‘সরকারের নির্যাতনের জবাব জনগণ আন্দোলনেই দেবে’
সরকারের নির্যাতনের জবাব জনগণ আন্দোলনেই দেবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
সোমবার (২৮ নভেম্বর) পটুয়াখালী-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শাহজাহান খানের মৃত্যুর সংবাদের পর রাজধানীর ধানমন্ডির ল্যাবএইডে গিয়ে তার পরিবারের সদস্যদের সান্ত্বনা জানানো শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন বিএনপি মহাসচিব।
তিনি বলেন, ‘আওয়ামী সন্ত্রাসীদের অত্যাচার-নির্যাতনের কথা আপনারা জানেন। ইতোমধ্যেই এই চলমান আন্দোলনে আমাদের ৭ জন গুলিবিদ্ধ হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন, আওয়ামী লীগের নির্যাতনে প্রাণ হারিয়েছেন ২ জন। তাদের নির্যাতনে আজ একজন সাবেক সংসদ সদস্যের জীবন চলে গেল। এই অত্যাচার-নির্যাতনের বিরুদ্ধে জনগণ জেগে উঠেছে। আমরা বিশ্বাস করি এই আন্দোলনের মধ্য দিয়ে শাহজাহান খানের যে মৃত্যু তার পরিশোধ নিতে সক্ষম হব, জনগণ এর উপযুক্ত জবাব দেবে।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এই মৃত্যু কোনো স্বাভাবিক মৃত্যু নয়। তিনি বরিশালের বিভাগীয় সমাবেশে যাওয়ার পথে আওয়ামী সন্ত্রাসীদের হাতে আক্রান্ত হয়েছেন এবং তাকে পিটিয়ে মারাত্মকভাবে সেদিন আহত করা হয়েছিল। আহত হওয়ার পর তার কিডনি ফেটে যায়। তার শরীরে বিষাক্ত রক্ত আসে। আজ সকালে তিনি মারা গেছেন। শাহজাহান খানের মৃত্যু আমাদের দক্ষিণাঞ্চলের জন্য বিরাট শূন্যতা সৃষ্টি করবে জাতীয়তাবাদী রাজনীতির জন্য। আজীবন সংগ্রামী, ত্যাগী রাজনৈতিক নেতা তার জনগণের কাছে একজন অভিভাবক হিসেবে পরিচিত ছিলেন। আমরা বিএনপির পক্ষ থেকে চেয়ারপারসন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার পক্ষ থেকে, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে তার রুহের মাগফিরাত কামনা করছি, গভীর শোক প্রকাশ করছি এবং তার পরিবারের প্রতি আমাদের সমবেদনা প্রকাশ করছি।’
বিএনপি মহাসচিব প্রয়াত শাহজাহান খানের মরদেহের সামনে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে তার প্রতি শ্রদ্ধা জানান। এসময় দলের কেন্দ্রীয় নেতা আমিরুজ্জামান শিমুল, আইনজীবী ফোরামের নুরুল ইসলাম জাহিদসহ পটুয়াখালীর নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
শাহজাহান খানের ছেলে শিপলু খান জানান, তার বাবা সকাল সাড়ে ১০টায় মারা যান। তিনি বলেন, ‘গত ৪ নভেম্বর সন্ধ্যায় বরিশালের বিভাগীয় সমাবেশে যোগ দিতে তার বাবা কয়েকটি মোটরসাইকেল নিয়ে পটুয়াখালী থেকে বরিশাল যাচ্ছিলেন। পটয়াখালী-বরিশাল মহাসড়কের গাবুয়া এলাকা অতিক্রমের সময় তার বাবার গাড়িতে ছাত্রলীগ-যুবলীগের সন্ত্রাসীরা অতর্কিত হামলা চালায়। তারা বাবাকে লাঠি, রড ও লোহার পাইপ দিয়ে পিটিয়ে শরীরের বিভিন্ন জায়গায় গুরুতর জখম করে।’
শাহজাহান খানের মৃত্যুর সংবাদ শোনার পর দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী হাসপাতালে ছুটে যান। তিনিও তার পরিবারের প্রতি সমবেদনা প্রকাশ করেন।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, ভাইস চেয়ারম্যান শাহজাহান ওমর পৃথক পৃথক শোকবার্তায় শাহজাহান খানের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন।
প্রসঙ্গত, গত ৪ নভেম্বর পটুয়াখালী থেকে বরিশালের বিভাগীয় সমাবেশে যাওয়ার পথে তেলিখালী এলাকা অতিক্রমকালে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা তার উপর হামলা চালালে তিনি গুরুতর আহত হন। আহতাবস্থায় পটুয়াখালীর একটি হাসপাতালে শাহজাহান খানকে ভর্তি করা হয়। পরে অবস্থার অবনতি হলে গত ২২ নভেম্বর তাকে ল্যাবএইডে ভর্তি করা হয়। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭১ বছর।
এমএইচ/এসজি