বুধবার রাজধানীতে শোডাউনের প্রস্তুতি বিএনপির
যুগপৎ আন্দোলনের কর্মসূচিতে সাধারণ মানুষের সম্পৃক্ততাকে ইতিবাচক দেখছে বিএনপি। আগামীকাল ২৫ জানুয়ারি যুগপৎ আন্দোলনে চতুর্থ ধাপের কর্মসূচি পালিত হবে। কর্মসূচিতে ব্যাপক লোক সমাগমের নির্দেশনা রয়েছে। ঘোষণা করা হতে পারে নতুন কর্মসূচি।
ইতিপূর্বে ১০ দফা আদায়ে বিরোধী দলগুলোর যুগপৎ আন্দোলনের এক মাসে ঢাকাসহ সারা দেশে গণমিছিল, গণঅবস্থান, বিক্ষোভ সমাবেশে সমাগম করেছে বিএনপি।
বিএনপি নেতারা বলছেন, সরকারবিরোধী দলগুলো শিগগিরই লিয়াজোঁ কমিটির মাধ্যমে সরকার পতনে এক দফায় চূড়ান্ত আন্দোলনের পথে অগ্রসর হবে। আপাতত শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি পালনের জন্য সব পর্যায়ের নেতা-কর্মীদের বার্তা দেওয়া হয়েছে। ধারাবাহিক এসব কর্মসূচি পালন করে মোক্ষম সময়ে আন্দোলনের গতি বাড়িয়ে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছতে চান বিএনপির হাইকমান্ড।
বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, বিএনপিকে শোডাউন দিতে প্রস্তুতি নেওয়ার প্রয়োজন পড়ে না। বিএনপি শোডাউনের রাজনীতি করে না। বিএনপি জনগণকে সঙ্গে নিয়ে রাজনীতি করে আসছে। ১০ দফা দাবিতে আমাদের আন্দোলন চলমান।
যুগপৎ আন্দোলন ইস্যূতে নেতা-কর্মী ও সাধারণ জনগণের যে উৎসাহ সমর্থন তাতে আমরা আরও আশাবাদী হয়েছি। যদিও সময়ের সঙ্গে তাল রেখে আন্দোলনের ধরন ও কৌশলে কিছুটা পরিবর্তন প্রয়োজন পড়ে।
ফলে বিএনপি নিয়মতান্ত্রিকভাবে যুগপৎ আন্দোলন যেভাবে হওয়ার কথা সেভাবেই অগ্রসর হতে চায়। সরকার বিরোধী দলগুলোর সঙ্গে নিয়ে যুগপৎ আন্দোলন চলছে, তাতে আমরা কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে চলার চেষ্টা করছি, যোগ করেন তিনি।
এদিকে সরকারের বিরুদ্ধে চলমান যুগপৎ আন্দোলনের অংশ হিসেবে আগামীকাল বুধবার ঢাকাসহ সারা দেশে সমাবেশ করবে বিএনপি ও সমমনা রাজনৈতিক দলগুলো।
ঢাকার যেসব স্থানে সমাবেশ
ঢাকায় সমাবেশ হবে সাত স্থানে। দুপুর ২টায় বিএনপি সমাবেশ করবে নয়াপল্টনে, দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে। প্রধান অতিথি থাকবেন মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, ড. আবদুল মঈন খান ও সেলিমা রহমান উপস্থিত থাকবেন। সভাপতিত্ব করবেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আবদুস সালাম।
এ ছাড়া, দলের সিনিয়র নেতারা ঢাকার বাইরে বিভিন্ন মহানগরে সমাবেশে অংশ নেবেন। তারা বিভিন্ন সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্যে দেবেন। স্থায়ী কমিটির সদস্যদের মধ্যে বরিশালে গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, চট্টগ্রামে আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী এবং রাজশাহী যাবেন ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু। ভাইস চেয়ারম্যানদের মধ্যে গাজীপুরে বরকত উল্লাহ বুলু, কুমিল্লায় মো. শাহজাহান, সিলেটে ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন, ময়মনসিংহে শামসুজ্জামান দুদু, রংপুরে আহমেদ আজম খান ও খুলনায় প্রধান অতিথি থাকবেন নিতাই রায় চৌধুরী।
যুগ্ম মহাসচিবদের মধ্যে নারায়ণগঞ্জে সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল এবং ফরিদপুরে হাবিব উন নবী খান সোহেল। বাকি জেলাগুলোয় সমাবেশ সফল করার দায়িত্ব পড়েছে স্থানীয় নেতাদের ওপর। জেলা মহানগরের সমাবেশগুলো বিভাগীয় সাংগঠনিক ও সহ-সাংগঠনিক সম্পাদকদের সমন্বয় করতে বলা হয়েছে।
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, বুধবার বেলা সাড়ে ১১টায় গণতন্ত্র মঞ্চ জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সমাবেশ করবে। ১২-দলীয় জোটের নেতা অ্যাডভোকেট সৈয়দ এহসানুল হুদা ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, আগামীকাল বুধবার বিকাল ৩টায় বিজয়নগর পানির ট্যাংকের নিচে তারা সমাবেশ করবেন।
১১ দলীয় জাতীয়তাবাদী সমমনা জোটের সমন্বয়ক ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ জানান, জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে তাদের সমাবেশ শুরু হবে বেলা ১১টায়। লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) যুগ্ম মহাসচিব সালাহউদ্দিন রাজ্জাক জানান, পান্থপথে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে দুপুর আড়াইটায় সমাবেশ হবে।
এ ছাড়া, গণতান্ত্রিক বাম ঐক্য প্রেসক্লাবের সামনে বেলা ১১টায় সমাবেশ ডেকেছে বলে জোটের সমন্বয়ক হারুন চৌধুরী জানিয়েছেন। মোস্তফা মোহসীন মন্টুর নেতৃত্বাধীন গণফোরামও একই দিনে রাজধানীতে সমাবেশ করবে।
এমএইচ/এমএমএ/