বেআইনি হত্যাকাণ্ড চালাবেন না, পুলিশকে ফখরুল
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উদ্দেশে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আজকে চলমান আন্দোলনে গত কয়েকমাসে আমাদের ৬ জন নেতা-কর্মী শহীদ হয়েছেন। তাদের অপরাধ তারা গণসমাবেশ সফলের জন্য লিফলেট বিতরণ করছিল। কিন্তু আমি পুলিশকে বলব, বেআইনি হত্যাকাণ্ড চালাবেন না প্রত্যেক অন্যায় কাজের জবাব দিতে হবে।
রবিবার (২০ নভেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের মিলনায়তনে এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, তারেক রহমান আমাদের বাতিঘর। যিনি দূরে থেকেও আমাদের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। তিনি অসাধ্যকে সাধন করতে চলেছেন। তার নেতৃত্বে জাতি আজ ঐক্যবদ্ধ। তার আহ্বানে মানুষ রাস্তায় নেমেছে। আজকে চরম বৈরি পরিবেশে যাচ্ছি। এখানে মানুষ কথা বলতে পারে না। ভোট দিতে পারে না। স্বাধীনতার ৫০ বছর পরও আমরা অধিকার হারা। এখনো আমাদের অধিকার আদায়ে লড়াই করতে হচ্ছে। জীবন দিতে হচ্ছে।
তিনি বলেন, আজকে সরকার ফ্যাসিবাদী কায়েম করেছে ১৫ বছর ধরে। এরমধ্যে আমাদের আশা দেখাচ্ছেন তারেক রহমান। তার সাংগঠনিক দক্ষতা আসাধারণ। তিনি মানুষের মাঝে জায়গা করে নিয়েছেন। আজকে আমাদের একটা পাহাড় পার হতে হচ্ছে। তারেক রহমান দলের মধ্যে যৌথ নেতৃত্ব তৈরি করেছেন। নতুন প্রজন্মের জন্য নতুনভাবে রাষ্ট্র নির্মাণের ধারণা দিয়েছেন তারেক রহমান। আজকে তরুণ প্রজন্মের অনেকে রাজনীতিতে আগ্রহ দেখায় না। তাদেরকে নতুন স্বপ্ন দেখাচ্ছেন তারেক রহমান। গণসমাবেশে মানুষ অংশ নিচ্ছে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, আজকে খারাপ সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। পিনাক ও মুশফিকুল ফজল আনসারীর বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়েছে। আসলে সরকার আস্থা হারিয়ে ফেলেছে। তাদের পায়ের নিচে মাটি নেই। তারা গণশত্রুতে পরিণত হয়েছে। তারা এখন পুরোপুরি গণবিচ্ছিন্ন।
আবদুল্লাহ আল নোমান বলেন, তারেক রহমান বীরের বেশে বাংলাদেশে ফিরে আসবেন এবং গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার আন্দোলনের নেতৃত্ব দিবেন। তাকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানাচ্ছি।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনার লোকজনের লুটপাট ও চুরি ঠেকাতে জাতিকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে এই সরকারকে পতন ঘটাতে হবে। জনগণের প্রত্যাশা পূরণে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের কোনো বিকল্প নেই। এই আন্দোলনে আমাদের সঠিক নেতৃত্ব দিচ্ছেন দেশনায়ক তারেক রহমান। সেজন্য সারাদেশে আমাদের সমাবেশে লোকজন ঝাঁপিয়ে পড়ছে। আমাদেরকে আরও সংঘবদ্ধ হয়ে লড়াই চালিয়ে যেতে হবে।
তিনি বলেন, আমরা বর্তমানে সরকার উৎখাতের সংগ্রামে আছি। তারেক রহমানের পরিচয় তার কর্মকাণ্ডেই মিলবে। তিনি যে প্রকৃত রাষ্ট্রনায়ক সেটা তার কর্মকাণ্ডেই মিলবে। আমাদেরকে বাঁচতে হলে লড়াইয়ের কোনো বিকল্প নেই।
ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নানারকম কল্যাণমূলক কর্মকাণ্ড আমরা দেখেছি। যেগুলো সচরাচর প্রকাশ্যে হয় না। অনেক নেতা-কর্মীর হাত, পা বা অন্য অঙ্গ প্রতিস্থাপন করা হয়েছে জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে। তিনি সমাজসেবা ও জনকল্যাণমূলক কাজের মাধ্যমে তিনি রাজনীতি করছেন। সেজন্য তারেক রহমানের উপর নিপীড়ন নির্যাতনের খড়গ নেমে আসে।
গত ১৪ বছর ধরে আওয়ামী লীগের দ্বারা বিরোধী দলের নেতা-কর্মীরা নিপীড়ন নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় ব্যাক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এরপরই তারেক রহমান নেতৃত্ব দিচ্ছেন। তার দক্ষতাপূর্ণ নেতৃত্ব নেতা-কর্মীদের ব্যাপকভাবে উজ্জীবিত করছে। তিনি আমাদের আস্থার জায়গা।
আজকে শেখ হাসিনা বলেন দুর্ভিক্ষের কথা। এটা কোনো রাষ্ট্র নায়ক বলতে পারেন? আসলে তাকে কারও কাছে জবাবদিহি করতে হয় না। সেজন্যই এসব বলেছেন। তিনি তো অবৈধ প্রধানমন্ত্রী।
জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনের প্রেসিডেন্ট ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ৫৮তম জন্মদিন উপলক্ষে আলোচনা সভার আয়োজন করে জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশন (জেডআরএফ)। জেডআরএফের নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক ডা. ফরহাদ হালিম ডোনারের সভাপতিত্বে ও বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের সদস্য সচিব কাদের গণি চৌধুরীর পরিচালনায় সভায় বক্তব্য রাখেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক প্রোভিসি অধ্যাপক ড. আ ফ ম ইউসুফ হায়দার, বিএনপির শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক এবিএম ওবায়দুল ইসলাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাদা দলের আহ্বায়ক অধ্যাপক লুৎফর রহমান, ড্যাবের সভাপতি অধ্যাপক ডা. হারুন আল রশিদ, প্রকৌশলী রিয়াজুল ইসলাম রিজু, প্রকৌশলী মাহবুব আলম প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ব্যারিস্টার নাসিরউদ্দিন অসীম, ঢাবি সাদা দলের অধ্যাপক ড. আবদুর রশিদ, অধ্যাপক ড. মো. মোর্শেদ হাসান খান, অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ছিদ্দিকুর রহমান খান, শহিদুল ইসলাম জাহিদ, ড. শাহ এমরান, ড. আলী কাউসার, ড. জাফরুল আজম, জেডআরএফের অধ্যাপক ড. আবদুল করিম, ডা. শাহ মুহাম্মদ আমান উল্লাহ আমান, অধ্যাপক ড. আবুল হাসনাত মোহাম্মদ শামীম, খান মোঃ মনোয়ারুল ইসলাম শিমুল, ড. মো. নুরুল ইসলাম, কৃষিবিদ শামীমুর রহমান শামীম, ডা. জহিরুল ইসলাম শাকিল, ডা. মো. ফখরুজ্জামান ফখরুল, ডা. মো. মেহেদী হাসান, কেএম সানোয়ার আলম, বিপ্লবুজ্জামান বিপ্লব, দবির উদ্দিন তুষার, প্রকৌশলী আইয়ুব হোসেন মুকুল, প্রকৌশলী রাকিবুল হাসান চৌধুরী, প্রকৌশলী মো. মেহেদী হাসান, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান প্রমুখ।
এমএইচ/এমএমএ/