তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিল আওয়ামী লীগের ব্লু প্রিন্ট: মির্জা ফখরুল
২০৪১ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকতেই আওয়ামী লীগ নির্বাচনকালীন ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকার’ ব্যবস্থা বাতিল করেছে বলে মন্তব্য করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
রবিবার (১৬ অক্টোবর) গুলশানে এক আলোচনা সভায় বিএনপি মহাসচিব এই মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, দেশে অস্থিতিশীলতার ফল ১/১১। তখন বড় স্লোগান ছিল মাইনাস টু। আসলে এটা ছিল মাইনাস ডেমোক্রেসি। সেই একই সূত্র থেকে একই ষড়যন্ত্র থেকে একই চক্রান্ত থেকে পরবর্তীকালে এই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিধান বাতিল করল আওয়ামী লীগ। এটা আমাদের বুঝতে হবে।
মির্জা ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগ এটা হঠাৎ করে বাতিল করেছে তা নয়। আওয়ামী লীগ অত্যন্ত সুদূরপ্রসারী চিন্তা করেছে যে, আওয়ামী লীগকে কীভাবে তাদের ঘোষণা অনুযায়ী ৪১ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় রাখা যায়। এটা হচ্ছে তাদের একটা পরিকল্পনা একটা ব্লু প্রিন্ট।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘এটা (তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা) কোনো বিএনপির কথা নয় বা আওয়ামী লীগের কথা নয়, এটা এই জাতির ভবিষ্যতের জন্য, এই জাতিকে সত্যিকার অর্থে একটা স্থিতিশীল রাজনৈতিক কাঠামো সৃষ্টি করার জন্য।'
গুলশানের একটি হোটেলে ‘নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ও বর্তমান প্রেক্ষাপট’ শীর্ষক এই আলোচনা সভায় ‘বাংলাদেশ সচেতন নাগরিক ফোরাম’ নামে গবেষণামূলক এই সংগঠনের আত্মপ্রকাশ ঘটে। সংগঠনটির চেয়ারম্যান শাহরিয়ার আলম জর্জ।
তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা চালুর কারণ উল্লেখ করে স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান বলেন, ‘যেকোনো নাগরিক সুপ্রিম কোর্টে প্রশ্ন তুলতে পারেন - যেভাবে যে প্রক্রিয়ায় অবসর গ্রহণের পরে প্রধান বিচারপতি রায় পরিবর্তন করে যে তত্ত্বাবধায় সরকার পদ্ধতি বিলুপ্ত করা হয়েছে সেটা আইনসম্মত নয়। এটা আইনজীবীরা তুলতে পারেন।‘
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আজকে শুনলাম ওবায়দুল কাদের সাহেব বলেছেন যে, বিআরটি (বাস রেপিড ট্রন্সপোর্ট) প্রকল্প এখন গলার কাঁটা হয়ে গেছে। কাপাসিয়া থেকে আমার আসতে লেগেছে ৬ ঘণ্টা, উত্তরা থেকে আমি ঢাকায় আসি আড়াই ঘণ্টা লাগে। আমার বাসা উত্তরার ৪ নম্বর সেক্টর থেকে বিমানবন্দরে আসতে পুরো এক ঘণ্টা লাগে…। এখন ওবায়দুল কাদের সাহেব বলছেন যে, ওটা তাদের গলার কাঁটা হয়ে গেছে। এই কথা বলার আগে তার পদত্যাগ করা উচিত ছিল। কারণ এই প্রকল্প তারা নিয়েছেন। তারা ১০ বছর ধরে এই এলাকার মানুষ, পুরো নর্থ বেঙ্গলের মানুষ, পুরো ঢাকার মানুষকে তারা অসহ্য রকমের একটা যন্ত্রণা দিচ্ছেন যে, যন্ত্রণা কল্পনা করা যায় না।’
সংগঠনের চেয়ারম্যান শাহরিয়ার আলম জর্জের সভাপতিত্বে ও মহাসচিব সৈয়দ মোহাম্মদ আলভীর সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বিএনপির এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন, শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, নাসির উদ্দিন আহমেদ অসীম, জহুরুল ইসলাম বাবু, পাবনা জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের আরশেদ আলম, সচেতন নাগরিক ফোরামের এজেডএম মোরশেদ আল মামুন লিটন, আশরাফুর রহমান, এএইচ আবরার ফাহিম, আবদুল্লাহ জামাল চৌধুরী প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
এসএন