ডেঙ্গু মোকাবিলায় সরকার ব্যর্থ হচ্ছে: বাংলাদেশ ন্যাপ
ডেঙ্গুর ভয়াবহ পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকার চরম ব্যর্থতার পরিচয় দিচ্ছে বলে মন্তব্য বাংলাদেশ ন্যাপের। ডেঙ্গু পরিস্থিতিকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে সরকারের প্রতি দাবি জানিয়েছে দলটি।
বুধবার (২ নভেম্বর) পার্টির চেয়ারম্যান জেবেল রহমান গানি ও মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ দাবি জানান।
নেতারা বলেন, সারাদেশে ডেঙ্গু ছড়িয়ে পড়ছে। প্রতিদিন বাড়ছে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। ঢাকাসহ সারাদেশে ডেঙ্গু ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে। ডেঙ্গুর ভয়াবহতা ব্যাপক হারে বাড়লেও এডিস মশা নিধনে দৃশ্যমান কিছু পরিলক্ষিত হচ্ছে না। বরং মশা মারার যে ওষুধ ব্যবহার করা হচ্ছে তা অনেকটাই অকার্যকর। কার্যকর ওষুধ জরুরি ভিত্তিতে আনা হচ্ছে না।
এই দুই নেতা বলেন, ডেঙ্গুর ভয়াবহ বিস্তার সরকারের সার্বিক গাফিলতি ও দুর্নীতির ফল। ডেঙ্গু যে বাড়বে, সরকারের স্বাস্থ্য অধিদপ্তর প্রতিবারই পূর্বাভাস দিলেও সরকারের সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো তা আমলে নেয় না। আর এই আমলে না নেওয়াটা বিশাল দায়িত্বহীনতার পরিচয়। এরপর কীটনাশক ও ওষুধ ক্রয়ে দুর্নীতি হয়েছে। পরিস্থিতি নাগালের বাইরে যাওয়ার পরই, অনেক প্রাণহানি ও জনবিক্ষোভের পর সরকারের টনক নড়ে।
বিবৃতিতে বলা হয়, প্রাণঘাতী করোনার সঙ্গে ডেঙ্গুও প্রতিরোধ করতেই হবে। এ ব্যাপারে সরকার কালবিলম্ব না করে এখনই যথাযথ পদক্ষেপ না নিলে জনজীবন রক্ষা করা যাবে না। তাই ঢাকা সিটি করপোরেশনের দায়িত্বপ্রাপ্ত মেয়র ও কাউন্সিলররা কথার ফুলঝুরি বাদ দিয়ে এখনই এ ব্যাপারে কার্যকর পদক্ষেপ নেবেন বলে আশা।
নেতৃদ্বয় বলেন, যেখানে বৃষ্টির পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা নেই, সেখানে স্বভাবতই কয়েকদিন ধরে পানি জমে থাকে। বিশেষত নির্মাণকাজ চলছে এমন জায়গায় এটি বেশি দেখা যায়। এসব জায়গায় জমে থাকা পানি অপসারণের পাশাপাশি নিয়মিত মশার ওষুধ ছিটাতে হবে। মশা নিধনের ওষুধ কেনার ক্ষেত্রে অতীতে অনিয়ম ও দুর্নীতি হয়েছে তা তদন্ত করে বিচার করতে হবে। যাতে কেউ ভবিষ্যতে এ ধরনের অনিয়ম-দুর্নীতি করার দুঃসাহস দেখাতে না পারে। মনে রাখতে হবে অন্য যেকোনো সভ্য দেশে এমন পরিস্থিতিতে কর্তব্যে অবহেলা, দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতা ও অযোগ্যতার দায় নিয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী ও মেয়রদের পদত্যাগ করতে হতো।
ন্যাপ চেয়ারম্যান ও মহাসচিব বলেন, ডেঙ্গু পরিস্থিতি মোকাবেলায় এখন পর্যন্ত যতটুকু হয়েছে, তা যথেষ্ট নয়, সমন্বিতও নয়। খোদ রাজধানীতেই ডেঙ্গুর চিকিৎসা সেবার অপ্রতুলতা ও হিমশিম অবস্থা চলছে। ঢাকার বাইরে ডেঙ্গু চিকিৎসার প্রয়োজনীয় সামর্থ্যের অভাব পরিলক্ষিত হচ্ছে। ঢাকায় এডিস মশার বিস্তার প্রতিরোধে এখনো কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। বরং এ ক্ষেত্রে গাফিলতি ও ব্যর্থতা এখনো রয়েছে।
তারা বলেন, যেহেতু ডেঙ্গুর ব্যাপকতা বেড়েছে, ডেঙ্গু ঢাকার বাইরেও ছড়িয়ে পড়েছে, যেহেতু ডেঙ্গুর প্রকোপ প্রলম্বিত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে, যেহেতু আগাম সতর্কতার পরও ডেঙ্গু মোকাবিলার প্রস্তুতি ও সক্ষমতায় ঘাটতি রয়েছে, তাই শুধু ঢাকার দুইটি সিটি করপোরেশন ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ওপরে দায়িত্ব ছেড়ে না দিয়ে জাতীয় ভিত্তিতে সমন্বিতভাবে ডেঙ্গু মোকাবিলা করা সময়ের দাবি।
এসএন