‘ভাসানীর কাগমারী সম্মেলন ইতিহাসের টার্নিং পয়েন্ট’
ইতিহাসে যার যেটুকু ভূমিকা, তা অস্বীকার করলে একদিন ইতিহাসই মুখ ফিরিয়ে নিতে বাধ্য হবে বলে মন্তব্য করে বাংলাদেশ ন্যাপের চেয়ারম্যান জেবেল রহমান গানি ও মহাসচিব এম গোলাম মোস্তফা ভুইয়া বলেন, ১৯৫৭ সালে মজলুম জননেতা মওলানা ভাসানীর আহ্বানে ও নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত ঐতিহাসিক কাগমারী সম্মেলন ছিল উপমহাদেশ তথা তৎকালীন পাকিস্তানের রাজনৈতিক ইতিহাসের টার্নিং পয়েন্ট।
মঙ্গলবার (৭ ফেব্রুয়ারি) ঐতিহাসিক কাগমারী সম্মেলনের ৬৬তম বার্ষিকী উপলক্ষে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এসব কথা বলেন তারা।
তারা বলেন, ১৯৫৭ সালে মজলুম জননেতা মওলানা ভাসানীর ঐতিহাসিক কাগমারী সম্মেলন ছিল পাকিস্তানি শাসকদের বিরুদ্ধে বাংলার মানুষের অধিকার আদায়ের প্রথম স্বাধীনতার ডাক। আজ আর সেই ইতিহাস আলোচিত হয় না। দেশের সকল শাসকগোষ্ঠী ইতিহাস থেকে সত্যকে আড়াল করতে সব ধরনের প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে।
নেতারা বলেন, স্বাধীনতার ৫১ বছর দেশে ইতিহাস ছিনতাইয়ের উৎসব চলছে। ভাষা আন্দোলন, স্বাধীকার-স্বাধীনতা সব কৃতিত্ব ছিনতাই করতে গিয়ে শাসকগোষ্ঠীর পাঁচাটা-বিবেক বর্জিত বুদ্ধিজীবীরা নতুন নতুন ইতিহাস রচনায় ব্যস্ত ছিলেন সব সময়। ইতিহাসকে ইতিহাসের গতিপথে চলতে দেওয়া উচিত। ইতিহাসের গতিপথে বাধা দিলে ইতিহাস কাউকে ক্ষমা করবে না।
তারা বলেন, ঐতিহাসিক কাগমারী সম্মেলনের মাধ্যমেই তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের স্বায়ত্তশাসন ও স্বাধীকার আন্দোলনের সূচনা হয়েছিল। সাম্রাজ্যবাদী-আধিপত্যবাদী শক্তির বিরুদ্ধে এ অঞ্চলের জনগণকে ঐক্যবদ্ধ ও সচেতন করতে এই সম্মেলন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল। কাগমারী সম্মেলনে মজলুম জননেতা মওলানা ভাসানী যে গুরুত্বপূর্ণ ও জ্বালাময়ী বক্তব্য রেখেছিলেন তা আজও আমাদের দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব, পতাকা-মানচিত্র রক্ষার সংগ্রামে অনুপ্রেরণা যোগায়।
ন্যাপ নেতৃদ্বয় বলেন, মজলুম জননেতা মওলানা ভাসানীর দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে অসংখ্য রাজনৈতিক কর্মসূচির আয়োজন করেছিলেন, এর মধ্যে তার অবিস্মরণীয় কীর্তি এবং উপমহাদেশের তথা তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান আজকের বাংলাদেশের একটি ঐতিহাসিক ঘটনা হচ্ছে ১৯৫৭ সালের ‘ঐতিহাসিক কাগমারী সম্মেলন’। উপমহাদেশ ও পূর্ব বাংলা তথা আজকের বাংলাদেশের রাজনীতিতে এর তাৎপর্য অনাগত কালের গবেষকদের কাছে স্বীকৃত।
তারা আর বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীকার ও স্বাধীনতা আন্দোলন গড়ে তুলতে মওলানা ভাসানী যে অবদান রেখেছেন-যে সম্মানি তিনি প্রাপ্য ছিলেন স্বাধীনতার ৫১ বছরের সরকারগুলো তাকে তার প্রাপ্য সম্মান ও মর্যাদা দিতে ব্যর্থ হয়েছে। সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলো নিজেদের প্রয়োজনে তাকে ব্যবহার করলেও প্রকৃত অর্থে তাকে তার যথাযোগ্য মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত করার কোনো কর্মসূচিই গ্রহণ করেনি।
এমএইচ/এসজি