‘মিথ্যাচার-চক্রান্ত করে ক্ষমতায় টিকা যাবে না’
বিএনপির ময়মনসিংহ বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত দপ্তর সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স বলেন, অবৈধ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিএনপি ক্ষমতায় আসার স্বপ্ন দেখে কিভাবে এ প্রশ্ন করে বলেছেন, আওয়ামী লীগ শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর করেছে, কখনো দাপট দেখিয়ে ক্ষমতা ধরে রাখেনি। তার সরকারকে সরাতে একটি পক্ষ চক্রান্ত করছে। তিনি আরও বলেছেন ২০০৮ সালের অভিযোগহীন নির্বাচনেও বিএনপি যেখানে ৩১টি আসন পেয়েছে, সেখানে বিএনপি জনগণের ভোটে আবার ক্ষমতায় আসার স্বপ্ন দেখে কীভাবে। তার বক্তব্য হাস্যকর ও জাতির সঙ্গে চরম তামাশা ।
শুক্রবার (২৩ ডিসেম্বর) নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ সব কথা বলেন এমরান সালেহ প্রিন্স।
তিনি বলেন, গোটা জাতি জানে ১/১১ ছিল শেখ হাসিনা ও দেশি-বিদেশি চক্রান্তের একটা ফসল। ২০০৮ সালের জাতীয় নির্বাচনে ফখরুদ্দিন-মইন উদ্দিনদের সুক্ষ্ম কারচুপির মাধ্যমে শেখ হাসিনা ক্ষমতায় এসেছিলেন। সে সরকার ছিল ফখরুদ্দিন-মইন উদ্দিনদের এক্সটেনশন মাত্র। সে থেকে এখন পর্যন্ত জোর করে ও দাপট দেখিয়ে প্রধানমন্ত্রী ক্ষমতা ধরে রেখেছেন। ২০১৪ সালে ৫ জানুয়ারি ১৫৪টি আসনে কোনো ভোট হয়নি। বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন শেখ হাসিনাসহ ১৫৪ এমপি। বাকি আসনে শতকরা ৫ ভাগ ভোট পড়েনি। ভোটকেন্দ্রে চতুস্পদি প্রাণীদের বিচরণ ছিল। আর ২০১৮ সালের নির্বাচনের আগের রাতে ভোট কেন্দ্র দখল করে ব্যালট বাক্স পূর্ণ করে দিয়েছিল আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও নির্বাচন কর্মকর্তারা।
এমরান সালেহ প্রিন্স বলেন, দেশি-বিদেশিসহ আর্ন্তজাতিক মিডিয়ায় সে সব নির্বাচনের খবর প্রকাশিত হয়েছে হেডলাইন হয়ে। দেশেতো নয়ই, বিশ্বের কোথাও সে নির্বাচন গ্রহণযোগ্যতা পায়নি। বরং দাতা সংস্থাসহ বিদেশি রাষ্ট্রদূতরা বলছেন বাংলাদেশ ছাড়া পৃথিবীর কোনো দেশে আগের রাতের ভোটের কথা তারা শুনেননি। প্রধানমন্ত্রী এ অবৈধ সরকারকে সরাতে চক্রান্ত করা হবে কেন? ন্যায়সঙ্গত আন্দোলন মানে চক্রান্ত নয়, আপনিইতো চক্রান্ত করে মানুষের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়ে জোর করে ক্ষমতায় আছেন গায়ের জোরে।
তিনি বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে ব্যবহার করে গুম, খুন, বিচারবহির্ভূত হত্যা, গ্রেপ্তার, নির্যাতন করে। জনগণ কোনো চক্রান্ত করছে না। জনগণ তাদের ভোটের অধিকার ফিরে পেতে, বাকস্বাধীনতা ফিরে পেতে, ন্যায় বিচার পেতে, ফ্যাসিবাদ থেকে বাঁচতে প্রকাশ্য রাজপথে লড়াই করছে। গণতন্ত্র ও উন্নয়নের নামে তারা লুটের রাজ্য কায়েম করেছে। সুতরাং মিথ্যাচার ও চক্রান্ত করে আর ক্ষমতায় টিকা যাবে না। নিপীড়ন নির্যাতন করে আর ক্ষমতা ধরে রাখা যাবে না। আর, বিএনপি ক্ষমতায় যাওয়ার স্বপ্ন দেখে দেশ ও জনগণের শক্তির বলে, দেশের জনগণ আওয়ামী লীগ প্রত্যাখ্যান করে বিএনপিকে ক্ষমতায় দেখতে চায়, গণতন্ত্র সুশাসন এবং জীবন জীবিকা রক্ষার জন্য।
ভারপ্রাপ্ত দপ্তর সম্পাদক বলেন, আসলে বিএনপির গণসম্পৃক্ত আন্দোলন, কর্মসূচি এবং সরকারের বিরুদ্ধে গণরোষে সরকারের গাত্রদাহ শুরু হয়েছে। আওয়ামী দুঃশাসনের অবসান এবং আওয়ামী লীগ কর্তৃক ভঙ্গুর রাষ্ট্রব্যবস্থা পুনর্গঠনে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান রাষ্ট্রকাঠামো রুপরেখা ঘোষণার পর সরকারের শীর্ষ পর্যায় থেকে শুরু করে অন্যরা পাগলের প্রলাপ বকতে শুরু করেছেন। ১০ দফা ও রাষ্ট্র মেরামতের রুপরেখা দেশে বিদেশে ব্যাপক সমাদৃত ও গ্রহণযোগ্যতা পাওয়ায় আমাদের উত্থাপিত দাবি ও রুপরেখার বিষয়বস্তু নিয়ে কোনো বক্তব্য না দিয়ে চিরাচরিত ভাষায় বিএনপির বিরুদ্ধে তারা বিষোদগার শুরু করেছে।
তিনি বলেন, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ শীর্ষ নেতারা জামিন পাওয়ার অধিকারী হলেও বার বার তাদের জামিন নামঞ্জুর করা হচ্ছে। তারা গুরুতর অসুস্থ ও বয়োজ্যেষ্ঠ হলেও সরকারের নির্দেশেই তাদের জামিন দেওয়া হচ্ছে না। আমি আবারও বিএনপি মহাসচিবসহ আটক সব রাজবন্দীদের মুক্তি দাবি করছি।
এমএইচ/আরএ/