নিরপেক্ষ প্রশাসনের অধীনে অবাধ নির্বাচনের বিকল্প নেই: চরমোনাই পীর
ফাইল ছবি
সহিংস রাজনীতি থেকে দেশকে মুক্ত করতে নিরপেক্ষ প্রশাসনের অধীনে অবাধ নির্বাচনের বিকল্প নেই বলে মন্তব্য করেছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম।
শনিবার (১ অক্টোবর) বিকালে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সর্বোচ্চ পরিষদ প্রেসিডিয়াম, উপদেষ্টা পরিষদের সঙ্গে কেন্দ্রীয় আমেলার যৌথ সভায় সভাপতির বক্তব্যে চরমোনাই পীর এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ অর্ধশত বছরের অধিক সময় ধরে একটি স্বাধীন দেশ। কিন্তু দেশের রাজনৈতিক হতাহতের পরিসংখান দেখলে মনে হবে বংলাদেশ এখনো যুদ্ধাবস্থায় আছে। চলতি বছরের প্রথম নয় মাসে দেশে রাজনৈতিক সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে ৩৭৮টি। তাতে ৫৮ জন মৃত্যুবরণ করেছেন এবং আহত হয়েছেন ৫ হাজার ৪০০ জন। এই তথ্যই বলে দেয় দেশ স্বাধীন হলেও দেশের রাজনৈতিক পরিবেশ আজো যুদ্ধকালীন অবস্থায় থেকে গেছে। এর দায় ক্ষমতার লড়াইয়ে থাকা দলগুলোর।
রেজাউল করীম বলেন, আসন্ন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দেশ আরও সহিংস হয়ে উঠার সমূহ আশঙ্কা দৃশ্যমান হচ্ছে। আন্দোলন দমনে সরকারের সহিংস হয়ে উঠা প্রতিক্রিয়ায় বিরোধী শক্তিও প্রতিরোধ গড়ে তোলার দৃশ্য জাতিকে আতঙ্কিত করে তুলছে। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মনে করে এই পরিস্থিতির জন্য দায়ী হলো আসন্ন নির্বাচন নিয়ে অনিশ্চয়তা এবং ভোটের অধিকার রক্ষায় আশঙ্কা তৈরি হওয়া।
তিনি বলেন, বর্তমান সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনই সুষ্ঠু হওয়া সম্ভব নয়। এটা বারংবার প্রমাণিত, ইভিএম নিয়েও বিতর্ক সার্বজনীন। কিন্তু তার পরেও এই সরকারের অধীনে ইভিএমে নির্বাচন আয়োজনের পাঁয়তারা জনমনে আশঙ্কা তৈরি করেছে। রাজনৈতিক অঙ্গনে উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে। পুরো বিষয়টা সরকারের অনিঃশেষ ক্ষমতার লোভের প্রতিক্রিয়া।
চরমোনাই পীর আক্ষেপ করে বলেন, একটি দলের লোভ দেশকে এভাবে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। তা সহ্য করা যায় না। রাজনীতিকে শান্ত করতে, দেশকে স্বাভাবিক ও গতিশীল করতে অবিলম্বে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচনের রূপরেখা জাতির সামনে পেশ করে সেই মতে পদক্ষেপ নিতে হবে।
তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, মানুষের ভোটাধিকার নিয়ে ছিনিমিনি খেললে পরিণতি কী হয় সেটার দৃষ্টান্ত ১৯৭১ সালে এই জাতি দেখিয়েছে। অতএব জনতার ধৈর্য পরীক্ষা করবেন না।
সভায় উপস্থিত ছিলেন প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যক্ষ মাওলানা সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল, মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম (শায়খে চরমোনাই), মাওলানা আব্দুল আউয়াল (পীর সাহেব খুলনা), মুহাদ্দিস মাওলানা আব্দুল হক আজাদ, অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ, আল্লামা নুরুল হুদা ফয়েজী, অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন, আলহাজ্ব খন্দকার গোলাম মাওলা, অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান, উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য মুফতী মিজানুর রহমান সাঈদ, মাওলানা উবায়দুর রহমান খান নদভী, মাওলানা খালিদ সাইফুল্লাহ (পীর সাহেব কমলনগর), আল্লামা ড. বেলাল নুর আজিজী, অধ্যাপক ডা. জহুরুল হক, অ্যাডভোকেট শেখ আতিয়ার রহমান, অ্যাডভোকেট আব্দুল মতিন, জনাব সৈয়দ আলী মোস্তফাসহ মজলিসে আমেলার সদস্যরা। যৌথসভা সঞ্চালনা করেন দলের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান।
এমএইচ/এসজি