই একটা অবস্থা তৈরি করছেন সেই অবস্থাটা হচ্ছে যে, আমাদের দেশের নির্বাচনের ব্যাপারে কেউ বাইরে থেকে হস্তক্ষেপ করবে না, কেউ কথা বলবে না এবং নির্বাচনটা আমাদের মতোই করছি এবং বিদেশীরা যারাই যাচ্ছে তারাই বলছে যে, আমরা সুষ্ঠু নির্বাচন দেখতে চাই।

সরকার বলছে যে, না সব ঠিক আছে তো। নির্বাচন কমিশন সুষ্ঠু নির্বাচন করবে, তারা ফ্রি যা-খুশি তাই করতে পারবে। এই যে গতকালও একজন বৃটিশ মন্ত্রী দেখা করতে গেলেন, এর আগেও একজন গেলেন তাদের উনি (প্রধানমন্ত্রী) একই কথা বলছেন।

সংলাপ নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যকে সত্যের অপলাপ বলে মন্তব্য করেন বিএনপি মহাসচিব। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ২০১৮ সালে নির্বাচনের আগে সংলাপের ফল কী? আমাদেরও প্রশ্ন ‘হোয়াট ওয়াজ দ্য রেজাল্ট’।

প্রধানমন্ত্রী সকলের সামনে মিটিংয়ে অঙ্গীকার করেছিলেন যে, নির্বাচনে সরকার কোনো হস্তক্ষেপ করবে না। পুলিশ আর গ্রেপ্তার করবে না, পুলিশ কোনো মামলা দেবে না, কাউকে গ্রেফতার করা হবে নির্বাচন পর্যন্ত।

তার বক্তব্যের তিনদিন পর থেকে সারাদেশে পুলিশি নির্যাতনে বিএনপিসহ বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের তারা সব পালিয়ে গেছে। ঘরে থাকতে পারেনি, রাস্তায়ও থাকতে পারেনি। আমি বিএনপির মহাসচিব আমি আমার এলাকায় প্রথম গিয়ে ঢুকেছি। আমি যে এলাকায় গেছি সেখানে আমার গাড়ির উপরে আক্রমণ হয়েছে, আমার কনভয়ের উপরে আক্রমণ হয়েছে। পুলিশ দাঁড়িয়ে দেখেছে। নির্বাচনের ৭/৮ দিন আগ থেকে সেখানে নতুন নতুন প্লট তৈরি করা হয়েছে। তারা (ক্ষমতাসীনরা) যে নির্বাচনী অফিস তৈরি করেছিল সেগুলো তারা নিজেরাই আগুন লাগিয়ে দিয়ে বিএনপির নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা, মোটরসাইকেল পুড়িয়ে বিএনপির নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া হয়েছে। এটা শুধু আমার এলাকায় নয়, সারা দেশে সব জায়গায় করা হয়েছে। এসবের পরও আজকে যদি শেখ হাসিনা বলেন যে, হোয়াট ওয়াজ দ্য রেজাল্ট। রেজাল্ট তো ইউ নো হোয়াট হ্যাভ ইউ ডান।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘তারপরে কী করে উনি (প্রধানমন্ত্রী) আশা করেন, তিনি সরকারে থাকবেন আর দেশের রাজনৈতিক দলগুলো নির্বাচন করবে। একা বিএনপি তো নয়, আজকে সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলো কেন বলছে যে, এই সরকারের অধীনে নির্বাচনে যাওয়া যাবে না। এমনকি সিপিবি পর্যন্ত বলেছে যে, নির্বাচনে যাওয়া যাবে না। এই বিষয়গুলো ‍যখন তিনি বলেন, তথন তিনি চূড়ান্তভাবে সত্যের অপলাপ করেন। জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করেন, জনগনকে বিভ্রান্ত করেন এবং তিনি একটা প্রচণ্ড রকম দাম্ভিকতায় ভুগছেন যে, তিনি গণতন্ত্রের যে ব্যাসিক কথা সেই ব্যাসিক কথাগুলো থেকে উনি বাইরে চলে যাচ্ছেন। আমরা তো আগে বলেছি যে, তার সাথে সংলাপ করব। তিনি তো কথাই রাখেন না। আমরা ডায়ালগের কথা সেজন্য বলি নাই।

তিনি বলেন, যারা দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে বিনা কারণে ২০১৮ সালের নির্বাচনের আগে মিথ্যা মামলা দিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে জেলে মধ্যে পুরিয়ে আটকিয়ে রাখে তাদের সঙ্গে আমরা কি সংলাপ করব।ওই মামলায় প্রত্যেককে ৭ দিনের মধ্যে জামিন দেওয়া হয়েছে। খালেদা জিয়াকে এখন পর্যন্ত জামিন দেওয়া হয়নি।

সরকারের উদ্দেশে ফখরুল বলেন, আমার কথা খুব পরিস্কার। এত যদি সাহস থাকে আপনাদের, এতই যদি উন্নয়ন করে থাকেন, এতই যদি জনগণের ভালোবাসা থাকে আপনি পদত্যাগ করেন এবং একটা কেয়ারটেকার গভমেন্টকে দায়িত্ব দেন-নির্বাচন হোক। যে আসবে আমরা মাথা পেতে নেব। এসব কথা (গতকাল প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য) গুলো মানুষ এখন খায় না। নতুন কথা বলতে বলেন। যদি গণতন্ত্র দিতে চান সত্যিকার অর্থে, যদি সিনসিয়ার হন প্রথমে পদত্যাগ করেন, একটা কেয়ারটেকার গভমেন্ট দেন, তারপরে কেয়ারটেকার গভমেন্ট সব্ দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে তাদের মতামতের ভিত্তিতে একটা নির্বাচন কমিশন করবে, সে নির্বাচন করবে।

কেয়ারটেকার গভমেন্ট কীভাবে করবে তার পথ বাতিয়ে দেন বিএনপি মহাসচিব।

তিনি বলেন, ‘কেয়ারটেকার গভমেন্ট কীভাবে করবে? আলোচনা করেন রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে। তাহলেই হয়ে যাবে। ওবায়দুল কাদের সাহেব কাল বলেছেন যে, কেয়ারটেকার গভমেন্ট চিন্তাও করবেন না। এটা এখন চলবে না। তা ২০০৬ সালে কেয়ারটেকার গভমেন্টের সংস্কার প্রস্তাব আপনারাই পার্লামেন্টে দিয়েছিলেন। আমাদের কাছে কফি আছে তো। সেইমথিং এখন আমরা যেটা বলছি, ওরা একই কথা বলেছে তো।

২০১৮ সালের একাদশ নির্বাচনে সময়ে বিএনপি মনোনয়ন বাণিজ্য করেছে বলে প্রধানমন্ত্রী যে বক্তব্য দিয়েছেন তার প্রতিবাদ জানান বিএনপি মহাসচিব।

তিনি বলেন, ‘এটা মিথ্যাচার। আমি নাম বলব না, এটা সৌজন্যমূলক নয়। কত নাম কত টাকা দিয়ে কে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে পায়, কত টাকা দিয়ে কে মন্ত্রীত্ব পায় এগুলো আমরাও জানি। বাংলাদেশে এতটুকু দেশ। আমরা স্থায়ী কমিটি ৭/৮ দিন ধরে বৈঠক করে মনোনয়ন দিয়েছি। সেখানে এতটুকু কোনো রকমের সমস্যা ছিল না। প্রশ্ন আসে আমরা তিন জন করে দিয়েছি কেন? আমরা তিন জন করে দিয়েছে আওয়ামী লীগের জন্য। আমরা জানি যে, আওয়ামী লীগ শয়তানি করতেই থাকবে। প্রার্থীকে বেআইনি ঘোষণা করবে, উপযুক্ত নয় ঘোষণা করবে, ট্রাইব্যুনাল থেকে আউট করে দেবে সেজন্য আমাদেরকে বিকল্প প্রার্থী রাখতে হয়েছে।ওদের কি? আমরা তিন রাখি, ১০ জন রাখে তোমাদের কী?

নির্বাচন কমিশন সংলাপে ডাকলে আপনারা যাবেন কিনা প্রশ্ন করা হলে বিএনপি মহাসচিব বলেন, এই নির্বাচন কমিশন কোন নির্বাচন কমিশন? যে নির্বাচন কমিশন কালকে (সোমবার) বলেছে যে, আমর কোনো দায় নেই যে, অন্যান্য দলগুলো এলো কি এলো না। এটাকে কি নির্বাচন কমিশন বলব? তার কি দায়-দায়িত্ব আছে, বলব?

আপনারা জনগণের কথা চিন্তা করে তো নির্বাচন কমিশনে যেতে পারেন প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, আমরা জনগনের কথা চিন্তা করেই তো এই দাবিগুলো বলছি। আমরা তো বলছি না, বিএনপিকে ক্ষমতায় বসাও। আমরা বলেছি নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করো, একটা লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করো। আমরা তো এখনই বলছি না যে, আমাদের আপনারা এখনই ক্ষমতায় বসিয়ে দেন। আমরা বলছি যে, নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে, সমানভাবে, সমান অধিকার নিয়ে করতে পারি-সেই জিনিসটা চাচ্ছি। ‘উই ওয়ান্ট এ লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’। আপনি একদিকে আমার সমস্ত লোকদেরকে ধরে ধরে জেলে পুড়বেন, আপনি মিটিংয়ে মধ্যে আক্রমণ করবেন, মারবেন। আপনি শান্তির সমাবেশ করবেন আর আমাকে মারতে মারতে ঢুকাই দেবেন-এটা তো লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড না।’

তিনি বলেন, নির্বাচনের পরিবেশটা কোথায়? বলেন। ম্যাডামকে (খালেদা জিয়া) জেলে রাখবেন। উনাকে ছাড়েন। মামলাগুলো সব প্রত্যাহার করেন। নির্বাচন পরিবেশ তৈরি করেন।তখন আপনি বলবে, এখন কেনো যাচ্ছেন না। তার আগে এ কথা আপনি বলতে পারেন না।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমার খুব কষ্ট হয়। এই রকম একজন বিশাল মানুষের কণ্যা। আমরা কেউ বলি না বলি এটা তো সত্য কথা যে, শেখ মুজিবুর রহমান নিঃসন্দেহে এদেশের ওয়ান অব দ্য গ্রেটেস্ট সান। তার মেয়ে গোটা জাতিকে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দিল। উনি (শেখ মুজিবুর রহমান) ও দিয়েছিলেন ওই যে বাকশাল তৈরি করে। ওই যে বলি না-বডি কেমেস্ট্রিতে আছে আওয়ামী লীগের। ওরা লুট করবে, ওরা ভোগ করবে আর পায়ের তলে সাধারণ মানুষকে পিষে মারবে।

মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা ইতিমধ্যে আমাদের ‘রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের ২৭ দফা’ সংস্কার কর্মসূচিতে উল্লেখ করেছি যে ভবিষ্যতে অবাধ নির্বাচনে জনগণ বিএনপিকে নির্বাচিত করলে সকল কালাকানুন বাতিল করা হবে। দুর্নীতির শ্বেতপত্র প্রকাশ করা হবে। কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।

দলমত জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে প্রত্যেককে চলমান গণআন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়ার উদাত্ত আহ্বান জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আওয়ামী সরকার অপরিণামদর্শী ভ্রান্ত নীতি, অব্যবস্থাপনা ও নানাবিধ দুর্নীতির মাধ্যমে দেশের অর্থনীতিকে যে মহাবিপর্যয়ের মধ্যে ঠেলে দিয়েছে; তা কাটিয়ে ওঠা পরবর্তী যেকোনো সরকারের পক্ষেই হবে এক বড় চ্যালেঞ্জ। আমরা দেশবাসীকে জানাতে চাই বিএনপি সরকার গঠন করলে দেশের স্বার্থ বিনষ্টকারী সকল চুক্তি এবং বিদ্যুৎ ও জ্বালানি দ্রুত বৃদ্ধি (বিশেষ বিধান) আইনসহ সকল কালো আইন বাতিল করা হবে। বিদ্যুৎ উৎপাদনে নবায়নযোগ্য, বিকল্প ও মিশ্র-জ্বালানির সংস্থান করা হবে। স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনার মাধ্যমে দেশের বিদ্যুৎ খাতকে পুনর্গঠন ও টেকসই করে গড়ে তোলা হবে। কিন্তু তার আগে গণতন্ত্রকে মুক্ত করতে হবে। দুর্নীতিতে আকণ্ঠ নিমজ্জিত বর্তমান সরকারকে দুর্বার গণআন্দোলনের মাধ্যমে ক্ষমতাচ্যুত করে একটি নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের পরিচালনায় অবাধ ও গ্রহণযোগ্য সাধারণ নির্বাচনের মাধ্যমে প্রকৃত অর্থে জনগণের একটি সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।

মির্জা ফখরুল বলেন, দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে যে, পবিত্র রমজানে পূর্বের বৎসরগুলোর মতো এবারও এতিম ও আলেম ওলামাদের, পেশাজীবিদের, বিশিষ্ট নাগরিক ও রাজনৈতিক নেতাদের ও বাংলাদেশে অবস্থিত কূটনীতিকদের সম্মানে ইফতার মাহফিলের আয়োজন করা হবে। আগামী ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস যথাযোগ্য মর্যাদার সঙ্গে পালনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এই অনির্বাচিত, দুর্নীতি পরায়ণ ফ্যাসিষ্ট সরকারের দুর্নীতির খতিয়ান জন সম্মুখে উম্মোচন করার লক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাগ্রহণের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

এমএইচ/এমএমএ/

 

Header Ad
Header Ad

বিরামপুরে কাভার্ড ভ্যান-ইজিবাইক সংঘর্ষে স্কুলছাত্রসহ নিহত ২

দুর্ঘটনা কবলিত ইজিবাইক। ছবি: সংগৃহীত

দিনাজপুরের বিরামপুরে কাভার্ড ভ্যানের সঙ্গে ইজিবাইকের মুখোমুখি সংঘর্ষে সায়েম ইসলাম (১৬) নামে দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীসহ দুই জন নিহত হয়েছে। সোমবার (৩ মার্চ) বিকেলে দিনাজপুর-গোবিন্দগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়কের বিরামপুর পৌর শহরের বিছকিনি এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলেন, নবাবগঞ্জ উপজেলার সাঁকোপাড়া গ্রামের মজিবরের ছেলে ইজিবাইক চালক নুরুজ্জামান হোসেন (৩৫) এবং একই উপজেলার সোনাকানি গ্রামের আনোয়ারের ছেলে ইফতেখার রহমান সায়েম ইসলাম (১৬) ও বিরামপুর আদর্শ হাইস্কুলের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী।

বিরামপুর থানার উপ-পুলিশ পরিদর্শক মো. মাজেদ আলী জানায়, বিকেলে কোচিং শেষে ইজিবাইকে চড়ে বাড়ি ফেরার পথে উপজেলার পৌর শহরের বিছকিনি এলাকায় একটি কাভার্ড ভ্যানের সঙ্গে ইজিবাইকটির মুখোমুখি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে ঘটনাস্থলে শিক্ষার্থী সায়েম নিহত হন এবং আহত অবস্থায় ইজিবাইকের চালককে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়ার পথে তারও মৃত্যু হয়।

বিরামপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মমতাজুল হক বলেন, ঘাতক কাভার্ড ভ্যানের চালক পালিয়ে যায়।আইনি প্রক্রিয়া শেষে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

Header Ad
Header Ad

ট্রাম্পের ২৯ মিলিয়ন ডলার অর্থায়নের অ‌ভিযোগ সত্য নয়: পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়

ছবি: সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি বাংলাদেশে রাজনৈতিক পরিস্থিতি শক্তিশালী করতে ইউএসএআইডির মাধ্যমে ২৯ মিলিয়ন ডলার অর্থায়নের দাবি করেছেন। তবে, বাংলাদেশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই অভিযোগকে মিথ্যা বলে উল্লেখ করেছে।

সোমবার (৩ মার্চ) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ২৯ মি‌লিয়ন নি‌য়ে ট্রাম্পের এ অ‌ভিযোগ সত্য নয় বলে দা‌বি করেছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, বাংলাদেশে ইউএসএআইডির অর্থায়নে ২৯ মিলিয়ন ডলারের প্রকল্প 'স্ট্রেনদেনিং পলিটিক্যাল ল্যান্ডস্কেপ (এসপিএল) ইন বাংলাদেশ' শীর্ষক একটি প্রকল্প বাস্তবায়িত হয়েছে। সম্প্রতি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এ প্রকল্পটি নিয়ে কিছু তথ্য দিয়েছেন যা নিয়ে জনমনে ব্যাপক বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছে। এ পরিপ্রেক্ষিতে বিষয়টি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় অনুসন্ধান করেছে।

অনুসন্ধান থেকে জানা গেছে যে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে এই প্রকল্পটি বাস্তবায়নের জন্য ইউএসএআইডি যুক্তরাষ্ট্রে নিবন্ধিত ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনালকে (ডিআই) নির্বাচিত করে। প্রকল্প প্রস্তাবনা আহ্বানের পরিপ্রেক্ষিতে অনেক আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান দরপত্র প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করে এবং একটি স্বচ্ছ প্রতিযোগিতামূলক প্রক্রিয়া অনুসরণের মধ্য দিয়ে ইউএসএআইডি সিদ্ধান্তটি গ্রহণ করে। ২০১৭ সালের মার্চে চুক্তি স্বাক্ষরের পর ডিআই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন শুরু করে। পরে প্রকল্পটির মেয়াদ বৃদ্ধি করা হয় এবং এর অর্থ আসে ধাপে ধাপে।

শুরুতে এসপিএল প্রকল্পটি ছিল ৫ বছর মেয়াদি এবং বাজেট ১৪ মিলিয়ন ডলার। প্রকল্পটির ব্যবস্থাপনায় ছিল ইউএসএআইডি এবং অর্থায়নে ছিল ইউএসএআইডি ও যুক্তরাজ্যের উন্নয়ন সহায়তাকারী প্রতিষ্ঠান ডিএফআইডি (বর্তমানে এফসিডিও)। এই প্রকল্পে ডিএফআইডির অর্থায়নের প্রতিশ্রুতি ছিল ১০ মিলিয়ন ডলার।

এসপিএল প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য ছিল-রাজনৈতিক সহিংসতা হ্রাস করে শান্তি ও সম্প্রীতি বৃদ্ধি, রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান তৈরি, দলগুলোর সক্ষমতা বৃদ্ধি, দলগুলোর অভ্যন্তরীণ গণতন্ত্র চর্চার উন্নয়ন এবং প্রতিনিধিত্বমূলক নেতৃত্বের বিকাশে উৎসাহ প্রদান। প্রকল্পের অধীনে ডিআই বাংলাদেশে জরিপ কার্যক্রমও পরিচালনা করে।

উল্লেখ্য, ইউএসএআইডির প্রকল্পের ক্ষেত্রে মার্কিন সরকারের আর্থিক ব্যবস্থাপনা নীতি অনুসরণ করাটা বাধ্যতামূলক। এতে আর্থিক নিরীক্ষার প্রক্রিয়াটি কঠোরভাবে অনুসরণ করা হয়। প্রকল্প শেষ হয়ে যাওয়ার কয়েক বছর পরও এ-সংক্রান্ত নথিপত্র সংরক্ষণ করা হয়। প্রয়োজনে পুনর্নিরীক্ষা করা হয়।

অনুসন্ধান থেকে দেখা যায় যে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে যুক্তরাষ্ট্রে নিবন্ধিত ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশে এসপিএল প্রকল্পটি বাস্তবায়ন শুরু করে। তাই এটি বাংলাদেশের দুইজন ব্যক্তির মালিকানাধীন কোনো সংস্থাকে প্রদান করার অভিযোগটি সত্য নয়। বস্তুত এ ধরনের প্রকল্প বাস্তবায়িত হয় বাংলাদেশ ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দ্বিপাক্ষিক উন্নয়ন সহযোগিতা চুক্তির মাধ্যমে। এ ক্ষেত্রে ব্যক্তি বিশেষের কোনো কিছু করার ক্ষমতা থাকে না।

Header Ad
Header Ad

অতিরিক্ত ও সহকারী পুলিশ সুপার পদের ১২৪ কর্মকর্তাকে বদলি

ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশ পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পদমর্যাদার ১১৭ ও সহকারী পুলিশ সুপার পদমর্যাদার ৭ কর্মকর্তাকে বদলি করা হয়েছে।

সোমবার (৩ মার্চ) পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলমের সই করা পৃথক দুটি প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়।

এতে বদলি করা কর্মকর্তাদের ১৯ মার্চের মধ্যে বর্তমান কর্মস্থলের দায়িত্ব বুঝিয়ে দিতে বলা হয়েছে। না হলে পরদিন থেকে তাদের তাৎক্ষণিক অবমুক্ত (স্ট্যান্ড রিলিজ) হিসেবে গণ্য করা হবে।

সরকার পতনের পর পুলিশ বাহিনীতে রদবদলের ধারাবাহিকতায় এর আগেও কয়েক দফায় বড় রদবদল হয়েছে।

অন্তর্বর্তী সরকার গত বছরের ২০ নভেম্বর আগের পুলিশ প্রধান মো. ময়নুল ইসলামকে সরিয়ে নতুন পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) হিসেবে দায়িত্ব দেয় বাহারুল আলমকে।

নতুন আইজিপি দায়িত্বে আসার পর বাহিনীতে রদবদলের ধারাবাহিকতায় আরেকটি আদেশ এলো।

এসব কর্মকর্তাকে ডিএমপি, এসবি, সিআইডি, র‌্যাব, জেলা পুলিশ, পুলিশ সদর দপ্তর, পিবিআই, এপিবিএন ও ট্যুরিস্ট পুলিশে বদলি করা হয়েছে।

বদলি কর্মকর্তাদের নামের তালিকা ১ ও তালিকা ২ দেখতে ক্লিক করুন।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

বিরামপুরে কাভার্ড ভ্যান-ইজিবাইক সংঘর্ষে স্কুলছাত্রসহ নিহত ২
ট্রাম্পের ২৯ মিলিয়ন ডলার অর্থায়নের অ‌ভিযোগ সত্য নয়: পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়
অতিরিক্ত ও সহকারী পুলিশ সুপার পদের ১২৪ কর্মকর্তাকে বদলি
সম্ভবত ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন হবে: প্রধান উপদেষ্টা
ছয় মাসে ১০ হাজার ৪৭৫ কোটি টাকার সম্পদ জব্দ করেছে দুদক
জাতিসংঘকে শাপলা চত্বর ও সাঈদীর রায়কেন্দ্রিক হত্যাকাণ্ড নথিভুক্ত করার অনুরোধ
নুর ভাই নিজেই তার দল বিলুপ্ত করে আমাদের সাথে যুক্ত হতে আগ্রহী: হান্নান মাসউদ
দুই দিনের মধ্যে সয়াবিন তেলের সরবরাহ স্বাভাবিক হবে: বাণিজ্য উপদেষ্টা
নওগাঁ ও পাবনায় বাস ডাকাতির ঘটনায় ছয়জন গ্রেপ্তার
টাঙ্গাইলে সালিশি বৈঠকে সংঘর্ষ, ৭০ দোকান ভাঙচুর, থমথমে পরিস্থিতি
শেখ হাসিনা স্টেডিয়ামের নতুন নাম ন্যাশনাল ক্রিকেট গ্রাউন্ড
২০৩০ দশকে এআই মানবসভ্যতাকে ধ্বংস করতে পারে: ইলন মাস্ক
দেশে প্রথমবার জিকা ভাইরাসের ক্লাস্টার শনাক্ত, আক্রান্ত ৫
বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের নতুন নাম বাংলাদেশ স্যাটেলাইট-১
দল না পাওয়া সেই আজিঙ্কা রাহানে কেকেআরের নতুন অধিনায়ক
ওএসডি হলেন দেশের ২৯ সিভিল সার্জন
উপদেষ্টা হিসেবে ফারুকী ঠিক আছেন: প্রিন্স মাহমুদ
খাদ্যপণ্যের দাম গত রমজানের তুলনায় সহনীয় পর্যায়ে: প্রেস সচিব
প্রাথমিকের ৬৫৩১ শিক্ষক নিয়োগে কোনো বাধা নেই: আপিল বিভাগ
ভোক্তা পর্যায়ে কমলো এলপি গ্যাসের দাম