এ সরকার ভয়াবহ দানবে পরিণত হয়েছে: ফখরুল
তেলের দাম বাড়ানোয় সরকারের সমালোচনা করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, এ সরকার মানুষের জন্য ভয়াবহ দানবে পরিণত হয়েছে। তাই এই সরকারকে সরিয়ে দেওয়াই হচ্ছে বিরোধীদের একমাত্র কাজ।
শনিবার (৬ আগস্ট) নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এক ছাত্র সমাবেশ তিনি এ সব কথা বলেন। ভোলা জেলা ছাত্রদলের সভাপতি নূরে আলম হত্যার প্রতিবাদে এ সমাবেশের ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদ।
মির্জা ফখরুল বলেন, নূরে আলমের হত্যা এটা কোনো সাধারণ ঘটনা নয়, এটা পরিকল্পিত হত্যাকান্ড। আওয়ামী লীগ টিকেই আছে হত্যা, গুম, খুন, মিথ্যা মামলা দিয়ে। গত ১৫ বছরে ৬০০ নেতা-কর্মীকে গুম করেছে। ৩৫ লক্ষ রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে। গণতন্ত্রের মাতা হিসেবে পরিচিত খালেদা জিয়াকে বেআইনিভাবে, বিনা কারণে কারা অন্তরীণ রাখা হয়েছে। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নামে মিথ্যা মামলা দিয়েছে। সরকার ভয়-ভীতি, মিথ্যা মামলা দিয়ে ক্ষমতায় টিকে আছে।
আইএমএফের ঋণ নেওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করে তিনি বলেন, মধ্য রাতে তেলের দাম প্রায় ৫০ গুন বাড়িয়ে দিয়েছে। এর ফলে আজকে সারাদেশে গাড়ি বন্ধ হয়ে গেছে। এর প্রভাব দেশের মানুষের উপর পড়বে। মানুষকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে। পরিবহন ভাড়া নিত্য পন্য, চাল, ডালের দাম দিগুন হয়ে যাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে সাধারণ মানুষ, যারা দিন আনে দিন খায়। আজকে সকাল দেখলাম কাঁচা মরিচের দাম ৩০০ টাকা, মানুষের উপর নির্যাতন চলছে।
মির্জা ফখরুল বলেন, রাজনৈতিক দলগুলো আহ্বান জানাতে চাই, আসুন ঐক্যবদ্ধ হই, এই ভয়াবহ অগণতান্ত্রিক সরকার সরাতে হবে। এখন আর সময় নেই।
প্রধানমন্ত্রীকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, চক্রান্তের কথা বলেন, চক্রান্ত আপনারা করেন। আমর করি না। আমর প্রকাশ্য ঘোষণা দিয়েছি এই সরকারকে নামিয়ে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে চাই।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, নূরে আলম এবং আবদুর রহিম জীবন দিল কেন? জনগণের দাবি আদায় করতে গিয়ে। আজকে ছাত্রদল এ সমাবেশ আয়োজন করেছে, অন্য সংগঠনের নেতা-কর্মীরা কোথায়? আন্দোলন সফল করতে হলে সবাইকে আন্দোলনে যোগ দিতে হবে।
ছাত্রদলের সভাপতি কাজী রওনাকুল ইসলাম শ্রাবনের সভাপতিত্বে এবং সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েলের সঞ্চালনায় এতে বক্তব্য দেন, বিএনপি নেতা শামসুজ্জামান দুদু, আবদুস সালাম, আমান উল্লাহ আমান, রুহুল কবির রিজভী, আসাদুজ্জামান রিপন, ফজলুল হক মিলন, নাজিম উদ্দিন আলম, কামরুজ্জামান রতন, এবিএম মোশাররফ হোসেন, আজিজুল বারী হেলাল, সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, মোনায়েম মুন্না প্রমুখ।
বিদ্যুতের লোডশেডিং ও জ্বালানি খাতে অব্যবস্থাপনার প্রতিবাদে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে গত ৩১ জুলাই ভোলায় সমাবেশ শেষে বিক্ষোভ মিছিলের করতে গেলে পুলিশ বাধা দেয়। এক পর্যায়ে পুলিশ লাঠিচার্জ, টিয়ার শেল নিক্ষেপ এবং গুলি চালায়। গুলিতে ঘটনাস্থলে স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা আবদুর রহিম মাতবর নিহত হন। গুলিবিদ্ধ আরো অন্তত ২৪ জন নেতাকর্মী ভোলা, বরিশাল ও ঢাকায় বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এদের মধ্যে গুরুতর ভোলা জেলা ছাত্রদল সভাপতি নুরে আলম গত বুধবার ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে লাইভ সাপোর্টে থাকা অবস্থায় মারা যান। এই ঘটনার প্রতিবাদে গতকাল শুক্রবার থেকে ৯ দিনের কর্মসূচি শুরু করেছে বিএনপি এবং অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন।
সারাদেশে দলীয় কার্যালয়ে দলীয় পতাকা অর্ধনমিত এবং কালো পতাকা উত্তোলন ও দোয়া অনুষ্ঠান করে বিএনপি। এই কর্মসূচি আগামী রবিবার পর্যন্ত চলবে।
একই ঘটনার প্রতিবাদে রবিবার (৭ আগস্ট) কৃষক দল, সোমবার (৮ আগস্ট) যুবদল, ১০ আগস্ট শ্রমিক দল, ১১ আগস্ট মহিলা দল ও পর দিন স্বেচ্ছাসেবক দল সমাবেশ করবে।
এমএইচ/এএস