‘মেরাজের ঘটনায় মহানবী (সা.)-এর শ্রেষ্ঠত্ব প্রকাশ পেয়েছে’
পবিত্র শবে মেরাজ মহান আল্লাহ তায়ালার এক অলৌকিক ঘটনা। এ মহিমান্বিত রাতে মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) মসজিদুল আল আকসায় গমন, সপ্তাকাশ ভ্রমণ ও আল্লাহর দিদার লাভ করেন বলে অভিমত প্রকাশ করে বাংলাদেশ ন্যাপ চেয়ারম্যান জেবেল রহমান গানি ও মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া বলেন, পবিত্র মেরাজের ঘটনায় মহানবী (সা.)-এর মর্যাদা, তার উম্মতের শ্রেষ্ঠত্ব প্রকাশ পেয়েছে।
শুক্রবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) পবিত্র মেরাজুননবী (সা.) উপলক্ষে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বাণীতে তারা এসব কথা বলেন।
তারা বলেন, মেরাজের মাধ্যমে মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন রাসুল (সা.)-এর দৃষ্টির সামনে উপস্থাপন করা হয় সৃষ্টি জগতের অপার রহস্য। স্বচক্ষে বেহেশত-দোজখ অবলোকন, পূর্ববর্তী নবী-রাসুলদের সঙ্গে সাক্ষাৎ ও পরিচিতি, সুবিশাল নভোমণ্ডল পরিভ্রমণ, মহাকাশ, আরশ, কুরসি, লওহ, কলম প্রভৃতি সামনাসামনি দেখা, সর্বোপরি মহান রবের সঙ্গে পবিত্র দিদারের মাধ্যমে আল্লাহ তায়ালা তার প্রিয় হাবিবকে পরম সৌভাগ্যমণ্ডিত করেন। এতে সৃষ্টিজগতের কাছে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে সাইয়েদুল আম্বিয়া হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর সুমহান মর্যাদা।
নেতারা বলেন, ইসরা ও মিরাজের এ ঘটনায় একদিকে উম্মতে মুহাম্মাদীর জন্য রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা ও নির্দেশনা, অন্যদিকে সেখানে লুকিয়ে রয়েছে অসংখ্য ইলাহি হেকমত ও রহস্য। মহানবী (সা.) যেহেতু সর্বশেষ নবী ও রাসুল, তার পরে কেয়ামত পর্যন্ত আর কোনো নবী বা রাসুল আগমন করবেন না। তাই তার কেয়ামত পর্যন্ত আগমনকারী সব উম্মতের উপর মহানবী (সা.) এর শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণকারী একটি মোজেজা যৌক্তিকভাবেই প্রয়োজন ছিল। কারণ আল্লাহ তায়ালা জানেন, তার নবীর উম্মতরা জ্ঞান-বিজ্ঞানে উন্নতি করবে। তারা চাঁদে যাবে। মঙ্গলগ্রহে যান পাঠাবে। তারা গতিকে নিয়ন্ত্রণ করতে চাইবে। তাদের যুগ হবে গতির যুগ।
তারা বলেন, মেরাজের ঘটনা থেকে মুমিন খুঁজে পায় সঠিক পথের দিশা, লাভ করে আল্লাহর অপার অনুগ্রহ ও দ্বীনের অবিচলতা। আমাদের প্রিয় নবী (সা.) যে আল্লাহ তায়ালার কাছে কত দামি ও মর্যাদার অধিকারী, তা এ ঘটনা থেকে স্পষ্ট হয়ে যায়। তাকে এমন মর্যাদা দান করা হয়েছে, যা অন্য কোনো নবীকে দান করা হয়নি। এ ঘটনার ফলে মুমিনের ঈমান মজবুত হয় এবং হৃদয়ে বিশ্বনবী (সা.)-এর ভালোবাসা সুগভীর হয়।
নেতারা আরও বলেন, কোরআন মজিদে বর্ণিত আয়াতের শব্দের প্রতি বিশেষভাবে দৃষ্টিপাত করলে দেখা যায় যে মহানবী (সা.)-এর মেরাজ গমন সশরীরেই সংঘটিত হয়েছিল। যেমন-‘সব দুর্বলতা থেকে পবিত্র ওই আল্লাহ, যিনি নিজের (সর্বশ্রেষ্ঠ) ‘আবদ’-কে অর্থাৎ বান্দাকে রাতারাতি মসজিদুল হারাম থেকে মসজিদুল আকসা পর্যন্ত নিয়ে গেছেন। ’ এখানে বিশ্বনবীর নাম মুবারকের স্থলে আল্লাহর বিশেষ আবদ বলে উল্লেখ করা হয়েছে, যা মহানবীর একটি বিশেষণ। ‘আবদ’ শব্দের অর্থ হলো বান্দা, এই আবদ শব্দটির উৎপত্তি হয়েছে ইবাদত থেকে। ইবাদত অর্থ বন্দেগি। রুহবিহীন দেহ ‘আবদ’ নয় এবং দেহবিহীন রুহও আবদ নয়। বরং আবদ হতে হলে রুহ ও দেহ দুটিই সম্মিলিতভাবে থাকতে হয়। কাজেই মিরাজের ক্ষেত্রে আল্লাহ তায়ালা যখন আপন ‘আবদ’-কেই নিয়ে গেছেন বলে উল্লেখ আছে, তখন প্রমাণিত হয়েছে যে রুহ ও দেহ উভয়ই নিয়ে গেছেন।
তারা এই বিশেষ দিনে মহান আল্লাহ তায়ালার নৈকট্য লাভের উদ্দেশে পূর্ণাঙ্গ ইমান স্থাপন, আল-কোরআন ও সুন্নাহর আলোকে জীবন গড়ার জন্য সবার প্রতি আহ্বান জানান।
এমএইচ/এসজি