ক্ষমতায় যেতে গণতান্ত্রিক বিশ্বের প্রয়োজন নেই: গয়েশ্বর
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, ‘ক্ষমতায় আনার জন্য গণতান্ত্রিক বিশ্বের যেমন ভারত-আমেরিকা এমন কারও সহযোগিতা আমাদের প্রয়োজন নেই। তবে জনগণের ভোটাধিকার এবং গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় গণতন্ত্রিক বিশ্বের সহযোগিতা আমাদের জরুরি। তাই যারা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করেন বিভিন্ন রাষ্ট্র তাদের বলব জনগণের ভোটাধিকার আন্দোলন, ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে আপনারা আমাদের পাশে থাকুন, সহযোগিতা করুন।'
রবিবার (২৯ মে) রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে ‘বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক ও জাতীয় স্বার্থ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ সব কথা বলেন।
দেশ বাঁচাও, মানুষ বাঁচাও নামে একটি সংগঠন এ আলোচনা সভার আয়োজন করে।
গয়েশ্বর বলেন, 'জনগণ সিদ্ধান্ত নেবে আগামী দিনে রাষ্ট্রক্ষমতা কে পরিচালনা করবে। দেশের মালিক জনগণ, জনগণ সিদ্ধান্ত নেবে কে পরবর্তী সরকার হবে। তবে আপনারা নিশ্চয়ই অবগত—একটি নির্বাচনী হাওয়া তৈরি করার জন্য একদিকে নির্যাতন অন্যদিকে নিচ দিয়ে হাত মেলানোর চক্রান্ত চলছে। ঝুড়ির মধ্যে সংসদীয় ১০০ আসন ঝুলছে। ডিপ্লোমেটিক এলাকায় এমন কিছু ফেরিওয়ালা নেমেছে এবং কেউ হয়ত কেনার জন্য এক পা আগায় আবার দুইবার পেছায় জনগণের ধোলাই খাওয়ার আশঙ্কায়। আসাম দেওয়ার মালিক জনগণ, তাহলে এই ফেরিওয়ালা কারা, ফেরিওয়ালা শুধু দেশে নয় বিদেশিরাও রয়েছে। এই ফেরিওয়ালা সরকারি লোক। তারা বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে বলে বেড়াচ্ছেন নির্যাতন হবে, জেল হবে, মামলা হবে, নির্বাচনে আসেন। প্রশ্ন হল—জেল দেবেন দেন, তবু নির্বাচনটা দেন। আমাদের ছাড়াও আরও অনেকই রয়েছে তাদের জনগণ ভোট দেবে আমাদের না দিলেও তবুও ভোটাধিকারটা দিয়ে দেন।'
গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, 'প্যাথলজিক্যাল টেস্টেট শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগ ভালো হওয়ার বস্তু নয়। এদের ওয়াটার পিউরিফাইড যেখানেই পাঠানো হোক না কেন—ভালো কিছু হওয়ার নয়। এদের ভাল করার একটাই পথ সেটি হচ্ছে ক্ষমতা থেকে নামাতে হবে। ওরা আমাদের জায়গার না আসলে বুঝতে পারবে না জীবনটা কত কঠিন, কষ্টকর।'
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ্য করে বিএনপির এ নেতা বলেন, 'মানুষকে ততটুকুই আঘাত করবেন না, জীবনে এতটুকু আঘাত আসলে যা আপনি সহ্য করতে পারবেন না।'
'এই সরকারের সঙ্গে কোনো শর্ত হতে পারে না, শর্ত হবে, ১. পদত্যাগ, ২. সংসদ বাতিল, ৩. নির্বাচন কমিশন বাতিল, ৪. ইভিএম বাতিল, ৫. যে নামেই হোক নির্বাচনকালীন সরকার। এর বাইরে অন্য কোনো খানাপিনা বিকল্প হবে না। কারণ বিষ খাওয়ার চেয়ে না খেয়ে মরে যাওয়া ভালো'।
গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর সমালোচনা করে গয়েশ্বর বলেন, 'উনাকে কে দায়িত্ব দিয়েছেন যে মন্ত্রিসভার ফর্মুলা দিতে, যাদের নাম দিয়েছেন তাদের একদিকে জনগণের কাছে বিপদে অন্যদিকে সরকারের কাছে রোষানল পরিস্থিতিতে পড়েছেন তারা। উনার উদ্যোগ ঘুরেফিরে সরকারের পক্ষেই গিয়েছে। সে কারণেই হাসিনার পরিবর্তনে রেহানা—খুব ভালো! উনি জাইমা রহমানের নাম দিয়েছেন কার সঙ্গে কথা বলে। ড. কামাল আমাদের ধরে নিয়ে বিক্রি করে দিল, এবার কি তিনি দায়িত্ব নিলেন? আমরা সব ধরনের পরীক্ষা দিয়ে শেষ করেছি নতুন করে আর পরীক্ষা দিতে চাই না। কথা স্পষ্ট শেখ হাসিনা যেখানে নো ইলেকশন, তার অধীনে নো ইলেকশন দলীয় সরকারের অধীনেও নো ইলেকশন।'
বাংলাদেশ-ভারতের সম্পর্কের বিষয়ে বলেন, বন্ধুত্ব এক পক্ষের হয় না। যেখানে এ দেশের বেকার যুবকরা কর্মসংস্থানের জন্য বৈধ-অবৈধ পথে বিদেশে পাড়ি দিয়ে সাগরে ডুবে মারা যাচ্ছে, সেখানে ভারতের লক্ষাধিক লোক চাকরি করে যাচ্ছে। সরকার তা প্রকাশ করছে না। ভারতকেই ভাবতে হবে বাংলাদেশের সঙ্গে বন্ধুত্ব রাখতে চায় কিনা?
এমএইচ/আরএ/