‘সরকার ভয় পেয়ে বিএনপির সমাবেশে বাধা দিচ্ছে’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, সরকার ভয় পেয়ে বিএনপির সমাবেশে বাধা দিচ্ছে, পরিবহন ধর্মঘট সৃষ্টি করছে। কিন্তু জনগণ সব বাধা উপেক্ষা করে সমাবেশগুলো সফল করছে। আগামী ২৬ নভেম্বর কুমিল্লার বিভাগীয় সমাবেশও সফল হবে।
সোমবার (৩১ অক্টোবর) দুপুরে কুমিল্লায় কুমিল্লা বিভাগীয় সমাবেশ সফল করার লক্ষ্যে বিএনপি আয়োজিত এক প্রস্তুতি সভায় এসব কথা বলেন তিনি।
খন্দকার মোশাররফ বলেন, সরকারের লুটপাটের কারণে দেশের অর্থনীতি খাদের কিনারায় চলে গেছে। আমাদের রিজার্ভের পরিস্থিতি অত্যন্ত খারাপ। দেশে বিদ্যুৎ পরিস্থিতি অত্যন্ত খারাপ। লোডশেডিংয়ের কারণে মানুষ দিশেহারা। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে জনগণ বিপাকে পড়েছে। আওয়ামী সিন্ডিকেটের কারণে দ্রব্যমূল্য সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার ঊর্ধ্বে চলে গেছে। দারিদ্র্যের সংখ্যা বাড়ছে। দেশের মানুষ বিচার পায় না। ক্ষমতায় টিকে থাকতে বিচার ব্যবস্থাকে সরকার কুক্ষিগত করে রেখেছে।
তিনি বলেন, সরকার আমাদের কথা বলতে দেয় না। সমাবেশ করব, এটার স্বাধীনতাও আমাদের নাই। চট্টগ্রাম, রংপুর, ময়মনসিংহ ও খুলনায় সমাবেশ হয়েছে। আপনারা দেখেছেন, সেসব এলাকায়-বিভাগে যেসব পরিবহন আছে, সব পরিবহন সরকার বন্ধ করে দিয়েছে। সরকার বাধ্য করছে শ্রমিকদের স্ট্রাইক করার জন্য। কিন্তু আমাদের সমাবেশ যখন শেষ, পরিবহন ধর্মঘটও শেষ। তারা পরিবহন ধর্মঘট করছে যেন আমাদের সমাবেশে মানুষ আসতে না পারে। কিন্তু মানুষ সব বাধা উপেক্ষা করে সমাবেশ সফল করেছে।
বিএনপির এই নেতা বলেন, সমাবেশে কেবল আমাদের নেতা-কর্মীরাই নন, সাধারণ মানুষও আসছে। কারণ মানুষ পরিবর্তন চায়। এই সরকারকে আর ক্ষমতায় দেখতে চায় না। তাই ভয়ে সরকার আমাদের সমাবেশে বাধার সৃষ্টি করছে। কিন্তু আমরা যে সমাবেশ আহ্বান করেছি, এটা শুধু বিএনপির সমাবেশ নয়, দেশের আপামর জনসাধারণের সমাবেশ, মানুষের দাবি আদায়ের সমাবেশ।
তিনি বলেন, দেশের মানুষ একটি বিষয়ে একমত হয়েছে, এই সরকারকে বিদায় করতে হবে। এই সংসদ বাতিল করতে হবে। নির্বাচনকালীন নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। একটি সুন্দর নির্বাচন ব্যবস্থা করতে হবে। যে নির্বাচনে জনগণ নিজের হাতে ভোট দিতে পারবে। মেশিনের মাধ্যমে নয়, ইভিএমে নয়, নিজের হাতে যেন ভোট দিতে পারে। এজন্যই মানুষ সমাবেশগুলো সফল করছে। তাই সরকার নার্ভাস হয়ে, ভয়ে আমাদের সমাবেশে বাধার সৃষ্টি করছে। এ পর্যন্ত যতগুলো সমাবেশ হয়েছে, সবগুলো সমাবেশ সফল হয়েছে। তারই ধারাবাহিকতায় কুমিল্লার সমাবেশও সফল হবে। আমার দৃঢ় বিশ্বাস, কুমিল্লাবাসী এই সমাবেশকে স্মরণকালের সবচেয়ে বড় সমাবেশে পরিণত করবে। ধর্মঘট থাকলেও মানুষ সমাবেশে আসবে।
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবি জানিয়ে খন্দকার মোশাররফ আরও বলেন, সরকার ফরমায়েশি রায়ে আমাদের নেত্রী সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে কারাবন্দী করেছে। তিনি গণতন্ত্র মুক্তির আন্দোলন করছিলেন। সেই আন্দোলনকে বাধাগ্রস্ত করতেই বেগম খালেদা জিয়াকে কারাবন্দী করা হয়েছে। আমাদের আগামীর যে সমাবেশ, সেই সমাবেশে আমাদের দাবি, দেশনেত্রী ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে কারামুক্ত করতে হবে। তারেক রহমানকেও একইভাবে ফরমায়েশি রায়ে বিদেশে থাকতে বাধ্য করছে। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে যে রায়, সেই রায় বাতিল করতে হবে এবং তাকে দেশে এসে স্বাধীনভাবে চলাফেরা করার সুযোগ দিতে হবে।
প্রস্তুতি সভায় বিএনপির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, ত্রাণ ও পুনর্বাসন সম্পাদক এবং কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক হাজী আমিন উর রশিদ ইয়াছিন, বিএনপির কুমিল্লা বিভাগীয় সহ সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাক মিয়া, সাবেক এমপি ইঞ্জিনিয়ার মঞ্জুরুল আহসান মুন্সী, আনোয়ারুল আজিম, আলহাজ্ব আবদুল গফুর ভূইয়া, চাঁদপুর জেলা বিএনপির নেতা ও রায়হান হারুন, বিএনপি নেতা আবুল কালাম, কুমিল্লা মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক উদবাতুল বারী আবু, দক্ষিণ জেলা বিএনপির সদস্য সচিব হাজী জসিম উদ্দিন, মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব ইউসুফ মোল্লা টিপুসহ কুমিল্লা, চাঁদপুর ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া বিএনপির নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
এসজি