বিধিনিষেধ আরোপ: স্থগিত বিএনপির কর্মসূচি
করোনাভাইরাসের ঊর্ধ্বমুখী সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে সরকারের দেওয়া বিধিনিষেধকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত নিষেধাজ্ঞা অভিহিত করে চলমান সমাবেশ কর্মসূচি স্থগিত ঘোষণা করেছে বিএনপি। একইসঙ্গে চলমান কর্মসূচির তারিখ পুনঃনির্ধারণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি।
শুক্রবার (১৪ জানুয়ারি) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিভাগীয় ও জেলা পর্যায়ে চলমান সমাবেশ কর্মসূচি স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত জানান দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান।
তিনি বলেন, ‘দমন-পীড়নে চলমান আন্দোলকে স্তব্ধ করা যায়নি; বরং তা আরও বেগবান হচ্ছে। রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হয়ে অন্যায়ভাবে কারারুদ্ধ ও দারুণভাবে অসুস্থ দেশনেত্রীর বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও সুচিকিৎসাসহ অনির্বাচিত, দুর্নীতিবাজ ও বিশ্বদরবারে মাতৃভূমির মর্যাদা বিনষ্টকারী সরকারের পতন ঘটিয়ে জনগণের অর্থনৈতিক, সামাজিক ও রাজনৈতিক সমস্যা সমাধানের জন্য যথার্থই নির্বাচিত একটি গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলন চলছে এবং চলবে। ইতিমধ্যে জনস্বার্থ এবং প্রাসঙ্গিক সবকিছু বিবেচনা করে আমাদের চলমান সভা-সমাবেশের তারিখ পুনঃনিৰ্ধারণ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’
নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘প্রায় দুই বছরেও দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ কোভিডের টিকা পায়নি। সরকার তথাকথিত উন্নয়ন ও সাফল্যের যে বড়াই করে তা জনগণের কোনো উপকারে আসেনি। এমনকি এক সময়ে কোভিডের নতুন ধরন অমিক্রনের প্রাদুর্ভাব ঘটেছে। বিশ্বব্যাপী সবাই এই নতুন ধরন সংক্রমণ রোধে দলমত নির্বিশেষে সবার অংশ গ্রহণে তৎপর হলেও বরাবরের মতো এ দেশের সরকার কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণ কিংবা বাস্তবায়নে জনগণকে সম্পৃক্ত না করার আত্মঘাতি প্রয়াস অব্যাহত রেখেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বিশ্ব সাস্থ্য সংস্থাসহ বিশেষজ্ঞ মহল যখন বলছেন - উম্মুক্ত স্থানের চেয়ে বদ্ধ স্থানে কোভিড বেশী ছড়ায়। তখন বাংলাদেশ সরকার ১১ দফা নির্দেশনায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে উন্মুক্ত স্থানে জনসমাগম নিষিদ্ধ করে বদ্ধ স্থানে তা চালিয়ে যাওয়ার সুযোগ দিয়েছে। এই অযৌক্তিক সরকারী সিদ্ধান্ত অবশ্যই কোভিডের সংক্রমণ রোধের লক্ষ্যে নেওয়া হয়নি। বিরোধী দল সমূহের চলমান প্রতিবাদ-প্রতিরোধ আন্দোলনকে বাধাগ্রস্থ ও দমন করার জন্য এসব পরিকল্পনা করছে সরকার।’
তিনি বলেন, ‘স্বাস্থ্যবিধি মেনে যেখানে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে সিটি করপোরেশনের নির্বাচন হচ্ছে। হাট-বাজার, যানবাহন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা রাখা হচ্ছে। দোকান-পাট, শপিং মল খোলা রাখা হচ্ছে। সারা দেশে মেলার আয়োজন করা এবং মুজিববর্ষ পালনের কর্মসূচী দীর্ঘায়িত করা। উম্মুক্ত স্থানে স্বাস্থ্যবিধি মেনে শান্তিপূর্ণ সামাজিক, ধর্মীয় ও রাজনৈতিক অনুষ্ঠান নিষিদ্ধ করার কোনো যুক্তিসঙ্গত কারণ থাকতে পারে না। কাজেই এই নিষেধাজ্ঞা রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত, অগণতান্ত্রিক এবং দমনমূলক বলেই আমরা মনে করি।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা বিএনপি ও অঙ্গ দলসমূহের সব কেন্দ্রীয়, মহানগর, জেলার কর্মীদের পূর্বনির্ধারিত তারিখে সভা-সমাবেশ সফল করার জন্য প্রস্তুতি অব্যাহত রাখার আহ্বান জানাচ্ছি।’
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সেলিমা রহমান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু।
এমএইচ/এসএ/