‘শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় রেখে নির্বাচন হবে না’

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বলেছেন, বাংলাদেশে শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় রেখে নির্বাচন হবে না। নির্বাচন হতে দেওয়া হবে না। শেখ হাসিনার পতনের মধ্যে দিয়ে নির্দলীয় সরকার প্রতিষ্ঠা, নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনের মধ্যে দিয়ে তাদের অধীনে নির্বাচন হবে।
সোমবার (৩০ ডিসেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে আয়োজিত এক বিক্ষোভ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন বরকত উল্লাহ। নাগরিক মঞ্চ নামে একটি সংগঠন এই বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করে।
আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ্য করে বুলু বলেন, ‘দিনের ভোট রাতে- বিনাভোটে কিংবা দখল করে রাষ্ট্রক্ষমতায় যেভাবেই হোক আপনি দেশের প্রধানমন্ত্রী। আর প্রধানমন্ত্রী হয়ে প্রধানমন্ত্রীর অফিসের সামগ্রিক সুযোগ-সুবিধা ব্যবহার করে আপনি নৌকা প্রতীকে ভোট চেয়ে জনসভায় অংশ নিচ্ছেন। ইতোমধ্যে চারটি জনসভায় ভোট চেয়েছেন, এটা অন্যায়। তাই আগামী দিনে আপনাকে প্রধানমন্ত্রীর অফিস ব্যবহার করে ভোট চাওয়ার জন্য বিচারের কাঠগড়ার মুখোমুখি হতে হবে, জেলে যেতে হবে।’
তিনি বলেন, বিএনপিসহ বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো সভা-সমাবেশ করলে সরকার ও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে। তারপরও মানুষ সভা-সমাবেশের আগের দিন পায়ে হেঁটে, সাতাঁর কেটে সমাবেশস্থলে এসে খোলা আকাশের নিচে অবস্থান নেন। আর ক্ষমতাসীনরা সভা-সমাবেশে ট্রেন বাস দখল করে নিয়ে যাচ্ছে। এর বিরুদ্ধে দেশের মানুষ আজ ঐক্যেবদ্ধ হচ্ছে। সরকারবিরোধী সমমনা রাজনৈতিক দলগুলো এই অনির্বাচিত সরকারের পতনে যুগপৎ আন্দোলন শুরু করছে। সাধারণ মানুষ যুগপৎ আন্দোলনের সমাবেশে অংশগ্রহণ করছে। নিত্যপণ্যের দামবৃদ্ধি হাত থেকে মানুষ বাঁচতে চায়, সরকারের পরিত্রাণ চায়।
বরকত উল্লাহ বলেন, বাংলাদেশে শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় রেখে নির্বাচন হবে না। নির্বাচন হতে দেওয়া হবে না। শেখ হাসিনার পতনের মধ্যে দিয়ে নির্দলীয় সরকার প্রতিষ্ঠা, নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনের মধ্যে দিয়ে তাদের অধীনে নির্বাচন হবে। সেই নির্বাচনে ভোটের মাধ্যমে যারাই ক্ষমতায় আসবে তারাই সরকার গঠন করবে এবং রাষ্ট্র মেরামত করবে। বিজয়ী হলে বিএনপির নেতৃত্বে জাতীয় সরকার গঠিত হবে।
তিনি বলেন, চার লক্ষ কোটি টাকা আওয়ামী ঘরোনা লোকেরা ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়েছে। দুদক ও সরকার এই বিষয়ে কথা বলে না। রাষ্ট্রের প্রতিটি প্রতিষ্ঠান ধ্বংস হয়ে গেছে। এখন আগামী প্রজন্মকে নাস্তিক বানানোর থিউরি নিয়েছে। আমাদের সবাইকে এর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে এগিয়ে আসতে হবে। দেশকে রক্ষা করতে হবে। পাঠ্যপুস্তকে সংশোধনীতে চলবে না, বাতিল করে নতুন করে লিখতে হবে। আর মিথ্যা কথা ও ব্যর্থতার দায় নিয়ে শিক্ষামন্ত্রীকে পদত্যাগ করতে হবে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে উদ্দেশ্য করে বিএনপির এই নেতা বলেন, আপনারা বাঘের পিঠে চড়ে আছেন। দেশকে স্বাভাবিক পথে নিয়ে যান, সেক্ষেত্রে একমাত্র উপায় হচ্ছে বিরোধীদলের সঙ্গে আপোস করেন। খালেদা জিয়ার কাছে মাফ চান, তাহলে বাঁচার রাস্তা আছে। অন্যথায় কোনো রাস্তা নেই।
শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ্য করে বরকত উল্লাহ আরও বলেন, আপনি দিনের ভোট রাতে বিনা ভোটে রাষ্ট্র ক্ষমতায় আছেন। ১৯৭২ সালে ক্ষমতায় ছিলেন আপনার পিতা। তাহলে তিনি কেন আজকে যাকে পাকিস্তানের চর বলেন স্বাধীনতার ঘোষক জিয়াউর রহমানকে সেনাবাহিনার উপ-অধিনায়ক বানিয়েছিলেন। তাকে বীর উত্তম উপাধি দেওয়া হয়েছিল। বাস্তবতা হলো— আজকে আওয়ামী লীগের মঞ্চে যারা, তারা কেউ মুক্তিযোদ্ধা নয়, রণাঙ্গনের মুক্তিযোদ্ধারা আওয়ামী লীগের বাইরে।
এমএইচ/আরএ/
