আগামী নির্বাচনেই চমক দেখাতে চায়
গণ অধিকার পরিষদ হুদা কমিশনের কাছে নিবন্ধন চাইবে না
ছবি : সংগৃহীত
প্রায় দুই মাস আগে রাজনীতির মাঠে আত্মপ্রকাশ করা নতুন দল গণ অধিকার পরিষদ আগামী নির্বাচনেই চমক দেখাতে চায়। এ লক্ষ্যে সারা দেশে কাজ শুরু করেছে তারা। তবে নির্বাচন করার জন্য বর্তমান হুদা কমিশনের (নির্বাচন কমিশন) কাছে নিবন্ধন চাইবে না।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদার নেতৃত্বাধীন এই কমিশনের মেয়াদ শেষ হলে ফেব্রুয়ারিতে তারা নিবন্ধন প্রক্রিয়া শুরু করবে। হুদা কমিশনের মেয়াদ শেষ হচ্ছে আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি।
সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এএমএস কিবরিয়ার ছেলে, ড. কামালের নেতৃত্বাধীন গণফোরামের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ড. রেজা কিবরিয়া ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের সাবেক ভিপি নূরুল হক নূরের নেতৃত্বে গণ অধিকার পরিষদ গত ২৬ অক্টোবর আত্মপ্রকাশ করেছে। দলটি ক্ষমতাসীন সরকারের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। সরকারের বিভিন্ন কাজ-কর্মের কড়া সমালোচনা করছে। এ কারণে তারা ক্ষমতাসীন দলের অনুসারীদের দ্বারা বাধা ও আক্রমণের শিকার হচ্ছেন।
গণ অধিকার পরিষদের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তারা সংগঠনকে সারা দেশে ছড়িয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছেন। জেলা কমিটি গঠনের কাজও শুরু করেছেন। কিন্তু কোনো কমিটিই আনুষ্ঠানিকভাবে গঠন করা হচ্ছে না। এখনই কমিটি গঠন করা হলে নেতা-কর্মীরা নানাভাবে হয়রানীর শিকার হতে পারেন বলে এই কৌশল অবলম্বন করা হচ্ছে।
হুদা কমিশনের মেয়াদ শেষ হলে জেলা কমিটি গঠন এবং সম্মেলনের মাধ্যমে কেন্দ্রীয় কমিটি গঠনের পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছেন তারা। জেলা কমিটি গঠনের লক্ষ্যে আগামী জানুয়ারি থেকে সাংগঠনিক সফর শুরু হবে।
গণ অধিকার পরিষদের নেতারা মনে করছেন আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনেই তারা ব্যাপক জন সমর্থনের মাধ্যমে চমক দেখাতে পারবেন। এ প্রসঙ্গে সংগঠনের আহবায়ক ড. রেজা কিবরিয়া ঢাকাপ্রকাশকে বলেন, ‘আমরা রাজনীতির পরিবর্তনের লক্ষ্যে কাজ করছি। আমরা সব জায়গায় যেভাবে সাড়া পাচ্ছি, তাতে আগামী নির্বাচনে তিনশত আসনে যোগ্য প্রার্থী দিতে অসুবিধা হবে না।’
নেতারা জানান, সারা দেশের পরিচ্ছন্ন ব্যক্তিদের দলে ভেড়ানোর চেষ্টা করছে গণ অধিকার পরিষদ। এ ক্ষেত্রে তাদের নজর রয়েছে প্রশাসনের সাবেক কর্মকর্তা, সশস্ত্র বাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, যারা পরিচ্ছন্ন ভাবমূর্তি অর্জন করেছেন।
গণ অধিকার পরিষদের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক মুহাম্মদ রাশেদ খান এ প্রসঙ্গে ঢাকাপ্রকাশকে বলেন, ‘আমরা যোগ্য লোকদের বাছাই করার চেস্টা করছি। কোন বিতর্কিত লোক যেন দলে জায়গা না পায়। আমরা যেনো ত্যানো লোকের হাতে নেতৃত্ব দিতে চাই না। কোন বিতর্কিত মাস্তান, ক্যাডার, সন্ত্রাস, চাাঁদাবাজকে দলে জায়গা দেওয়া হবে না। আমরা কমিটিতে নেওয়ার আগে ডোপ টেস্ট করানোর ব্যবস্থা রেখেছি কোন মাদকাসক্ত লোককে নিয়োগ দেব না।’
মুহাম্মদ রাশেদ খান জানান, কোটা অধিকার আন্দোলন ও পরে ছাত্র অধিকার আন্দোলন গড়ে ওঠার পর সারা দেশেই এর শাখা গড়ে ওঠেছে। প্রত্যেক জেলা, থানা, ওয়ার্ডে যুব অধিকার পরিষদ, ছাত্র অধিকার পরিষদ, নারী অধিকার পরিষদ কমিটি রয়েছে। এরা গণ অধিকার পরিষদের হয়ে কাজ করবেন। এ কারণে দ্রুততম সময়ে কমিটি গঠন করতে কোনো সমস্যা হবে না। আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে কমিটিগুলো গঠন করে রাজনৈতিক দলের নিবন্ধনের সব শর্ত পূরণ করেই নির্বাচন কমিশনে আবেদন করা হবে। দলীয় প্রতীক হিসেবে একাধিক পছন্দ রয়েছে, সেটিও ফেব্রুয়ারিতে চূড়ান্ত করা হবে।
রাজনৈতিক দলের নিবন্ধনের প্রধানতম শর্ত হিসেবে দেশের ন্যূনতম ২১ টি জেলা ও ১০০টি উপজেলায় কমিটি থাকতে হয়। দেশে বর্তমানে ৩৯টি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল রয়েছে।
এসএম/এপি/এমএমএ/