২২ ফেব্রুয়ারি দিনটি ইতিহাসের বাতিঘর: বাংলাদেশ ন্যাপ
বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে ১৯৭০ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি দিনটি ঐতিহাসিক বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ ন্যাপ চেয়ারম্যান জেবেল রহমান গানি ও মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া।
তারা বলেন, ১৯৭০’র এদিন ঢাকার ঐতিহাসিক পল্টন ময়দানে ছাত্র ইউনিয়নের জনসভায় ১১ দফা কর্মসূচি সংবলিত প্রচারপত্রে ‘স্বাধীন জনগণতান্ত্রিক পূর্ব বাংলা’ ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল। ছাত্র সমাজের সেই ঘোষণা স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
বুধবার (২২ ফেব্রুয়ারি) ১৯৭০’র ২২ ফেব্রুয়ারির ৫৩বছর পূর্তি উপলক্ষে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে নেতৃদ্বয় এসব কথা বলেন।
বিবৃতিতে বলা হয়, শুধুমাত্র ৯ মাসের মুক্তিযুদ্ধই স্বাধীনতার ইতিহাস প্রকৃত ও একমাত্র ইতিহাস নয়। স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার বাঁকে বাঁকে রয়েছে নানা ঐতিহাসিক ঘটনা। ১৯৫২’র ভাষা আন্দোলনের পথ ধরে ১৯৭১ সালে স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা লাভ করে।
স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় অন্যতম রূপকার হচ্ছেন মজলুম জননেতা মাওলানা ভাসানী। তিনিই ১৯৫৭ সালের কাগমারী সম্মেলনে সর্বপ্রথম ‘আসসালামু আলাইকুম’ উচ্চারনের মাধ্যমে জাতিকে স্বাধীনতার স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন।
নেতৃদ্বয় ২২ ফেব্রুয়ারিকে ‘স্বাধীন জনগণতান্ত্রিক পূর্ব বাংলা ঘোষণা দিবস’ ঘোষণার দাবি জানিয়ে বলেন, সহনশীলতার সঙ্গেই দেশের স্বাধীনতার প্রকৃত ইতিহাস রচনা করা উচিত। প্রজন্মের নিকট বাংলাদেশের স্বাধীনতার প্রকৃত ইতিহাস তুলে ধরতে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ যেমন সমগ্র জাতিকে অনুপ্রাণিত করেছিল, ঠিক তেমনই মাওলানা ভাসানীর বিভিন্ন বক্তব্য জাতিকে স্বাধীনতার স্বপ্ন দেখিয়েছিল। আর এটি সত্য যে, মওলানা ভাসানী ছিলেন বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক পিতা।
নেতৃদ্বয় আরও বলেন, মজলুম জননেতা মওলানা ভাসানী ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সম্পর্ক ছিল পিতা-পুত্রের মতো। ইতিহাসের যার যার প্রাপ্য সম্মান, তাকে তা দেওয়া উচিত। স্বাধীনতা সংগ্রাম ও ইতিহাসে যেসব ব্যক্তি-দলের অবদান ছিল তাদের স্বীকৃতি দেওয়া আজ সময়ের দাবি। এজন্য দলমত নির্বিশেষে সবাইকে নিয়ে জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে এগিয়ে যেতে হবে।
তারা বলেন, স্বাাধীনতার পর থেকেই সমন্বয়হীনতার কারণেই সুবিধাবাদি আর চাটুকাররা ইতিহাস বিকৃতি করেছে আর সমগ্র জাতির মধ্যে নানা বিভক্তি-বিরোধ সৃষ্টি করেছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, ১৯৭০ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি ঐতিহাসিক পল্টন ময়দানে ছাত্র ইউনিয়ন ও শ্রমিক ফেডারেশন আয়োজিত জনসভা থেকে স্বাধীন জনগণতান্ত্রিক পূর্ব বাংলা প্রতিষ্ঠার ডাক দেওয়া হয়েছিল। আর সেই ডাকের সাথে জড়িত তৎকালিন প্রখ্যাত শ্রমিক নেতা কাজী জাফর আহমেদ, ডাকসুর সাবেক ভিপি ও তৎকালিন উদিয়মান কৃষক নেতা রাশেদ খান মেনন, ১১ দফা আন্দোলনের অন্যতম নেতা সেই সময়কালের ছাত্র ইউনিয়ন সভাপতি মোস্তফা জামাল হায়দার, সাধারণ সম্পাদক ও মাহবুবউল্লা (ড. মাহবুবউল্লা), সাংগঠনিক সম্পাদক আতিকুর রহমান (সালু)দেরকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদা প্রদান করা উচিত। কারণ, সেটাই ছিল ছাত্র সমাজের পক্ষ থেকে প্রথম জনসভা করে প্রকাশ্যে স্বাধীনতার ডাক।
ন্যাপ নেতৃদ্বয় বলেন, ২২ ফেব্রুয়ারি বাঙালির জাতীয় জীবনের অনন্য দিন, ইতিহাসের বাতিঘর। রাজনীতির মত পার্থক্য দিয়ে তাকে বিচার করা সঠিক হবে না। ২২ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইতিহাসের এক ‘মাইল ফলক’। তাই স্বাধীনতা রক্ষায় ২২ ফেব্রুয়ারি চিরকাল আমাদের পথ দেখাবে।
এমএইচ/এমএমএ/