‘রওশনের সঙ্গে জাতীয় পার্টির সব এমপির যোগাযোগ হচ্ছে’
কোনো বিভেদ বা বিভ্রান্তি নয়, বেগম রওশন এরশাদের আহ্বানে জাতীয় পার্টিকে ঐক্যবদ্ধ করার লক্ষ্যে সম্মেলন ডাকা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিরোধী দলীয় নেতা বেগম রওশন এরশাদের রাজনৈতিক সচিব গোলাম মসীহ।
তিনি বলেন, বেগম রওশন এরশাদ পার্টি ভাঙার কথা কখনোই বলেননি। যারা জাতীয় পার্টি নিয়ে কথা বলছেন— পার্টিতে তাদের অবদান কি? চুন্নু সাহেব তো বিএনপি থেকে এসেছেন। তিনি বিএনপির লোক। এখানে যাদের দেখছেন এরাই অরিজিনাল জাতীয় পার্টি। দেলোয়ার সাহেবের মতো আর একটা ডেডিকেটেড লোক জাতীয় পার্টিতে দেখান।
বৃহস্পতিবার (০৬ অক্টোবর) দুপুরে রাজধানীর হোটেল ফার্সে জাতীয় পার্টির দশম কাউন্সিল উপলক্ষে সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মসীহ এ কথা বলেন।
বর্তমান অসুস্থতা নিয়ে বিদেশে চিকিৎসাধীন বিরোধী দলীয় নেতা রওশন এরশাদ। জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের এবং মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু এই সংবাদ সম্মেলনে ছিলেন না।
তাহলে জাতীয় পার্টি কি আবারও ভাগ হচ্ছে এমন প্রশ্নের জবাবে গোলাম মসীহ বলেন, ভাগের তো প্রশ্নই আসে না বরং বেগম রওশন এরশাদ সবাইকে নিয়ে জাতীয় পার্টি গড়তে চান। আমার বিশ্বাস আগামী ২৬ নভেম্বর দশম জাতীয় সম্মেলনে সবাই আসবে। একটু অপেক্ষা করুন, সময়ই বলে দেবে কে আসছেন, কে আসছেন না। আমার বিশ্বাস সবাই আসবে। আগামী নির্বাচনে সরকারের সঙ্গে থাকা না থোকা নিয়ে কাউন্সিলেই সিদ্ধান্ত হবে।
বেগম রওশন এরশাদের নেতৃত্বে জাতীয় পার্টি মহাজোটে আছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে পাল্টা প্রশ্ন রেখে বলেন মহাজোট কী এখন দৃশ্যমান আছে। সক্রিয় আছে?
জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু দাবি করেছেন কাউন্সিল ডাকার এখতিয়ার রওশন এরশাদের নেই এ বিষয়ে জানতে চাইলে মসীহ বলেন, তিনি (মুজিবুল হক চুন্নু) তো সম্মেলনের মাধ্যমে মহাসচিব হনি। গঠনতন্ত্রের ২০ এর ১ (ক) ধারার ক্ষমতাবলে অবৈধভাবে হয়েছেন। কাজেই তার বক্তব্য জাতীয় পার্টির বক্তব্য না, তার বক্তব্য জিএম কাদের সাহেবের একক বক্তব্য। চুন্নু আমাদের জানেন না, চেনেন না এটা বলে তো লাভ নেই। বেগম রওশন এরশাদ জাতীয় পার্টির কি এটা বলার প্রয়োজন নেই। দলে তার কি ভূমিকা সেটা চুন্নু সাহেবের জানার বা বোঝার কথা না।
গোলাম মসীহ ডায়েসে বসা অন্যদের দেখিয়ে বলেন, এখানে ডারা আছেন এরাই প্রকৃত জাতীয় পার্টির লোক। যাদের চেহারা দেখেন, ১৯৯০ থেকে ২০০৬ পর্যন্ত কয়জনের চেহারা দেখেছেন? এরা তো মাঠে ঘাটে রাস্তায় কোথাও ছিল না। চুন্নু সাহেব তো বিএনপি থেকে এসেছেনি। তিনি বিএনপির লোক।
জিএম কাদের এবং চুন্নু সাহেবরা যদি আপনাদের কাউন্সিল না মানেন সেক্ষেত্রে কী সিদ্ধান্ত আসতে পারে জানতে চাইলে বলেন, এটা তাদের বিষয়। আমরা জাতীয় পার্টি ছিলাম ৮৬ সাল থেকে, জাতীয় পার্টি নিয়েই এগিয়ে যাচ্ছি। আমরা তো কোথাও যায়নি। এরশাদের জাতীয় পার্টি মানে বেগম রওশন এরশাদ। এর বিকল্প কিছু আছে কি না আমাদের সেই চিন্তা করি না। জিএম কাদের তো চেয়ারম্যান আমরা অস্বীকার করিনি। আমি বলছি না তিনি চেয়ারম্যান বা চেয়ারম্যান না। রওশন এরশাদ তো ভাগ করতে চাচ্ছেন না।
আমার বিশ্বাস ম্যাডাম দেশে আসলে সবাই চলে আসবেন। সেটা সময়ই বলে দেবে। এই মাসেই তিনি দেশে আসবেন। জাতীয় পার্টির প্রত্যেক এমপি বেগম রওশন এরশাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন দুই একজন বাদে। কাজেই কে আসবেন না আসবেন সেটা সময়ই বলে দেবে। আমরা ২৬ নভেম্বর সম্মেলন করব সেখানেই পার্টির পরবর্তী সিদ্ধান্ত হবে।
এসএম/আরএ/