‘বিএনপির সমাবেশ নয়াপল্টনে হবে’
পরিস্থিতি ঘোলাটে না করে ১০ ডিসেম্বরের সমাবেশ শান্তিপূর্ণভাবে করতে দিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল নোমান বলেছেন, অন্যথায় যেকোনো পরিস্থিতির জন্য সরকারই দায়ী থাকবে।
তিনি বলেন, নয়াপল্টনে আমাদের সমাবেশ হবে। সেই সমাবেশে সরকার পতনের আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে এবং এই সমাবেশের মাধ্যমে সরকারের পরাজয় হবে।
শুক্রবার (২ ডিসেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবের মাওলানা মোহাম্মদ আকরাম খাঁ হল বাংলাদেশ ইয়ুথ ফোরামের উদ্যোগে মহান বিজয়ের মাস উপলক্ষে 'মুক্তিযুদ্ধ, গণতন্ত্র ও শহীদ জিয়াউর রহমান বীর উত্তম' শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
আব্দুল্লাহ আল নোমান বলেন, ডিসেম্বর বিজয়ের মাস। মুক্তিযুদ্ধ ও গণতন্ত্র আলাদা করে দেখা যায় না। আমরা মুক্তিযুদ্ধ করেছি রাষ্ট্র গঠনের জন্য। মুক্তিযুদ্ধে জিয়াউর রহমানের অবদান কেউ অস্বীকার করতে পারবে না। বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা দিয়েছিলেন জিয়াউর রহমান। আমরা স্বাধীনতা চেয়েছিলাম অর্থনীতির মুক্তির জন্য, জনগণের কথা বলার জন্য। কিন্তু আজ জনগণের স্বাধীনতা নেই, কথা বলার অধিকার নেই। কথা বললেই মামলা হচ্ছে। বিএনপির সমাবেশে লাখ লাখ লোক আসছে। এজন্য গায়েবি মামলা দেওয়া হচ্ছে।
তিনি বলেন, আন্দোলনের মাধ্যমে এই সরকারের পতন ঘটাতে হবে এবং খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে হবে। এই সরকার এখন গায়েবি মামলা দিয়ে নেতা-কর্মীদের হয়রানি এবং গ্রেপ্তার করছে। সরকার মামলা-হামলা দিয়ে জনগণের মধ্যে ত্রাস সৃষ্টি করতে চায় যাতে ভয়ে লোকজন জনসমাবেশে না আসে। এই হামলা-মামলা এবং গ্রেপ্তার করে সমাবেশ ঠেকানো যাবে না।
বিএনপির এই নেতা বলেন, আমাদের ৮টি সমাবেশ হয়ে গেছে। ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় আরেকটি সমাবেশ হবে। সেই সমাবেশ হবে গণসমাবেশ। এই সমাবেশে যাতে লোকজন আসতে না পারে সেজন্য আওয়ামী লীগ সরকার তাণ্ডব চালাবে। আমাদের সমাবেশের স্থান আমরা নির্ধারণ করব। পল্টনে আমাদের সমাবেশ হবে। সেই সমাবেশে সরকার পতনের আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে এবং এই সমাবেশের মাধ্যমে সরকারের পরাজয় হবে।
তিনি আরও বলেন, ২০১৮ সালের দিনের ভোট রাতে হয়েছে। এই সরকার জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। ওবায়দুল কাদেরের কথা শুনলে মনে হয় তার মধ্যে সেন্স নেই। আওয়ামী লীগের ধারণা বিএনপিকে দমিয়ে রাখলে আমরা আগের মতো থাকতে পারব। পল্টনে সমাবেশ করার অনুমতি দেন। আমরা শান্তিপূর্ণভাবে সমাবেশ করতে চাই। দেশের সর্বত্রই গায়েবি মামলা হচ্ছে। ১০ ডিসেম্বরের সমাবেশে কোনো ব্যত্যয় ঘটলে এর জন্য সরকারকে দায় নিতে হবে। পল্টনে সমাবেশ করার অনুমতি দিন, কোনো ব্যত্যয় ঘটলে তার জন্য আপনারা দায়ী থাকবেন।
প্রধান বক্তার বক্তব্যে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, আওয়ামী লীগ শরণার্থী মুক্তিযোদ্ধা। মুক্তিযুদ্ধের সময় বাড়িতে বাড়িতে লেখা থাকত এই বাড়িতে রাজাকার নেই। এই আওয়ামী লীগ দেশকে এমন এক জায়গায় নিয়ে গেছে এরা ক্ষমতা থেকে সরে গেলে তাদের একই পরিণতি হবে যে বাড়িতে বাড়িতে লেখা থাকবে এই বাড়িতে আওয়ামী লীগ নেই।
তিনি বলেন, এই সরকার দেশটাকে নোংরা অবস্থায় নিয়ে গেছে। সার্বজনীন কোনো ভোটাধিকার নেই। আওয়ামী লীগ তারা তাদের নেতার কথা মানে না, তারা আবার কিসের রাজনীতি করে। দেশের টাকা মালয়েশিয়া, কানাডা, আমেরিকায় চলে যায়। মাওলানা ভাসানী মানুষের মুক্তির জন্য লড়াই করেছিলেন। আওয়ামী লীগ তা মানতে রাজি নয়। শেখ হাসিনার একজন শিক্ষক মো. সিরাজুল ইসলাম বলেছেন, বাংলাদেশে আগের চেয়ে অনেক খারাপ অবস্থায় আছি। সকালে দ্রব্যমূল্যের যে দাম বিকালে তার ভিন্ন চিত্র। ইসলামী ব্যাংকের চুরি আর দুর্নীতি দেখার অভিভাবক কেউ নেই।
তিনি আরও বলেন, গায়েবি মামলা শুরু হয়েছে। আমরা সমাবেশ করার জন্য যে জায়গা চাই সে জায়গা না দিয়ে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান দিতে চাচ্ছেন। কারণ সারা দেশে যা করছেন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আটকে রেখে সেটা করবেন না তার কি নিশ্চয়তা আছে। পুলিশ আগের মতো মামলা দেওয়া শুরু করেছে। অনেক লোক বিদেশে আছে, তাদেরকেও মামলা দেওয়া হয়েছে। যত জুলুম-নির্যাতন আসুক বিএনপির সমাবেশ পল্টন দলীয় কার্যালয়ের সামনে হবে। উসকানিমূলক কথায় পা দেওয়া যাবে না।
এমএইচ/এসজি