সাংগঠনিক কার্যক্রম ফের চালু করার সিদ্ধান্ত বিএনপির
বন্যার কারণে স্থগিত রাখা দলের সাংগঠনিক কার্যক্রম ফের চালু করতে সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি। দলটির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার (১৯ জুলাই) বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর খালেদা জিয়ার গুলশানের রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান।
মির্জা ফখরুল বলেন, দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকে সম্প্রতি নড়াইল জেলায় হিন্দু সম্প্রদায়ের এক যুবক কর্তৃক প্রদত্ত স্টেটাসকে এর কারণে হিন্দু সম্প্রদায়ের কয়েকটি বাড়িতে হামলা, ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হয়।
সভা মনে করে, এই ঘটনা সরকার বিরোধী জনরোষকে ভিন্নখাতে প্রভাবিত করার অপতৎপরতা। বর্তমান আওয়ামী লীগের অনির্বাচিত সরকারের উদ্দেশ্য মূলক নিষ্ক্রীয় তাই এই ধরনের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের কারণ। এই সরকারের আমলে একের পর এক বিভিন্ন ধর্মালম্বীদের, উপসনালয়, বসতবাড়ি ও ব্যবসা কেন্দ্রে পরিকল্পিত হামলা, জনগণের দৃষ্টি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার হীন চক্রান্ত। জনগণ যখন নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্যবৃদ্দি, মুদ্রাস্ফীতি, জ্বালানি তেল, গ্যাস ও পানির অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধির কারণে ফুসে উঠছে তখন সেই জনরোষকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার হীন অপচেষ্টা।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, অবিলম্বে দায়ী ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের এবং ক্ষতিগ্রস্তদের যথাযথ ক্ষতিপূরণের দাবি জানানো হয়। সভা একই সঙ্গে ভিন্ন ধর্মালম্বীদের ধর্মঅনুভূতিতে আঘাত না করার জন্য সকলের প্রতি আহ্বান জানায়। এছাড়াও ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামে সরেজমিনে তদন্ত করার জন্য দলের ভাইস চেয়ারম্যান ও সুপ্রীম কোর্টের সিনিয়র অ্যাডভোকেট নিতাই রায় চৌধুরীকে আহ্বায়ক করে একটি কমিটি গঠন করা হয়। উক্ত কমিটির সদস্য হলেন, অনিন্দ ইসলাম অমিত, জয়ন্ত কুমার কুন্ডু, অ্যাডভোকেট ফাহিমা নাসরীন মুন্নি, ব্যারিষ্টার রুমিন ফারহানা, অমলেন্দু অপু ও নিপুন রায় চৌধুরী। কমিটিকে আগামী ২৬ জুলাই এর মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জনসম্মুখে প্রদান করতেও নির্দেশনা দেওয়া হয়।
তিনি বলেন, গত ১৬ জুলাই রাতে সার্বিয়া থেকে বাংলাদেশে সমরাস্ত্র নিয়ে আসার সময় ইউক্রেনের একটি কার্গো বিমান বিধ্বস্ত হওয়ায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। একইসঙ্গে আইএসপিআর এর দু’রকম বক্তব্যে বিষ্ময় প্রকাশ করা হয়। সার্বিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রীর ভাষ্য এবং আইএসপিআর এর বক্তব্য সামঞ্জস্যপূর্ণ না হওয়ায় জনগণের মাঝে বিভ্রান্তির সৃষ্টি করেছে। এ বিষয়ে সরকারের নিকট প্রকৃত তথ্য জনসম্মুখে প্রকাশ করার দাবি জানানো হয়।
প্রধান নির্বাচন কমিশনারের বক্তব্য কেউ যদি তলোয়ার নিয়ে দাঁড়ায়; আপনাকে রাইফেল বা আরেকটি তলোয়ার নিয়ে দাঁড়াতে হবে। এই বিষয়ে বিএনপি মনে করে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের বক্তব্যের মধ্যদিয়ে বিএনপিসহ বিরোধী দলের নির্বাচন সম্পর্কে বক্তব্যের যথার্থতা প্রমাণিত হয়েছে। প্রমাণিত হয়েছে এই সরকারের অধীনে নির্বাচন কমিশন কতটা ক্ষমতাহীন। আর সেই কারণেই অবিলম্বে সরকারের পদত্যাগ ও পদত্যাগের পরে নিরপেক্ষ সরকারের নিকট ক্ষমতা হস্তান্তর এবং নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের পরিচালনায় নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবি জানানো হয়।
এমএইচ/